প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে এক্স সিরামিকসের ব্যাখ্যা
দেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজপোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকমে গত ২৮ জুন প্রকাশিত ‘এক্স সিরামিকস বিতর্ক: সবুজ স্বীকৃতির আড়ালে বিষাক্ত থাবা’ শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে এক্স সিরামিকস লিমিটেড।
সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির পাঠানো ‘এক্স সিরামিকস লিমিটেড সংক্রান্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত সাম্প্রতি প্রতিবেদনের ব্যাখ্যা’ শীর্ষক প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, “সাম্প্রতিক সময়ে কিছু গণমাধ্যম এক্স সিরামিকসের বিরুদ্ধে নদী দখল, দূষণ এবং তাদের প্রাপ্ত ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এই প্রসঙ্গে আমরা স্পষ্ট জানাতে চাই যে, উক্ত প্রতিবেদন অসম্পূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্বারা যাচাই করা প্রকৃত তথ্যকে প্রতিষ্ঠিত করে না। নদী দখল বা পরিবেশগত নিয়ম লঙ্ঘনের দাবিগুলো ভুল এবং ভিত্তিহীন।
উল্লেখ্য যে, এক্স সিরামিকস লিমিটেড জিরো ডিসচার্জ এবং একটি ক্লোজড লুপ রিসাইক্লিং সিস্টেমের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই ব্যবস্থায় সমস্ত সিরামিক বর্জ্য আমাদের ইনফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের (ETP) মাধ্যমে শোধন করে নিরাপদে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় পুনরায় ব্যবহার করা হয়।
আমাদের কার্যক্রম পরিবেশ অধিদপ্তর, শ্রম মন্ত্রণালয় এবং অন্যান্য প্রযোজ্য সরকারি সংস্থা কর্তৃক নিয়মিত নিরীক্ষিত ও অনুমোদিত।
এক্স সিরামিকসকে যে গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছিল, তা অনেকগুলো সংস্থার মূল্যায়ন ও যাচাইয়ের ফল, যা পরিবেশসম্মত এবং পেশাগত নিরাপত্তা মানদণ্ড পূরণের প্রতি আমাদের অঙ্গীকারকে পুনঃনিশ্চিত করে।
সাম্প্রতিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর সরকারি কর্তৃপক্ষ আমাদের কারখানা পুনরায় পরিদর্শন করেছে এবং সমস্ত নিয়ন্ত্রক প্রয়োজনীয়তা মেনে চলার বিষয়টি পুনরায় নিশ্চিত করেছে।
এছাড়া, জাতীয় নদী রক্ষা আইন, ২০১৩ এর অধীনে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন ২০২৩ ইং সালে বাংলাদেশের নদ-নদীসমূহের যে তালিকা প্রকাশ করে, সেখানে লবনদহ/লাবুন্দা খালকে নদী হিসাবে তালিকা করা হ। অধিকন্তু, উক্ত কমিশন নদীর সংজ্ঞা প্রদান করতে গিয়ে উল্লেখ করে যে, “তবে শর্ত থাকে যে উপর্যুক্ত সংজ্ঞায় যাহাই থাকুক না কেন ক্যাডেস্ট্রাল সার্ভে, রিভিশনাল সার্ভে ও বাংলাদেশ রিভিশনাল সার্ভে রেকর্ডে কনদ বা নদী হিসাবে যাহা উল্লেখ হইয়াছে তাহা নদ বা নদী হিসাবে গণ্য হইবে।
অন্যদিকে, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর কর্তৃক প্রনীত সিএস (১৯১১-১৯১৪ ইং) এবং আরএস (১৯৬৬-১৯৭৮ ইং) জরিপে লবলং খাল হিসেবেই রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। এক্স সিরামিকস লিমিটেড ২০০৮ ইং সালে সেখানে কারখানা গড়ে তোলে, তখন খালের পাড় নিয়ম অনুযায়ী ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই, খালের জমি দখলের প্রশ্ন অবান্তর।
এটা দুর্ভাগ্যজনক যে গণমাধ্যমে নির্বাচিত ও বিভ্রান্তিকর দৃশ্যগত ব্যাখ্যা প্রচার করা হয়েছে। লবলং খালের পানির গুণগত মানের অবনতির জন্য দায়ী উজানে অবস্থিত অন্যান্য শিল্প ইউনিটগুলোর উপস্থিতি উপেক্ষা করা হয়েছে।
এক্স সিরামিকস পরিবেশগত উদ্যোগকে সমর্থন করে আসছে, যার মধ্যে পর্যায়ক্রমিক পরিচ্ছন্নতা অভিযান এবং জলাশয় পুনরুদ্ধার কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত। আমরা স্বচ্ছতা, পরিবেশগত দায়িত্ব এবং নৈতিক ব্যবসায়িক আচরণের সর্বোচ্চ মান বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এবি সিরামিকস লিমিটেড এবং ইনডেক্স অ্যাগ্রো তার সকল অংশীদার এবং জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে যে, তারা যেন উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের যাচাইকৃত তথ্যের ওপর নির্ভর করে এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত অসম্পূর্ণ এবং বিভ্রান্তিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে অনুমান করা থেকে বিরত থাকে।
এক্স সিরামিকস লিমিটেড এর ইনডেক্স অ্যাগ্রো সম্পূর্ণ জবাবদিহিতা ও নিয়ম মেনে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আমাদের অংশীদার, গ্রাহক, কর্মচারী এবং যে সমস্ত সম্পদকে আমরা সেবা দিয়ে থাকি, তাদের অবিরত আস্থা ও মূল্যায়নকে অত্যন্ত মূল্যায়ন করি।”
প্রতিবেদকের বক্তব্য
লবলং খালের জমি দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদ বিষয়ে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও শ্রীপুর উপজেলা ভূমি অফিসের নথি এবং দূষণের বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের গাজীপুর অঞ্চলের উপ-পরিচালকসহ পরিবেশবাদীদের সঙ্গে কথা বলে রাইজিংবিডি ডটকমে এ প্রতিবেদন করা হয়েছে। খালের জমি দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদ সংক্রান্ত শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও শ্রীপুর উপজেলা ভূমি অফিসের নথির অনুলিপিসহ অন্যান্য প্রমাণাদি রাইজিংবিডি ডটকমের হাতে আছে।
ঢাকা/রফিক