ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

লবণ আমদানির সিদ্ধান্তে কক্সবাজারের চাষিরা হতাশ

কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪৩, ২২ নভেম্বর ২০২১   আপডেট: ১২:৫৮, ২২ নভেম্বর ২০২১
লবণ আমদানির সিদ্ধান্তে কক্সবাজারের চাষিরা হতাশ

সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে ৩ লাখ ১৬ হাজার মেট্রিক টন লবণ আমদানী করা হবে। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে লবণ আমদানির এ সিদ্ধান্তে হতাশ কক্সবাজারের লবণ চাষিরা। 

চাষিরা মাত্র উৎপাদনের জন্য মাঠে নেমেছেন, ঠিক এসময় বিদেশ থেকে লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না তারা।

সোমবার (২২ নভেম্বর) সকালে লবণ আমদানির সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক ও কক্সবাজার বিসিকের উপ মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জাফর ইকবাল ভুঁইয়া। 

তারা জানান, সরকারের লবণ আমদানির সিদ্ধান্তটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এখনো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আসলে লবণ চাষিদের আতঙ্ক হচ্ছে ‘আমদানি।’ লবণের আমদানির কথা শুনলেই চাষিরা হতাশ হয়ে পড়েন। তাদের ঘুম হারাম হয়ে যায়। মৌসুমের শুরুতে আমদানির সিদ্ধান্তের কথা শুনলেই চাষিরা আর মাঠে নামতে চায় না। তাদের যুক্তি হচ্ছে বিদেশ থেকে লবণ আমদানি করা হলে দেশিয় উৎপাদিত লবণের দাম পড়ে যায়। তখন চাষিরা তাদের উৎপাদিত লবণ বিক্রি করে ন্যায্য মূল্য পায় না। আবার কেউ কিনতে চায় না দেশিয় লবণ। বিদেশী লবণ ধবধবে সাদা। দামেও কম। তাই ভোক্তারা ছুটেন আমদানি করা দেশীয় লবণের পেছনে। এসব কারণে চাষিরা আমদানির বিরুদ্ধে একাট্টা থাকে।

টেকনাফের সাবরাং এলাকার লবণ চাষি মোহাম্মদ শফিক মিয়া বলেন, 'টেকনাফ থেকে শুরু করে কুতুবদিয়াসহ উপকূলের চাষিরা লবণ চাষের জন্য মাঠে নেমেছে। সাবরাং এলাকায় আগামী সপ্তাহে মাঠের নতুন লবণ বাজারে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এমন সময়ে লবণ আমদানি আমাদের কাম্য নয়।' 

সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, ‘লবণের বিষয়টি আমাদের এলাকার জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল। চাষিরা দাম না পেলে যেমনি সরকারের উপর নাখোশ হন তেমনি আবার বাজারে কোন কারণে সঙ্কট সৃষ্টি হলেও দোষ পড়ে সরকারের ঘাড়ে। তাই সরকার এ বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন রয়েছে। তিনি বলেন, সরকার জাতীয় স্বার্থকেই গুরুত্ব দিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। আমি মনে করি, মৌসুম শেষে এমন সিদ্ধান্তটি সরকার নিতে পারতো।’

কক্সবাজার বিসিকের উপ মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জাফর ইকবাল ভুঁইয়া বলেন, 'চলতি মৌসুমে সরকার লবণের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা আরো এক লাখ বাড়িয়ে ২৩ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করেছে। গেল বছর এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২২ লাখ মেট্রিক টন। তবে গত মৌসুমে উৎপাদন হয়েছিল মাত্র ১৬ মেট্রিক টন। ভাগ্যিস আগের বছরের উদ্বৃত্ত ৩ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন ছিল বিধায় কোন রকমে মৌসুম শেষ করা গেছে কোন আমদানি ছাড়াই। তিনি জানান, গত ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত মাঠ পর্যাযে লবণের মওজুদ রয়েছে প্রায় দেড় লাখ মেট্রিক টন। তাই মৌসুম শুরু হলেও উৎপাদন ব্যাহত হবার আশংকায় তিন লাখ ১৬ হাজার মেট্রিক টন লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত সরকার নিয়ে রেখেছে। তাও সেই লবণ দেশে আসতে জানুয়ারি মাসের শেষ হয়ে যেতে পারে।'

এদিকে লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েই আজ (সোমবার) কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে লবণ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সভার প্রধান অতিথি শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা এবং বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) চেয়ারম্যান মোসতাক হাসান এনডিসি।

তারেকুর/টিপু

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়