প্রশ্নের জন্ম দিয়ে ওয়ানডেকে বিদায় বললেন স্মিথ
ভারতের বিপক্ষে মঙ্গলবার আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম সেমি ফাইনালে যখন ব্যাটিং করছিলেন স্টিভেন স্মিথ, তখন মনে হচ্ছিল ‘স্লো ও লো’ উইকেটে বিপদে পড়া দলের কিভাবে খেলতে হয় তার একটা ব্যাকরণ শেখাচ্ছেন তিনি। অথচ পরের দিনই কিনা একদিনের আন্তর্জাতিক (ওডিআই) ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়ে দিলেন ৩৫ বছর বয়সী এই অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অব্যাহত রাখবেন তিনি। যা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। একই সাথে লাল বলের প্রতি ভালোবাসা থেকেই জানালেন টেস্ট ক্রিকেটটা চালিয়ে যাবেন।
স্মিথ সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে পরাজয়ের পর তৎক্ষনিকভাবেই তার সতীর্থদের জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তিনি তার শেষ ওডিআই ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। অর্থাৎ ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার দলের অংশ হতে চাচ্ছেন না তিনি। এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অজিদের নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের অনুপস্থিতিতে স্মিথই অধিনায়কত্ব করেছিলেন।
ওয়ানডেতে দুটি বিশ্বকাপ জিতেছেন স্মিথ। ঘরের মাঠে ২০১৫ সালে এবং ভারতে অনুষ্ঠিত সবশেষ ২০২৩ সালে। তাছাড়া ওয়ানডে ক্যারিয়ারে অনেক সুখস্মৃতি আছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। স্মিথ বিদায়ী বার্তায় বলেন, তিনি ওয়ানডে ক্যারিয়ার দারুণ উপভোগ করেছেন, “এটি একটি চমৎকার যাত্রা ছিল এবং আমি প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছি। অনেক দারুণ সময় এবং অসাধারণ স্মৃতি রয়েছে। দুটি বিশ্বকাপ জেতা ছিল একটি বড় মাইলফলক। পাশাপাশি অনেক দুর্দান্ত সতীর্থরা যারা এই যাত্রা ভাগ করেছেন।”
অধিনায়ক কামিন্স এবং নির্বাচকদের ২০২৭ সালের দল গঠনের চাপ আছে। তাদের চাপ কমিয়ে নতুন দল গঠনের সুযোগ করে দেওয়ার পেছনে এই অবসর ভূমিকা রেখেছে বলে উল্লেখ করেছেন স্মিথ। অন্যদিকে সাদা বলের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে স্মিথকে ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। তাহলে প্রশ্ন আসতেই পারে, টি-টোয়েন্টি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসরে যাচ্ছেন না কেন?
এর উত্তর দেননি স্মিথ। তবে ধারণা করা হচ্ছে, সারা বিশ্বের ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টিতে নিজের বাজাদর উপরের দিকেই রাখতে হয়ত এই সিধান্ত তার। স্মিথ বলেন, “এখন ২০২৭ সালের বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য একটি ভালো সুযোগ এসেছে দলের। তাই এটা অনুভব হচ্ছে যে সরে যাওয়ার সঠিক সময় এটি।”
যদিও টেস্ট ক্রিকেটে এখনও নিজের অনেক কিছু দেওয়ার আছে বলে বিশ্বাস করেন স্মিথ, “টেস্ট ক্রিকেট এখনও আমার অগ্রাধিকার এবং আমি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল, শীতকালীন ক্যারিবিয়ান সফর এবং ঘরের মাটীয়তে অ্যাশেজ সিরিজ নিয়ে সত্যিই উত্তেজিত। আমি মনে করি আমি এখনও ওই পর্যায়ে অনেক কিছু অবদান রাখতে পারব।”
স্মিথের ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছিল ২০১০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। এরপর ১৭০ ওয়ানডেতে তিনি অস্ট্রেলিয়াকে প্রতিনিধিত্ব করেন। যেখানে ৪৩.২৮ গড়ে ও ৮৬.৯৬ স্ট্রাইকরেটে ৫৮০০ রান করেছেন তিনি। ১২টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি পেয়েছেন ৩৫টি হাফ সেঞ্চুরি। এছাড়াও পার্ট টাইম বোলিং করে তুলেছেন ২৮টি উইকেট।
ঢাকা/নাভিদ