খানজাহান আলী মাজার দিঘিতে ছেড়ে দেওয়া হলো ৭৩ সন্ধি কচ্ছপ
বাগেরহাট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বাগেরহাটের খানজাহান আলী (রহ) এর মাজার সংলগ্ন দিঘিতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে মোংলা থেকে উদ্ধার করা ৭৩ সন্ধি কচ্ছপ।
মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দুপুরে বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা এই কচ্ছপ অবমুক্ত করেন।
এসময় বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিম, বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, খুলনার মৎস্য বিশেষজ্ঞ মো. মফিজুর রহমান চৌধুরী, বন্যপ্রাণি পরিদর্শক রাজু আহমেদসহ বন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সোমবার (২৬ জুলাই) রাতে মোংলা উপজেলার দিগরাজ বাজার সংলগ্ন আপাবাড়ি নামক স্থানে কোস্টগার্ড ও বন বিভাগ যৌথ অভিযান চালিয়ে এই ৭৩টি সন্ধি কচ্ছপসহ মনোজ রায় নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে।
পরবর্তীতে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেস মজুমদার ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে মনোজ রায়কে দুই হাজার টাকা জরিমানা এবং কচ্ছপগুলোকে খানজাহান আলী (রহ) এর মাজার দিঘিতে অবমুক্ত করার আদেশ দেন।
গোপালগঞ্জ জেলার কোটালিপাড়া এলাকার মঙ্গল চন্দ্র রায়ের ছেলে মনোজ রায় বরিশালসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করা কচ্ছপগুলো বিক্রির জন্য মোংলায় নিয়ে এসেছিলেন। ৪শ থেকে ৫শ টাকা কেজি দরে ক্রয় করা কচ্ছপগুলো এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা কেজি দরে মোংলায় বিক্রি হতো বলে জানিয়েছেন বন্য প্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, খুলনার মৎস্য বিশেষজ্ঞ মো. মফিজুর রহমান চৌধুরী।
তিনি বলেন, সন্ধি প্রজাতির এই কচ্ছপগুলো মিঠাপানির প্রাণি। বরিশাল, গৌরনদী, চিতলমারী, মোল্লাহাটসহ মিষ্টিপানি অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় এই কচ্ছপ পাওয়া যায়। দিন দিন এই কচ্ছপের পরিমান কমে যাচ্ছে। এজন্য বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইনে এই কচ্ছপ আহরণ, সংরক্ষণ ও বিক্রয় নিষিদ্ধ।
খানজাহান আলী (রহ) এর মাজারের প্রধান খাদেম ফকির শের আলী বলেন, মাজারের এই দিঘিতে কুমির, মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণি রয়েছে। এই কচ্ছপগুলো ছাড়ার ফলে আরও একটি প্রাণি যুক্ত হলো এই দিঘিতে। এই কচ্ছপগুলো যাতে কেউ ধরতে না পারে বা এই কচ্ছপের কোন ক্ষতি না করতে পারে সেজন্য আমরা সব ধরণের চেষ্টা করবো।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, আমাদের বন্যপ্রাণিকে স্বাভাবিকভাবে প্রকৃততিতে বিচরণের সুযোগ দিতে হবে। এগুলোকে কোনভাবেই শিকার করা বা মারা যাবে না। যদি কেউ এসব আইন লঙ্ঘন করে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। এজন্য বন বিভাগের পাশাপাশি আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও সচেষ্ট রয়েছে।
টুটুল/টিপু
আরো পড়ুন