ঢাকা     সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

ভালো নেই শিল্পী খোকন

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫১, ৯ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ১৬:৫৮, ৯ মার্চ ২০২৪
ভালো নেই শিল্পী খোকন

স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে সংগীতশিল্পী মনিরুল ইসলাম খোকন

পরিবার নিয়ে ভালো নেই গীতিকার, সুরকার ও সংগীতশিল্পী মনিরুল ইসলাম খোকন। এক সময় বেতার ও বিটিভি’র তালিকাভুক্ত এই শিল্পীর লেখা গানে সুর দিয়েছেন শেখ সাদী খান, এইচ এম রফিক, ওস্তাদ সুরুয মিয়াসহ অনেকেই। কণ্ঠ দিয়েছেন কনকচাঁপা, শাকিলা জাফর, সুজিত মোস্তফা, এম এ হামিদ, সাবিনা আক্তার রুনার মতো শিল্পীরা। পেয়েছেন বাংলাদেশ বেতার, শিল্পকলার জাতীয় সম্মাননাসহ বহু সনদ। নিজেও গাইতেন গান। আজ তার কণ্ঠে নেই সেই সুমধুর সুর। বিভিন্ন রোগে ভুগে এখন শয্যাশায়ী মানিকগঞ্জের এই শিল্পী। অর্থের অভাবে চিকিৎসা পর্যন্ত করাতে পারছেন না। 

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের খান বানিয়ারা গ্রামে মনিরুল ইসলাম খোকনের বাড়ি। সেখানেই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন তিনি। এখন তার জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত কাটে নিজ ঘরের শয়নকক্ষে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে অনেকদিন ধরে গানের টিউশনি করে সংসার চালাচ্ছিলেন মনিরুল ইসলাম খোকন। জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে বছরে পান সামান্য ভাতা। ৬ মাস আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন তিনি। সম্প্রতি উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির শিক্ষক পদ থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়। এখন উপার্জনের আর কোনো উৎস নেই তার। ২০১৯ সালে হৃদরোগ আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ বেতার বা টেলিভিশনের কোনো গানের জন্য ডাকা হয়নি মনিরুল ইসলাম খোকনকে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ৬ মাস আগে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হার্টের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সিআরটি (পেসমেকার) মেশিন স্থাপন করতে হবে। এতে ব্যয় হতে পারে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা। চিকিৎসার ব্যয়ের কথা শুনে তার পরিবারে নেমে এসেছে ঘোর অন্ধকার। 

মনিরুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘১ হাজার ২০০ গান লিখেছি। নিজের লেখা গানগুলো থেকে সুর করেছি ১২০টি। আমি বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পী। একসময় আমার নামডাক ছিল। কদর ও সম্মান ছিল। আজ পঙ্গু হয়ে ঘরে শুয়ে থাকি। কেউ খোঁজ নেয় না। অর্থাভাবে থমকে আছে জীবন।’

খোকনের স্ত্রী সুফিয়া আক্তার ঝর্ণা বলেন, ‘অনেক অনুষ্ঠানে দেখা যায় শিল্পীর ওপর টাকা ছিটাতে। অথচ টাকার অভাবে একজন শিল্পীকে বিনা চিকিৎসায় মরতে হচ্ছে।’ স্বামীর চিকিৎসার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করছেন। 

মানিকগঞ্জ জেলা কালচারাল অফিসার সেলিনা সাঈয়েদা সুলতানা আক্তার বলেন, ‘খোকন মা‌নিকগঞ্জ জেলার একজন গুণী শিল্পী। তিনি জেলা শিল্পকলা একা‌ডে‌মি থে‌কে কণ্ঠসংগীতে সম্মাননা পদকপ্রাপ্ত। জেলার সংস্কৃ‌তি বিকা‌শে তার অবদান‌কে বাঁচিয়ে রাখ‌তে হ‌লে তার চি‌কিৎসা প্রয়োজন।’

চন্দন/মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়