ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৮ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

‘রোদ ও আগুনের তাপে শরীর ভিজে গেলেও কষ্ট হয় না’

রফিক সরকার, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:১৩, ২৬ জুন ২০২৩  
‘রোদ ও আগুনের তাপে শরীর ভিজে গেলেও কষ্ট হয় না’

বাপ-দাদাদের পেশায় দুই যুগ ধরে কাজ করছেন রাজেশ কর্মকার। তিনি বলেন, ‘সারাবছর তেমন কর্মব্যস্ত থাকে না। আমরাও ঈদের জন্য অপেক্ষায় থাকি। ঈদের আয়-রোজগারের টাকায় আমাদের সারা বছরের সংসার চলে। তাই পরিশ্রমকে পরিশ্রম মনে হয় না। রোদ ও আগুনের তাপে শরীর ভিজে গেলও মনে হয় না কষ্ট হচ্ছে। গরমের চিন্তা করে কোনো লাভ নেই।’

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী বাজারে কাজ করেন রাজেশের মতো শতাধিক কামার। আসন্ন ঈদ উল আজহাকে সামনে রেখে এখন বেড়েছে তাদের কর্মব্যস্ততা। রাতদিন লোহার টুকরো পিটিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে ছুরি, চাপাতিসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র তৈরি করছেন কামাররা। তাদের আশা, এ বছর তারা গত বছরের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ছুরি ও চাকু বিক্রি করতে পারবেন।  

আরো পড়ুন:

সোমবার (২৬ জুন) বরমী বাজারের কামারপট্টিতে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন বয়সী কামাররা লোহা থেকে তৈরি করছেন বিভিন্ন ধরনের ধারালো অস্ত্র। কেউ কেউ ছুরি, চাপাতি, দা ও বটিতে শান দিতে ব্যস্ত। আবার কেউ কেউ লোহার টুকরো গরম করে হাতুড়ি পিটিয়ে তৈরি করছেন নতুন ছুরি, চাপাতি, দা-বটি। কামারদের ঘামে ভেজা শরীরে যেন ক্লান্তি নেই। 

কামারপট্টিতে কথা হয় সুরেশ কর্মকারের সঙ্গে। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, লোহা পুড়িয়ে গরম করে তৈরি করা হচ্ছে গরু কাটার জন্য বিভিন্ন ধরনের ধারালো অস্ত্র। এক সপ্তাহ ধরে নতুন ছুরি, চাপাতি, দা, বটি ও চাকু তৈরি শুরু হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে এসব সামগ্রী তৈরি করে রাখা হচ্ছে। গত বছর ঈদ উল আজহায় যা বেচাকেনা হয়েছে, তার চেয়ে বেশি পণ্য এ বছর বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি।

একই বাজারের গণেশ কর্মকারকে হাতুড়ি দিয়ে গরম লোহার টুকরোর ওপর একের পর এক আঘাত করতে দেখা যায়। দেখতে দেখতে তিনি লোহার টুকরোটিকে চাপাতির আকার নিতে থাকেন। কিছুক্ষণ হাতুড়ি পেটানোর পর আবারও আগুনে পোড়ানো হচ্ছিল ওই লোহাটিকে। এভাবেই রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান গণেশ কর্মকার। 

উপজেলার মাওনা, জৈনা, শ্রীপুর ও রাজাবাড়ি বাজারের কামারপট্টিতেও একই চিত্র দেখা গেছে। প্রতিটি দোকানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে ছুরি, চাপাতি, দা, বটি ও চাকু। ক্রেতারাও দোকানে এসে পছন্দ অনুযায়ী এবং তাদের কাছে থাকা চাকু, ছুরি শান দিকে শুরু করেছেন বলে জানান কামাররা।

বরমী বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জহিরুল ইসলাম সরকার বলেন, জেলার অন্যতম একটি বাণিজ্য কেন্দ্র বরমী বাজার। সড়ক ও নদী পথে ভালো যোগাযোগ থাকায় এই হাটের সুনাম দেশব্যাপী। আর এই বাজারে রয়েছে বড় কামারপট্টি। এখানে শতাধিক কামারের দোকান রয়েছে। কামারপট্টিতে রাতদিন চলছে টুংটাং শব্দ। ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। সমিতির পক্ষ থেকে কামারদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

মাসুদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়