ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৩ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় ই-লার্নিং

কবিতা রাণী মৃধা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০৭, ৯ আগস্ট ২০২১   আপডেট: ২২:৪১, ৯ আগস্ট ২০২১
আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় ই-লার্নিং

করোনার কারণে সারাদেশে লকডাউন চলছে। শুধু দেশ নয় সারাবিশ্বে কোথাও না কোথাও চলছে লকডাউন। আর এতে বন্ধ আছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অফিস। তবে, এ বন্ধে অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষার্থীরা ই-লার্নিং ব্যবহার করে সব কাজ সম্পাদন করতে পারেন। ই-লার্নিংয়ের মাধ্যমে একদিকে যেমন জাতির উন্নয়ন হচ্ছে, জনগণ দক্ষ হচ্ছে, তেমনি প্রযুক্তিরও সুন্দর ব্যবহার হচ্ছে। তাছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রেও এ মাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম।

ই-লার্নিং এবং এর সুবিধা 

আরো পড়ুন:

ই-লার্নিংকে আবার ইলেকট্রনিক লার্নিং, অনলাইন লার্নিং বা অনলাইন শিক্ষা হিসাবেও উপস্থাপন করতে পারি। অর্থাৎ ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে জ্ঞানার্জনের মাধ্যমকেই ই-লার্নিং বলে। ই-লার্নিং এর ক্ষেত্রে ‘ই’ অর্থ ‘ইলেক্ট্রনিক’ অর্থাৎ বৈদ্যুতিক শিক্ষা বা ইলেকট্রনিক শিক্ষা। এ শিক্ষাটি মূলত অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে বিভিন্ন ধরনের কোর্স দেওয়া থাকে, আপনি ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক লার্নিং ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

বর্তমানে প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতি এবং শিক্ষাব্যবস্থা উন্নত হওয়ার ফলে মানুষ ই-লার্নিং বিষয়টিকে গ্রহণ করেছে। আপনি ই-লার্নিংয়ের মাধ্যমে দেশের বাইরের অন্যকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রি অর্জন করতে পারবেন এবং ডিগ্রিটি সব দেশেই গ্রহণযোগ্য হবে। অনেকেই সময় ও ব্যয় হ্রাস করতে অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের কোর্স করে নিজেদের দক্ষতা অর্জন করছে এবং e-learning এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে।

এলিয়ট মাইসি ১৯৯৯ সালে “e-Learning” শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন, পরবর্তী সময়ে বিশ্বজুড়ে কম্পিউটারের সূচনার ব্পোকতা এবং সময়ের পালাক্রমে স্মার্টফোন, নোটবুক ইত্যাদি সহজলভ্য হওয়ার ফলে ই-লার্নিং বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয় এবং মানুষ একে সহজেই গ্রহণযোগ্য করে তোলে।

ই-লার্নিং শিক্ষা ব্যবস্থায় কোনো শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষে বসে পাঠ গ্রহণ করার প্রয়োজন হয় না৷ বরং শিক্ষার্থী পৃথিবীর যেকোনো স্থান থেকে সুবিধামত যেকোনো সময় ইলেট্রনিক ডিভাইস যেমন স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং স্মার্ট টেলিভিশন ইত্যাদি ব্যবহার করে পাঠ গ্রহণ করতে পারেন৷

ই-লার্নিংয়ের সুবিধা (Benefits of E-Learning)

১. ই-লার্নিংয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেকোনো শিক্ষার্থী সহজে ও সস্তায় প্রয়োজনীয় বিষয়ের উপর একাধিক দেশের একাধিক শিক্ষকের লেকচার দেখেশুনে শিখতে পারেন ৷

২. শিক্ষার্থী একই লেকচার এবং পাঠ থেকে যতবার ইচ্ছা অনুশীলন করতে পারেন ৷

৩. ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সুবিধামতো যেকোনো সময় পৃথিবীর যেকোনো স্থানে থেকেও পাঠ গ্রহণ করতে পারেন ৷

৪. দেশে থেকেও অনলাইনের মাধ্যমে বিদেশি ডিগ্রি এবং বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন৷

৫. ই-লার্নিংয়ের মাধ্যমে জ্ঞান এবং দক্ষতা উন্নয়ন করে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি কিংবা চাকরি ও ব্যবসায়ে সমৃদ্ধি অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেন ৷

৬. ই-লার্নিংয়ের মাধ্যমে গতানুগতিক প্রশিক্ষণ প্রদানে যে বিশাল ব্যয় হয়, তা প্রায় ৮০ শতাংশ কমাতে পারেন৷

৭. যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দক্ষ শিক্ষকের স্বল্পতা এবং উন্নত বৈজ্ঞানিক ল্যাবের অভাব রয়েছে, সেখানে ই-লার্নিংই হতে পারে বিকল্প সমাধান৷ এক্ষেত্রে যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দক্ষ শিক্ষকের লেকচার এবং বৈজ্ঞানিক ল্যাবে পরীক্ষার ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে শ্রেণি কক্ষে শিক্ষা প্রদান করা যেতে পারে ৷

৮. যারা চাকরির পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চান, তাদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ই-লার্নিং ভিত্তিক কোর্স।

৯. আপনার ব্যয় হ্রাস করতে চাইলে ই-লার্নিং কোর্স ব্যবহার করতে পারেন।

১০. আলোচনা বোর্ড এবং আড্ডার মাধ্যমে অনলাইনে সবার সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন এবং যদি কোনো পাঠে সমস্যা থাকে, সেগুলোও কোর্স এক্সপার্টদের সাথে শেয়ার করে সমাধান করতে পারবেন।

লেখক: শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

/মাহি/ 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়