ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

রিচার্লিসনের জোড়া গোলের জয়ে ব্রাজিলের কাতার বিশ্বকাপ শুরু

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০০:৫৮, ২৫ নভেম্বর ২০২২   আপডেট: ০৩:৫৩, ২৫ নভেম্বর ২০২২
রিচার্লিসনের জোড়া গোলের জয়ে ব্রাজিলের কাতার বিশ্বকাপ শুরু

বিশ্বকাপের ‘জি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সার্বিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে কাতার বিশ্বকাপ শুরু করেছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। লুসাইল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টায় শুরু হয় ম্যাচটি।  

রিচার্লিসনের জোড়া গোলের জয়ে ব্রাজিলের কাতার বিশ্বকাপ শুরু। ম্যাচের ৬২ ও ৭৩ মিনিটে গোল দুটি করেন রিচার্লিসন। দ্বিতীয় গোলটি ছিল চোখ জুড়ানো চোখ ধাঁধানো। প্রথমার্ধে ব্রাজিলকে চেনা ছন্দে দেখা যাচ্ছিল না। দ্বিতীয়ার্ধেই দেখা যায় সাম্বার তাল। মুহুর্মুহু আক্রমণে বিপর্যস্ত করে দিয়েছিল সার্বিয়ান ডিফেন্সকে। দুটি বল বারে লেগে ফিরে আসে। প্রথমার্ধে চারটি আক্রমণ করা ব্রাজিল দ্বিতীয়ার্ধে করেছে ১৮টি! অন টার্গেট শট ছিল মোট ৮টি। ৫৯ শতাংশ সময় বল ছিল নিজেদের পায়ে।  

এবার বারে লাগলো ক্যাসিমোরার শট

ডি বক্সের একটু সামনে বল পেলেন ক্যাসিমোরা। দেরি না করে ডান পা দিয়ে বাম দিকে কোনাকুনি শট করেন। গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে পড়েও ধরতে পারেননি। কিন্তু বল ফিরে বারে লেগে।  

রিচার্লিসনের জোড়া গোল, এগিয়ে ব্রাজিল

৭৩ মিনিটে আবার ব্রাজিলের গোল। অসাধারাণ, দুর্দান্ত। বাঁ দিক থেকে ভিনিসিয়াস বল আলতো শটে পাঠান ডি বক্সের মাঝে। সেখানে থাকা রিচার্লিসন বাইসেকেল কিকে বল পাঠান জালে।

দুর্দান্ত নেইমার-রিচার্লিসনে এগিয়ে ব্রাজিল

৬৩ মিনিটে ১-০ গোলে এগিয়ে গেলো ব্রাজিল। ডি বক্সে নেইমার কাটিয়ে ভিনিসিয়াসকে। বাঁ দিক থেকে কোনাকুনি শট নেন ভিনি। রুখে দেন সার্বিয়ান গোলরক্ষক। কিন্তু বল হাতে লেগে ফিরে আসে, সেখানেই থাকা রিচার্লিসন আলতো টোকায় জালে জড়িয়ে দেন। 

ব্যর্থ আক্রমণ 

বারে লেগে ফিরে এলো ব্রাজিলের সান্দ্রোর শট। 

 সার্বিয়ান ডিফেন্সে আটকা ব্রাজিল, প্রথমার্ধ গোলশূন্য

সার্বিয়ান ডিফেন্সে আটকা ব্রাজিল, প্রথমার্ধ গোল শূন্য। নেইমার কিংবা ভিনিসিয়াস ডি বক্সে এসে আটকে যাচ্ছেন। যাচ্ছেন বললে ভুল হবে সার্বিয়ান ডিফেন্ডারদের নিখুঁত ট্যাকেলে ব্রাজিলের আক্রমণ নষ্ট করে দিচ্ছে। প্রথমার্ধ খুব একটা ভালোও খেলেনি ব্রাজিল। বারবার বলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। প্রথমার্ধে ৪টি আক্রমণ করেছে ব্রাজিল, ভিনিসিয়াস সুযোগ নষ্ট করেছেন। অন্যদিকে সার্বিয়া বারবার উঠে আসলেও আক্রমণ করে মাত্র ১টি। প্রথমার্ধে ৬০ শতাংশ বল ব্রাজিলের পায়ে ছিল।

রাফিনহা আবার ভুল করলেন 

৪৫ মিনিটে এক সার্বিয়ান ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে একাই বল নিয়ে চলে গিয়েছিলেন রাফিনহা। সামনে শুধু ছিল গোলরক্ষক। সোজাসুজি মারা রাফিনহার শটে কোনো জোর ছিল না। গোলরক্ষকের উরুতে লেগে ফিরে আসে। নিজেই অবাক হন রাফিনহা। 

এবার ভিনিসিয়াস
৪০ মিনিটে আবার ভিনিসিয়াসকে নিখুঁত ট্যাকেলে আটকে দেন সার্বিয়ান ডিফেন্ডার।

সার্বিয়ার ডিফেন্সে আটকে যাচ্ছে ব্রাজিল

৩৩ মিনিটে নেইমারকে রুখে দিলেন সার্বিয়ান ডিফেন্ডার। অল্পের জন্য সুযোগ হারালেন। ২ মিনিট পরেই রাফিনহার শটও আটকে দেন।

