সড়কদ্বীপে রাধাচূড়ার সমাহার, মুগ্ধ পথচারী
আব্দুল্লাহ আল নোমান || রাইজিংবিডি.কম
মৃদু বাতাসে দুলছে লাল আর হলুদ রাধাচূড়া। সারিবদ্ধ সব গাছেই ফুটেছে ফুল। বৃষ্টির মৌসুম হওয়াতে পাতার রঙও একেবাবে সবুজ আকার ধারণ করেছে। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে লাল-হলুদের মিশেলের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন পথচারী।
এমন দৃশ্যের দেখা মিলবে সিলেট নগরের বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. চঞ্চল সড়কে। এ সড়ক আধুনিকায়নের পর সড়কদ্বীপে লাগানো হয়েছে রাধাচূড়ার গাছ। আর এই গাছগুলোতেই ফুটেছে ফুল। এ ফুলের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে এ পথ দিয়ে যাতায়াত করছেন যাত্রীরা।
সড়কের রিকাবীবাজার পয়েন্ট থেকে মিরেরময়দান বেতার অফিসের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত পুরো সড়ক দ্বীপে ফুটেছে লাল-হলুদ রাধাচূড়া। অন্যদিকে সুবিদবাজার মোড় থেকে পাঠানটুলা পর্যন্ত সড়ক দ্বীপ ছেয়েছে রাধাচূড়ায়। অবশ্য মধ্যখানে সংস্কৃত কলেজের সামন থেকে সিলেট প্রেসক্লাব হয়ে সুবিদবাজার মোড় পর্যন্ত সড়ক নতুন করে প্রশস্ত করার কারণে সেখানে এ বছর নতুন করে লাগানো হয়েছে এসব ফুলের গাছ।
এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করেন ব্যাংক কর্মকর্তা কানন চন্দ। তিনি বলেন, ‘এ সড়ক প্রশস্ত হওয়ার কারণে যানজট থাকেনা। আর সড়ক দিয়ে চলাচলের সময় রাধাচূড়ার সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হতে হয়। অনেক সময় রাধাচূড়ার সৌন্দর্য অবলোকন করতে এ পথে পায়ে হেঁটে চলাচল করেন বলেও জানান।’
সিলেট নগরের সড়কদ্বীপে রাধাচূড়া গাছ রোপণের উদ্যোগ প্রথমে নিয়েছিল একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে ‘আনন্দ নিকেতন’ নামে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই নিজেদের টিফিনের অর্থ বাঁচিয়ে এসব গাছ রোপণ করেন।
আনন্দ নিকেতন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সিসিকের সঙ্গে সমন্বয় করেই তারা সড়কদ্বীপে শুরুর দিকে ৪০০ গাছ লাগিয়েছেন। চলতি বছরে আরও ১০০ গাছ রোপণ করা হয়েছে। আগামীতেও তাদের আরও গাছ লাগানোর পরিকল্পনা আছে।
আর সিসিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পর্যায়ক্রমে সিলেট নগরের সড়কদ্বীপসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং সুরমা নদীর তীরে কৃষ্ণচূড়া এবং রাধাচূড়াসহ সৌন্দর্যবর্ধন বৃক্ষ রোপণের পরিকল্পনা রয়েছে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘নগরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। রোড ডিভাইডারে ফুলের গাছে ফুল এসেছে। এতে সৌন্দর্য বেড়েছে।’
‘গাছ লাগানোর জন্য পরিকল্পনা দরকার, এ জন্য সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি টিম সিসিককে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। তারা পর্যবেক্ষণ করে কোন স্থানে কি গাছ লাগানো প্রয়োজন সে বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।’
আর পরিবেশবাদীরা সিসিকের এমন উদ্যোগের প্রশংসা করলেও ফুল গাছ রোপণের জন্য যাতে পুরনো গাছ না কাটা হয় সেদিকে নজর রাখার কথা বলেছেন।
তারা বলছেন, এর আগেও নগরের রোড ডিভাইডার এবং সড়কের পাশের পুরনো অনেক বড় বড় গাছ কাটা হয়েছে, যা পরিবেশের জন্য হুমকি স্বরূপ।
পরিবেশবাদী সংগঠন ‘ভূমিসন্তান বাংলাদেশ’র সমন্বয়ক আশরাফুল কবীর বলেন, ‘সৌন্দর্যবর্ধনে ফুলের গাছ রোপণ করছে, তা অবশ্য ভালো। তবে সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি পরিবেশও যাতে ভালো থাকে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। এজন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে বৃক্ষরোপণ করা প্রয়োজন।’
সিলেট/টিপু