বৃষ্টিতে ডুবেছে বাগেরহাটের মাছের ঘের, ক্ষতির মুখে চাষিরা
বাগেরহাট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বাগেরহাটের মাছের ঘের
গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গত শুক্রবার রাত থেকে সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত হওয়া বৃষ্টিতে ডুবে গেছে জেলার কিছু এলাকার মাছের ঘের। মাছ ধরার মৌসুমে ঘের ডুবে যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন মৎস্য চাষিরা। মৎস্য খাতকে টিকিয়ে রাখতে দ্রুত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছে ঘের ব্যবসায়ীরা।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানাযায়, এবারের বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গলদা চিংড়ি উৎপাদনের অন্যতম এলাকা ফকিরহাট, চিতলমারী ও মোল্লাহাট উপজেলার চাষিরা। মোংলা, রামপাল ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার মৎস্য চাষিদেরও ক্ষতি হয়েছে। কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার সঠিক হিসাব জানাতে পারেনি তারা।
ফকিরহাট উপজেলার ফলতিতা এলাকার ঘের মালিক কাজী মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বৃষ্টির পানিতে ঘের ডুবে একাকার হয়ে গেছে। ঘেরের বাঁধের ওপর হাটু পানি। নেট, কচুরিপানা ও ঘাষ দিয়ে মাছ ভেসে যাওয়া ঠেকানোর চেষ্টা করেছিলাম। মাছ আটকাতে পারিনি। সব ভেসে গেছে।’
নুর মোহাম্মাদ নামের অপর মৎস্য চাষি বলেন, ‘এখন মাছ ধরার সময় আমাদের। হঠাৎ দুর্যোগ আমাদের পথে বসিয়ে দিল। আমার তিনটি ঘেরের প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। ঘেরের পাড়ের সবজি গাছও মরে যাবে পানি টানার সঙ্গে সঙ্গে।’
মোল্লাহাট উপজেলার কাহালপুর গ্রামের নাসির মিয়া বলেন, ‘আমার ৫০ বিঘার দুটি ঘেরসহ আশপাশের সবার ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। এলাকার মানুষের কোটি কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে।’
চিতলমারী উপজেলা সদরের মৎস্য চাষি মুমিনুল হক টুলু বলেন, ‘এই এলাকার মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস্য ঘেরর মাছ ও ঘের পাড়ের সবজি। ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করি আমরা। মাছ বের হয়ে যাওয়ায় আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। এই অঞ্চলের মৎস্য খাতকে টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’
এদিকে, টাকার অঙে মৎস্য চাষিদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে না পারলেও তাদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল। তিনি জানান, প্রায় প্রতিবছরই বন্যা ও বৃষ্টির পানিতে ঘেরের মাছ ভেসে যায়। শুকনো মৌসুমে পানির অভাবে মাছ মারা যায়। এই ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে বাঁচতে ঘেরের গভীরতা ও পাড়ের উচ্চতা বৃদ্ধি করতে হবে মৎস্য চাষিদের। বৃষ্টির পানি নেমে গেলে চুন প্রয়োগ করে ঘেরে পরিমাণমত খাবার দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
শহিদুল/মাসুদ