ধামরাইয়ে পাঠাভ্যাস উন্নয়নে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ঢাকার ধামরাইয়ে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্বুদ্ধকরণ বিষয়ক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (এসইডিপি) অন্তর্ভুক্ত স্ট্রেংদেনিং রিডিং হ্যাবিট অ্যান্ড রিডিং স্কিলস অ্যামাং সেকেন্ডারি স্টুডেন্টস স্কিম প্রকল্পের আওতায় এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ধামরাই উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই কর্মশালার আয়োজন করে প্রকল্পের বাস্তবায়ন সহযোগী বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ধামরাই উপজেলার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহীন আশরাফী। প্রধান অতিথি ছিলেন ধামরাই উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তার। এছাড়াও ধামরাই উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান এবং সংগঠকরা এতে উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ধামরাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোনালিসা হক। তিনি বই পড়ার গুরুত্বের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে এই কর্মসূচিটি সফলভাবে পরিচালনার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সহকারী শিক্ষকদের সহযোগিতা আহ্বান করেন।
এই পাঠাভ্যাস কর্মসূচি চালুর জন্য তিনি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রকে ধন্যবাদ জানান।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার বলেন, শিক্ষার্থীরা বই পড়ে মেধা ও মননের বিকাশের পাশাপাশি নিজেদের মানবীয় গুণাবলী সমৃদ্ধ হিসেবে গড়ে তুলবে। যা আমাদের দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর হবে। বই বাস্তব জীবনের সন্ধান দেয়।
বিশেষ অতিথি হিসেবে ধামরাই সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ড. মো. সেলিম মিয়া পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির বিভিন্ন বিষয়ের ওপর দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, বই অতীত ও ভবিষ্যতের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে। বই হলো অনন্ত যৌবনা। অনেক ধরনের সামাজিক বিশৃঙ্খলা, মাদকসন্ত্রাস বিদ্যমান। এই ধরনের অপসংস্কৃতি দুর করার জন্য পাঠাভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। করোনা কালীন সময়ে অনেক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে তাদের আমরা মোটিভেট করতে পারিনি। বই পড়ানোর অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে মোবাইল আসক্তি কমানো সম্ভব।
প্রধান অতিথি ফারজানা আক্তার তার বক্তব্যে বলেন, তথ্য-প্রযুক্তির অপব্যবহারের ফলে বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মাঝে বই পড়ার আগ্রহ কমে গেছে। এই কর্মসূচির দ্বারা শিক্ষার্থীদের মাঝে বই পড়ার পাশাপাশি পাঠ দক্ষতাও বৃদ্ধি পাবে। সারাদেশের ৩০০ উপজেলার ২৫ লাখ শিক্ষার্থী এই কর্মসূচির আওতায় থাকবে।
তিনি আরও বলেন, কর্মসূচির বই পড়ে শিক্ষার্থীদের চিন্তার দ্বার খুলে যাবে, দৃষ্টিভঙ্গি বড় হবে। ভালো-মন্দ বই বলে কিছু নেই। সব বই থেকেই শিক্ষণীয় বিষয় আছে।
উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে তিনি সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের মাধ্যমে ‘পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি’র কর্মপরিকল্পনা, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া তুলে ধরেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের টিম ম্যানেজার আবু বক্কার লিটন।
তিনি বলেন, উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালার অন্যতম উদ্দেশ্য মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তাদের মন এবং বয়স উপযোগী বই পড়ায় আগ্রহী করে তোলা। পাঠাভ্যাসের প্রসার ও সুযোগ বৃদ্ধি করা। কর্মসূচি পরিচালনার জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন, বই পড়া শেষে মূল্যায়নের ভিত্তিতে পুরস্কার প্রদান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরি টেকসই ও কার্যকর করার লক্ষ্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ধামরাই সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক শামীমা আক্তার রীনা, অধ্যাপক রোকসানা ও অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার আইরিন সুলতানা।
আরিফুল ইসলাম/এনএইচ