ঢাকা     শুক্রবার   ১১ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২৬ ১৪৩১

ভালোবাসা দিবস ঘিরে টিউলিপ বাগানে আয়োজন

রফিক সরকার, গাজীপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  
ভালোবাসা দিবস ঘিরে টিউলিপ বাগানে আয়োজন

ফুল উৎপাদনে বৈশ্বিক তালিকায় বাংলাদেশের নাম হয়তো একেবারেই তলানিতে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই দেশে টিউলিপ ফুলের উৎপাদন বিস্ময় জাগিয়েছে। ষড়ঋতুর এই দেশে শীতকালের বাহারি টিউলিপ চাষে এসেছে সফলতা। এ চাষ প্রতিনিয়ত সম্প্রসারণ হচ্ছে সারা দেশেই, শুরু হয়েছে বাণিজ্যিক উৎপাদনও।

২০২০ সালে প্রথমবার দেশে টিউলিপ ফুল ফুটিয়ে সারা জাগিয়েছিলেন গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার কেওয়া পূর্ব খণ্ড গ্রামের উদ্যোক্তা ও মৌমিতা ফ্লাওয়ারর্সের স্বত্বাধীকারী মো. দেলোয়ার হোসেন ও সেলিনা হোসেন দম্পতি। এরই ধারাবাহিকতায় এবার তাদের বিশাল বাগানে ফুটেছে ১২ জাতের ৬ রংয়ের ৭০ হাজার টিউলিপ। বিস্তৃত জায়গা জুড়ে শুধু বাহারি রঙিন ফুলের খেলা। এ যেন দেশের বুকে এক টুকরো নেদারল্যান্ডস। তবে এবার বিশ্ব ভালবাসা দিবস উপলক্ষে ৫ লাখ টাকার টিউলিপ বিক্রির প্রত্যাশা করছেন ওই উদ্যোক্তা দম্পতি।

প্রথম বছর তাদের টিউলিপ বাগানের আয়তনের ছিল মাত্র ২ শতাংশ। সফলতা পেয়ে এ বছর তাদের মোট ১ বিঘা জমিতে ৭০ হাজারের বেশি টিউলিপ ফুল চাষ করেছে। টিউলিপ ও অন্যান্য ফুল-ফলের এই প্রকল্পে কাজ করছেন ২৫ নারী ও পুরুষ। প্রতিবছর নেদারল্যান্ডস থেকে টিউলিপ ফুলের বাল্ব আমদানি করেন তারা।

আরো পড়ুন:

মৌমিতা ফ্লাওয়ার্সে ফুল নিতে আসা এক পাইকারি ফুল বিক্রেতা জানান, তিনি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা থেকে এসেছেন। তিনি ৬টি কালারের ২০০ টিউলিপ ক্রয় করেছেন। যেগুলো তিনি নঁওগা শহরে পাইকারি দরে বিক্রি করবেন। ১০০ টাকা দরে তিনি কিনলেও একটু বেশি দামে তিনি বিক্রি করবেন বলেও জানান।

তিনি আরও জানান, সামনে ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে আরও বেশি ফুল কিনে নিয়ে যাবেন। টিউলিপের যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে। বিশেষ করে প্রেমিক-প্রেমিকা জুটির কাছে। এছাড়া বাজারেও এর বেশ চাহিদা রয়েছে। তাই টিউলিপ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই বাগানে এসেছেন।

কথা হয় মৌমিতা ফ্লাওয়ার্সে ঢাকার রামপুরা থেকে আসা এক দর্শনার্থী তরুণের সঙ্গে। তিনি বলেন, গণমাধ্যমে দেলোয়ার ভাইয়ের টিউলিপ বাগানের কথা জেনেছেন। তাই দেখতে এসেছেন। তাছাড়া সামানে বিশেষ দিন, ভালোবাসা দিবস। সেই দিন প্রেমিকাকে নিয়ে ঘুরতে আসবো এবং তাকে ৬ রঙের ৬টি টিউলিপ কিনে দেবো। তার জন্য এ বছর এটা বিশেষ উপহার হবে বলেও তিনি আশা করেন।

মৌমিতা ফ্লাওয়ার্সের স্বত্বাধিকারী মো. দেলোয়ার হোসেন ও উদ্যোক্তা সেলিনা জানান, এ বছর পুরোপুরি বাণিজ্যিক উৎপাদনে নেমেছেন তারা। বাগান থেকে কেটে ফুল বিক্রির পাশাপাশি এ বছর পটেও টিউলিপ বিক্রি করছেন। যেহেতু চিন্তাধারা বাণিজ্যিক তাই তারা হাঁটছেন ভিন্ন পথে। তাদের টিউলিপ বাগানে প্রবেশ ফি নির্ধারণ করেছেন। টিউলিপ দর্শনে প্রতিজন দর্শনার্থীকে গুনতে হবে ১০০ টাকা। উদ্যোক্তা দম্পতির প্রত্যাশা ভালোবাসা দিবসে তাদের টিউলিপ বাগানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার প্রেমিক-প্রেমিকা জুটি দর্শনার্থী ছাড়াও অন্যান্য দর্শনার্থীরা ছুটে আসবেন। এতে শুধু টিউলিপ দর্শন বাবদ প্রায় লাখ টাকা আয় করা যাবে।

এছাড়া অন্যান্য জেলার প্রেমিক-প্রেমিকা জুটির টিউলিপের চাহিদা মেটাতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাইকারি বিক্রেতারাও ছুটে আসছে দেলোয়ার-সেলিনা দম্পতির টিউলিপ বাগানে। এছাড়া স্থানীয়ভাবে খুচরা ফুল বিক্রেতারা তো আছে। সব মিলিয়ে ওই উদ্যোক্তা দম্পতি শুধু ভালবাসা দিবস উপলক্ষে প্রায় ৫ লাখ টাকার টিউলিপ ফুল ও চারা বিক্রি করবে বলে প্রত্যাশা করছেন।
 

রফিক/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়