ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

অস্ট্রেলিয়ার ব্যানক্রফটের বল টেম্পারিং নিয়ে তোলপাড়

আমিনুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ২৫ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অস্ট্রেলিয়ার ব্যানক্রফটের বল টেম্পারিং নিয়ে তোলপাড়

ক্রীড়া ডেস্ক : দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তৃতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনের ঘটনা। অস্ট্রেলিয়ার তরুণ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ক্যামেরন ব্যানক্রফট বল পেয়ে পকেটে হাত দেন। সেখান থেকে হলুদ রঙের একটি টেপ জাতীয় বস্তু (সিরিজ কাগজ) বের করেন। আঙ্গুলের ভাজে গুজে নেন সেটি। এরপর বলটিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখে যে পাশটাতে একটু ক্ষত হয়েছে সেদিকটায় ঘষতে থাকেন।

এরপর সেই হলুদ রঙের বস্তুটি আবার পকেটে পুড়ে রাখেন। ঘটনাটি কয়েক সেকেন্ডের। কিন্তু ক্যামেরার চোখ এড়ায়নি। এরপর জায়ান্ট স্ক্রিনে বার বার ব্যানক্রফটকে দেখাতে থাকে। ব্যানক্রফট বিষয়টি লক্ষ্য করে পকেট থেকে হলুদ বস্তুটি বের করে ট্রাউজারের গিট খুলে ভেতর দিয়ে ফেলে দেন।

এরপর আম্পায়াররা ব্যানক্রফটকে ডাকেন। বলের অবস্থার কোনো পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছেন কিনা জানতে চান। ভয় পেয়ে যাওয়া ব্যানক্রফট তখন অবশ্য অস্বীকার করেন। পকেট থেকে কালো রঙের একটি কাপড় বের করে দেখান যে তিনি এটা দিয়ে বল ঘষেছেন। আর কাপড় দিয়ে বল ঘষলে তো অবস্থার পরিবর্তন হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি মেনে নিয়ে বল পরিবর্তন না করেই আম্পায়াররা খেলা চালিয়ে যান।

কিন্তু ধীর গতির ভিডিওতে পুরো ঘটনা দেখে দর্শকদের মধ্যে কেউ কেউ দুয়ো দিতে শুরু করেন। ধারাভাষ্যকাররা বিষয়টি দেখে বিস্মিত হন। তারা অবাক হন আম্পায়াররা কেন বল পরিবর্তন না করেই খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন।



দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে বল টেম্পারিংয়ের চেষ্টার কথা স্বীকার করেন ক্যামেরন ব্যানক্রফট। অন্যদিকে স্টিভেন স্মিথ জানান যে ব্যানক্রফট যে এমন কিছু করবে সেটা তিনিও জানতেন। জানতো আরো সিনিয়র কয়েজন। সুতরাং দায়টা তিনিও নিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ব্যানক্রফট বলেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে আসলে আমি ভুল সময়ে ভুল জায়গায় ছিলাম। তবে এমন কাজের জন্য যথারীতি আমিই দায়ী। যা ঘটছে সেটার জন্য আমি গর্বিত নই। আমি আসলে নার্ভাস ছিলাম। কারণ, আমার চারপাশে শত শত ক্যামেরা ছিল। আমি মনে করেছিলাম টেপ ব্যবহার করে বলের কিছু কণা তুলতে পারব। সেটা করতে পারলে হয়তো ক্ষয়ে যাওয়া পিচ থেকে কিছুটা সুবিধা নিতে পারব। সে কারণেই বল টেম্পারিংয়ের চেষ্টা করেছি। ‘যদিও সেটা কাজ করেনি। সে কারণে আম্পায়াররাও বল পরিবর্তন করেননি। সেটা করার পর স্ক্রিনে যখন আমাকে দেখালো তখন আমি বেশ আতঙ্কিত হয়ে যাই। আতঙ্কের কারণেই আমি পকেট থেকে হলুদ রঙের টেপটি ট্রাউজারের ভেতর দিয়ে ফেলে দিই।’

অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ দায় স্বীকার করে বলেন, ‘আসলে আমরা খারাপ একটি পন্থা অবলম্বন করেছিলাম। আমাদের কর্মের জন্য আমরা গভীরভাবে অনুতপ্ত। এখানে কোচরা জড়িত ছিলেন না। শুধু নেতৃত্বস্থানীয় খেলোয়াড়রা জড়িত ছিলেন। তবে আমি প্রতিজ্ঞা করে বলছি দ্বিতীয়বার এমনটি ঘটবে না। আর এটাই আমাদের বেলায় প্রথম। আমরা এখান থেকে সামনে এগিয়ে যাব এবং এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিব। আমি আসলে লজ্জিত। ব্যানক্রফটের জন্য খারাপ লাগছে। অস্ট্রেলিয়া দল কখনোই এমন নয়। আমি সত্যিই খুব দুঃখিত।’



এই ঘটনায় অবশ্য স্মিথের পদত্যাগের প্রশ্ন তুলেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটাররা। তবে স্মিথ পদত্যাগের বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে যেহেতু ব্যানক্রফট ও স্মিথ বল টেম্পারিংয়ের বিষয়টি স্বীকার করেছেন, সেহেতু জরিমানা কিংবা শাস্তি তাদের অবধারিত।

বল টেম্পারিংয়ের ভিডিও :




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ মার্চ ২০১৮/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়