ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বিসিবির ‘শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার’ প্রোগ্রাম: দিগন্ত বিস্তৃত আলোচনার জায়গা

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:০৬, ১৯ আগস্ট ২০২৫   আপডেট: ২৩:৩৪, ১৯ আগস্ট ২০২৫
বিসিবির ‘শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার’ প্রোগ্রাম: দিগন্ত বিস্তৃত আলোচনার জায়গা

পূর্ব প্রস্তুতিতে মুশফিকুর রহিমকে ছাড়িয়ে যেতে পারবেন না কেউ। মাঠে তার আগে অনুশীলনে আসার নজির নেই কারও। মাঠের বাইরেও যেকোনো আয়োজনে মুশফিকুর ফার্স্ট। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) ক্রিকেটারদের নিয়ে ‘শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার’ বৈঠকের আয়োজন করেছেন সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

সামনে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজ। এরপর এশিয়া কাপ ও পরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ। টানা সিরিজ খেলার আগে সিলেটে আবার ক্যাম্পও করবেন ক্রিকেটাররা। তার আগে বিসিবির ডাকে সাড়া দিয়ে হোটেল সোনারগাঁওয়ের বলরুমে একত্রিত হলেন সবাই। যেখানে কেবল ক্রিকেটারদের কথা শুনেছেন বোর্ড পরিচালকরা।

আরো পড়ুন:

কিছুদিন আগে ক্রিকেটারদের ৮টি প্রশ্নের একটি জরিপ পাঠানো হয়। যেখানে বোর্ড পরিচালনা নিয়ে তাদের মূল্যায়ন জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে ভাবনা, উন্নতির জায়গা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও জানতে চাওয়া হয়। ক্রিকেটাররা কেবল মার্কিং নয়, নিজেদের মন মতো ছোট-বড় করে উত্তর দিয়েছেন। আজকের সভায় প্রাণ খুলে কথা বলার সুযোগ ছিল। সেখানেও প্রত্যেকে ছিলেন ভোকাল। এজন্য বেশ খুশি আমিনুল ইসলাম। যে উদ্যোগে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল, তাতে সফল হওয়ায় হাসি ফুটেছে তার মুখে।

বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের আমিনুল ইসলাম বলেছেন, ‘‘আজকে দুটি বড় বড় কাজ করেছি আমরা। জাতীয় দলের যারা ক্রিকেটার আছে, লাল ও সাদা বলে খেলছে, পাশাপাশি আমাদের সাপোর্ট স্টাফ, কোচরা যারা আছেন, সবাই একত্রিত হয়েছিলাম। বোর্ডের পরিচালকরা সবাই এখানে ছিলেন। প্রোগ্রামটির নাম ‘শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার।’ আমরা মনে করি, যে দলটা মাঠে খেলে, সেটা আমাদের একটি দল। যে দলটি ডাগআউটে বসে থাকে, তারা একটি দল। আর আমরা যারা বোর্ডে কাজ করি, তারা একটি দল। তিনটি দলের সত্যিকারের পারফরম্যান্স কী (সেসব আলোচনা হয়েছে)…।”

“আমরা তাদের ৮টি প্রশ্ন করেছিলাম। ৮টি প্রশ্ন করার পর তারা আমাদের কাছে ফিরে এসেছে। সেগুলোর আমরা ডেটা অ্যানালাইসিস করেছি। অ্যানালাইসিস করে তাদের সঙ্গে শেয়ার করেছি, আমাদের যে উন্নতির জায়গাগুলো আছে, কীভাবে আমরা আরও ভালো করতে পারি।”

মূলত এই আয়োজন বোর্ডের পারফরম্যান্স মূল্যায়নের জন্য। সামনেও নিয়মিত বিরতিতে এমন পর্যালোচনার ব্যবস্থা করবেন আমিনুল, “ক্রিকেটাররা তো মাঠে খেলে, আমরা তাদের কতটা সাহায্য করছি, সেই সাহায্য করার জন্য এই মুহূর্তে কতটুকু গ্যাপ আছে, গ্যাপটা কবে ও কীভাবে পূরণ করতে পারব যাতে ক্রিকেটাররা মাঠে নিশ্চিন্তে খেলতে পারে…। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রতি তিন মাসে একবার করে এরকম বৈঠক করব এবং আমাদের দিক থেকে খেলার যে জায়গাটি আছে, মানে উন্নতির জায়গাগুলো যা আছে, সেগুলো আমরা কীভাবে কাটিয়ে উঠে ওদেরকে সাহায্য করব।”

“সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার আমরা ভাবি ক্রিকেটাররা, মাঠে যারা খেলে। তাদের দেখভাল করা আমাদের দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব বলতে শুধু ইন্স্যুরেন্স বা মেডিকেল নয়, মাঠে কোচরা যে স্কিল উন্নতিতে কাজ করেন, সেটিই সবকিছু নয়… এখানে লজিস্টিকস, পোশাক, পিচ কন্ডিশন, অনুশীলনের সুযোগ-সুবিধা, সার্বিক সাপোর্ট আমরা কতটুকু করতে পারছি, সবকিছুই। তাদের মনের কথা তারা মন খুলে লিখেছে, পরামর্শ দিয়েছে সকলে। সেখান থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে কোথায় অবস্থান করছি। অবস্থান যেহেতু জেনে গিয়েছি, সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করব।”

“ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো, আমাদের যে এজেন্ডা ছিল, এর বাইরেও ক্রিকেটাররা লাফিয়ে লাফিয়ে এসে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে কথা বলছিল। মনের কথাগুলো প্রকাশ করছিল। এটিই সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার। মনে হচ্ছিল যে আমরা সবাই একটি টিম এবং দল হিসেবে কাজ করলে যে আমরা কত সামনে এগিয়ে যেতে পারব, তার একটি বড় প্রতিচ্ছবি আমরা আজকে দেখেছি।”

“তারা তাদের মতামত দিয়েছে। আমরা জরিপে রেখেছি ১ হচ্ছে বেশি ভালো নয়, ৫ হচ্ছে সবচেয়ে ভালো। সেটা পর্যবেক্ষণ করে আমরা যেটা পেয়েছি, সেখানে তারা যা বলেছে, সেটির আউটকাম পেয়েছি এবং ওই জায়গায় আমাদের উন্নতির অনেক জায়গা আছে।”

“তারা শুধু মার্কিংই করেনি, তারা নিজেদের মনের কথা লিখেছে। সবচেয়ে ভালো লেগেছে যে, লেখার পরও আজকে এখানে এসে তাদের যে সমস্যাগুলো আছে, সেগুলো শেয়ার করেছে। তাদের সাফল্যগুলো শেয়ার করেছে এবং তারা এটাও বলেছে যে, বিসিবি থেকে যে সাপোর্ট তারা পাচ্ছে, তাতে তারা খুশি। আরও কিছু জায়গা আছে, যেখানে আমাদের (বোর্ডের) উন্নতির জায়গা আছে। একটা ব্যাপার ভালো মনে হয়েছে যে, আমরা যে একটি দল… হারলে শুধু ক্রিকেটাররা হারে না, কর্মকর্তারাও হারে, সেটা আজকে আমরা বোঝাতে পেরেছি।”

বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক লিটন কুমার দাস ধারাবাহিকতার ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, ‘‘আমরা প্রতিদিন মাঠে যে কঠোর পরিশ্রম করি তা সবাই দেখতে পায়, কিন্তু অনেকেই সবসময় এর পেছনের প্রক্রিয়াটি দেখতে পায় না। আমাদের জন্য, এটি আমাদের প্রচেষ্টার প্রতি সৎ থাকা এবং নিজেদের ওপর আস্থা রাখা। আমরা যদি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং মনোযোগী থাকি, তাহলে আমি বিশ্বাস করি যে এই নিষ্ঠা আগামী দিনে ফলাফলে রূপান্তরিত হবে।”

বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ সুযোগ-সুবিধা এবং দক্ষতার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেন, “খেলোয়াড় হিসেবে, আমরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হই যখন আমাদের সারা বছর ধরে শক্তিশালী সমর্থন থাকে। এই কারণেই আমাদের স্থানীয় স্টাফদের ওপর বিনিয়োগ এবং বিকাশ করা গুরুত্বপূর্ণ। যখন আমরা এই শক্তিগুলোকে একত্রিত করি, তখন আমরা এমন একটি পরিবেশ তৈরি করি যেখানে খেলোয়াড়রা সত্যিকার অর্থে বেড়ে উঠতে পারে এবং তাদের সেরাটা দিতে পারে।”

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়