ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

শাল্লায় বাড়িঘরে হামলা, ২ মামলায় আসামী ২ সহস্রাধিক

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫৮, ১৮ মার্চ ২০২১   আপডেট: ০১:০৬, ১৯ মার্চ ২০২১
শাল্লায় বাড়িঘরে হামলা, ২ মামলায় আসামী ২ সহস্রাধিক

সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের হয়েছে। দুই মামলায় ৮০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা দুই সহস্রাধিক জনকে আসামী করে মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে একটি মামলায় দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও নাচনি গ্রামের বাসিন্দা স্বাধীনকে প্রধান আসামী করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) সন্ধায় উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বাদী হয়ে একটি ও শাল্লা থানা পুলিশ বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়।

রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক।

স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেফাজত ইসলামের নেতা মামুনুল হকসহ ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করেন স্থানীয় নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুটন দাস আপন নামের এক যুবক। ঘটনাকে কেন্দ্র করে নোয়াগাঁও গ্রামে নিরহ হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৫/২০টি পরিবারে বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকালে শাল্লা থানা পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতানামা দেড় সহস্রাধিক জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে।

অপরদিকে হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বাদী হয়ে শাল্লা থানায় দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও নাচনি গ্রামের বাসিন্দা স্বাধীনকে প্রধান আসামী করে ৮০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল বলেন, আমরা এ হামলার ঘটনায় ব্যথিত। তারপরও আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই আমি গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করেছি। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আসামীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হবেন। আমি আশা করবো মামলা যেন দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যালে নিয়ে আসামীদর বিচাররের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করা হয়। আর যেন কেউ এই ধরণের অপকর্ম করতে সাহস না পায়।

শাল্লা থানার ওসি নাজমুল হক রাইজিংবিডিকে বলেন, থানায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের হয়েছে। একটি শাল্লা থানা পুলিশের পক্ষ থেকে অজ্ঞাতনামা দেড় সহস্রাধিক জনকে আসামী করে, অন্যটি স্থানীয় হবিবপুর ইউপি চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বাদী হয়ে। তিনি ৮০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭০০ জনকে আসামী করেন। তদন্তের স্বার্থে এখন আসামীদের নাম পরিচয় এখন বলছি না। আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার (১৫ মার্চ) জেলার দিরাই উপজেলা সদরে আয়োজিত এক সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা জুনাইদ বাবুনগরী ও মাওলানা মামুনুল হক বক্তব্য দেন। পরদিন মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেফাজত ইসলামের নেতা মামুনুল হকসহ ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করেন স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের গোপেন্দ্র দাসের ছেলে ঝুটন দাস আপন (২৮)। এরপর এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়।

বিষয়টি স্থানীয়ভাবে ভাইরাল হলে পুলিশ জনতার সহযোগিতায় মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) রাতেই শশখাই বাজার থেকে তাকে আটক করে। এই কটুক্তির ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার (১৭ মার্চ) সকালে উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৫/২০টি বাড়িঘর ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার সকালে র‍্যাব সদর দপ্তর থেকে হেলিকপ্টারযোগে সুনামগঞ্জের শাল্লার উদ্যেশে আসেন র‍্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর পরিদর্শন করেন।

আল আমিন/আমিনুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়