মিস করেন ভিনিসিয়াস

২৮ মিনিটে থিয়াগো সিলভা  দারুক একটি পাস দেন ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে। বাঁ দিক দিয়ে দ্রুতগতিতে ঢুকছিলেন ভিনিসিয়াস। কিন্তু গোলরক্ষক দারুণ ডাইভে রুখে দেন।

নেইমারের দারুণ কর্নার

ভিনিসিয়াস ডি বক্সে বল কাটাতে গেলে ক্লিয়ার করা সার্বিয়া। কর্নার পায় ব্রাজিল। বাম দিকে কর্নারে নেইমারের দারুণ শট নেব। কোনাকুনি হয়ে জালে ডুকতেছিল কিন্তু সার্বিয়ার গোলরক্ষক লাফিয়ে উঠে বল বাইরে পাঠিয়ে দেন। পরের কর্নারে শট নিলে সহজেই ধরে ফেলেন সার্বিয়ান গোলরক্ষক।

৭ মিনিটেই হলুদ কার্ড

৭ মিনিটে নেইমারকে ফাউল করে কার্ড দেখেন সার্বিয়ার পাভলোভিক।

ব্রাজিলের একাদশ

অ্যালিসন; দানিলো, মারকুইনহোস, থিয়াগো সিলভা, অ্যালেক্স সান্দ্রো; কাসেমিরো, লুকাস পাকেটা; রাফিনহা, নেইমার, ভিনিসিয়াস জুনিয়র; রিচার্লিসন।

সার্বিয়ার একাদশ

ভি মিলিঙ্কোভিক-সাভিক; ভেলজকোভিচ, মিলেনকোভিক, পাভলোভিক; জিভকোভিচ, লুকিক, গুডেলজ, ম্লাদেনোভিক; ট্যাডিক, এস মিলিঙ্কোভিক-সাভিক; এ মিত্রোভিক।

ব্রাজিলের মিশন হেক্সা

অপেক্ষার প্রহর সব সময়ই ক্লান্তিকর। সবশেষ ২০০২ সালে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল ব্রাজিল। এরপর কেটে গেছে ২০ বছর। সেই শিরোপা আর শোকেসে তুলতে পারেনি তারা। এই সময়ের মধ্যে ব্রাজিল মাত্র একবার সেমিফাইনাল খেলেছিল। তিনবার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল। সবশেষ আসরে বেলজিয়ামের কাছে হেরে শেষ আট থেকেই বিদায় নিয়েছিল তারা।

প্রতি আসরেই হেক্সা মিশন নিয়ে আসে তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যেতে পারে না। তবে এবার নেইমারের শেষ বিশ্বকাপে তারা শেষ পর্যন্ত যেতে বদ্ধ পরিকর। নেইমার-ভিনিসিউস-রদ্রিগো, রিচার্লিসন, রাফিনহাদের নিয়ে শিরোপা জেতার মতো শক্তিশালী দল নিয়েই কাতারে এসেছেন তিতে। যারা আগের চেয়ে আরও অভিজ্ঞ আরও ধারালো। যা তারা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব ও অন্যান্য ম্যাচে প্রমাণ করেছে।

২১ থেকে অপরাজিত ব্রাজিল

বিশ্বকাপের ২২ আসরেই খেলছে তারা। তার ওপর লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দোর্দণ্ড প্রতাপ দেখিয়েছে তারা। ১৭ ম্যাচ খেলে একটিতেও হারেনি তারা। ১৪টি জয়, ৩টি ড্র। সর্বোচ্চ ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে কাতার বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করে।

সবশেষ তারা হেরেছিল ২০২১ সালে কোপা আমেরিকার ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে। এরপর থেকে অপরাজিত আছে সেলেসাওরা। সে কারণে সার্বিয়ার বিপক্ষে নিঃসন্দেহে ফেভারিট ব্রাজিল।

সার্বিয়া ছেড়ে কথা বলবে না 

সার্বিয়া অবশ্য স্বাধীন হওয়ার পর এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো খেলছে বিশ্বকাপে। আগের দুই আসরে গ্রুপপর্বের বাঁধা পেরুতে পারেনি তারা। এবার অবশ্য গ্রুপপর্বের গণ্ডি পেরোনের লক্ষ্য নিয়েই কাতার এসেছে তারা।

মজার বিষয় হলো রাশিয়া বিশ্বকাপেও ব্রাজিলের গ্রুপে পড়েছিল তারা। সেখানে হেরেছিল ২-০ গোলে। তার আগে ২০১৪ সালে এক প্রীতি ম্যাচে হেরেছিল ১-০ গোলে।

তবে সার্বিয়ার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বেশ ভালো। সম্প্রতি তারা নেশন্স লিগে উন্নতি করে ‘লিগ এ’ তে উঠেছে। তাছাড়া বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে তাদের পারফরম্যান্স ছিল ঈর্শনীয়। আট ম্যাচের ছয়টিতে জিতে ও দুটিতে ড্র করে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে কাতার বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছিল তারা। এ যাত্রায় তারা ২-১ গোলে হারিয়েছিল পর্তুগালের মতো দলকেও। 

ঢাকা/রিয়াদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়