নারী ও পুরুষ উভয় এশিয়া কাপ থেকে ভারতের নাম প্রত্যাহার
এশিয়া কাপ নিয়ে ক্রিকেট উত্তেজনার মধ্যেই ভারতের বিস্ময়কর এক সিদ্ধান্তে বড় ধরনের অনিশ্চয়তায় পড়েছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)। শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিতব্য নারী ইমার্জিং এশিয়া কাপ ও সেপ্টেম্বরে নির্ধারিত পুরুষদের আসর—এই দুই টুর্নামেন্ট থেকেই নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারত।
ভারতের ক্রিকেট প্রশাসনের (বিসিসিআই) এমন অবস্থান শুধু আসন্ন এশিয়া কাপ নয়, গোটা এশিয়ান ক্রিকেট কাঠামোর ওপরেই প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।
বিসিসিআই-এর একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এসিসির নেতৃত্বে বর্তমানে রয়েছেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি। যিনি একযোগে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) প্রধানের দায়িত্বেও আছেন। এর ফলে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রা পেয়েছে।
ভারতের মতে, এমন একজনের নেতৃত্বাধীন টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ দেশটির জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী। তাই ভারত সরাসরি অংশ না নেওয়ার কথা জানিয়েছে এসিসিকে।
২০২৫ সালের এশিয়া কাপের সম্প্রচার স্বত্ব আগে থেকেই রয়েছে ভারতের সনি পিকচার্স নেটওয়ার্কস-এর হাতে। প্রায় ১৭০ মিলিয়ন ডলারের এই চুক্তি ভারতীয় অংশগ্রহণ ছাড়া ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত ছাড়া আসর হলে টেলিভিশন রেটিং ও স্পন্সরশিপ মূল্য দুই-ই হ্রাস পাবে। মূলত ভারত-পাকিস্তান ম্যাচগুলোর ঘিরেই দর্শক ও অর্থনীতি কেন্দ্রীভূত।
২০২৩ সালেও একই ধরনের রাজনৈতিক জটিলতায় পাকিস্তানে আয়োজিত এশিয়া কাপ হয় হাইব্রিড মডেলে। ভারত খেলেছিল নিরপেক্ষ ভেন্যু সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সেই পরিকাঠামো অনুসরণ করে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সূচিও সাজানো হয়েছিল। চলতি বছরেও হয়তো এই বিকল্প পথে হাঁটতে হতে পারে এসিসিকে। যদিও সেটিও আপাতত অনিশ্চিত।
১৯৮৩ সালে গঠিত এসিসি-র মূল লক্ষ্য ছিল এশিয়ান ক্রিকেটের উন্নয়ন ও ঐক্য প্রতিষ্ঠা। কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক পারিপার্শ্বিকতা এই সংগঠনের কার্যকারিতা ও গ্রহণযোগ্যতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
যদি ভারত সত্যিই আসর বর্জন করে এবং এসিসি ভিন্ন কোনো আয়োজক খুঁজে না পায়, তাহলে ২০২৫ এশিয়া কাপ শুধু স্থগিত নয়, হয়তো বাতিলও হতে পারে।
ঢাকা/আমিনুল