ঢাকা     বুধবার   ১৮ জুন ২০২৫ ||  আষাঢ় ৪ ১৪৩২

দিনাজপুরের গাছে গাছে রসালো লিচু

মোসলেম উদ্দিন, দিনাজপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫০, ১৭ মে ২০২৫   আপডেট: ১৬:২৯, ১৭ মে ২০২৫
দিনাজপুরের গাছে গাছে রসালো লিচু

গাছে গাছে ঝুলছে রসালো লিচু

আম-লিচুতে ভরপুর দিনাজপুর, লিচুর রাজ্য বলা হয় এই জেলাকে। জেলার আনাচে-কানাচে গাছে গাছে ঝুলছে সুস্বাদু ও রসালো বিভিন্ন জাতের লিচু। বাজারে উঠেছে আগাম জাতের সুমিষ্ট মাদ্রাজি জাতের লিচু। সম্প্রতি জিআই পণ্যের তালিকায় যুক্ত হয়েছে এ জেলার বেদানা জাতের লিচু। বেদানা লিচুকে লিচুর রাজা বলা হয়।

জেলার বিভিন্ন উপজেলার লিচু বাগান ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি গাছে আশানুরূপ লিচু ধরেছে। গাছে প্রতিটি লিচু পাক ধরেছে। বাগান মালিক এবং বাগান ব্যবসায়ীরা লিচু পাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বাজারে উঠেছে এগুলো আগাম জাতের মাদ্রাজি জাতের লিচু। তবে সপ্তাহের মধ্যে বেদানা লিচুসহ, হাড়িয়া বেদানা, বোম্বাই, চায়না-থ্রি, চায়না–টু, কাঁঠালি এবং মোজাফফরি জাতের লিচু বাজারে উঠবে।

জেলার বিভিন্ন হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাটে বিক্রি হচ্ছে মাদ্রাজি লিচু। এজাতের লিচু খেতে সুমিষ্ট এবং স্বাদে ভরপুর। ব্যবসায়ীরা এসব লিচু দুই থেকে আড়াই টাকা পিচ বিক্রি করছেন।

মোজাফফর হোসেন বলেন, “বাড়িতে আমার একটা মাদ্রাজি জাতের লিচু গাছ আছে, বয়স প্রায় ২০ বছর হবে। ফল আসা থেকে আজ পর্যন্ত প্রতি বছর পর্যাপ্ত লিচু ধরে। খেতে খুবি মিষ্টি এবং সুস্বাদু। আমি গাছের লিচু বিক্রি করি না। নিজেরা খাই এবং আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের দিয়ে থাকি। কয়েক দিন থেকে পরিবারের লোকজন গাছ থেকে লিচু পেড়ে খাওয়া শুরু করেছে।”

হিলি বাজারে লিচু ব্যবসায়ী ওয়াসিম আলী বলেন, “গত এক সপ্তাহ ধরে বাজারে আমরা মাদ্রাজি জাতের লিচু বিক্রি করছি। অন্যান্য ভাল মানের লিচু বাজারে আসতে এখনও কয়েকদিন সময় লাগবে। আমরা মাদ্রাজি ১০০ লিচু ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করছি।” 

বিরামপুরের লিচু বাগান মালিক সোহরাব হোসেন বলেন, “দুই বিঘা জমির উপর আমার একটা লিচু বাগান রয়েছে। প্রায় ১০০ টি মাদ্রাজি, বোম্বাই, চাইনা থ্রি জাতের লিচু গাছ আছে। প্রতিটি গাছে আশানুরূপ লিচু ধরেছে। কয়েকদিন থেকে মাদ্রাজি জাতের লিচু বাজারজাত করছি। তবে বাকি জাতের লিচু আর কয়েকদিনের মধ্যে পাড়া শুরু করব। এবারও আশা করছি গত বছরের চেয়ে বেশি টাকায় লিচু বিক্রি করব।” 

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, “চলতি মৌসুমে জেলায় এ বছর লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় লিচু ঝুলছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলন আগের বছরের তুলনায় অনেক ভাল হয়েছে। এবার ৫ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। এখান থেকে প্রায় ৩৫ হাজার ৪০০ মেট্রিকটন লিচু উৎপাদন হবে আশা করছি। যার বাজারমূল্য হবে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা হবে।”

তিনি আরও বলেন, “গত ৩০ এপ্রিল বেদানা জাতের লিচু আনুষ্ঠানিকভাবে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। যার কারণে চাষিদের মধ্যে নতুন উৎসাহের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই এখন বেদানা লিচু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।”

ঢাকা/মোসলেম/এস


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়