পুঠিয়ায় খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের সাড়ে ৪ মাস পর আ.লীগ নেতার মৃত্যু
রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অলিউজ্জামান ওরফে মন্টুকে পিটিয়ে পা ভেঙে দেওয়া হয়েছিল
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের সাড়ে চার মাস পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের এক নেতার মৃত্যু হয়েছে।
মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম অলিউজ্জামান ওরফে মন্টু (৬৮)। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুল ওয়াদুদ দারার চাচাতো ভাই।
অলিউজ্জামান পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (২৩ মে) বিকেলে তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভাতিজা আবু হানিফ সুজা।
মারা যাওয়া অলিউজ্জামানের বাড়ি পুঠিয়া উপজেলার বিড়ালদহ গ্রামে। তার বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ছিল। অলিউজ্জামান ‘পুঠিয়া-দুর্গাপুরের শিক্ষামন্ত্রী’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। তার চাচাতো ভাই আবদুল ওয়াদুদ দারা রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
আবু হানিফ জানান, শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে তার চাচা মারা যান। ঢাকা থেকে মরদেহ নিয়ে তারা বাড়ির দিকে রওনা হয়েছেন। এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের পর থেকে তার চাচা চিকিৎসাধীন ছিলেন। নির্যাতনের পর থেকেই তিনি গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। প্রথমে তাকে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি মারা গেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে যান অলিউজ্জামান। গত ২ জানুয়ারি রাতে তিনি বাড়িতে ফিরেছিলেন। গত ৪ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে তিনি পাশের মাইপাড়া বাজারে চা পান করতে যান। সেখান থেকে বিএনপির লোকজন তাকে বিড়ালদহ বাজারের পাশে নন্দনপুর নিয়ে যান। সেখানে সড়কের পাশে একটি বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে তাকে পেটানো হয়। পিটিয়ে আলিউজ্জামানের দুইটি পা ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত মিঠুন, আহসান ও সীমান্ত এই হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বলে লোকমুখে শুনেছেন বলে সে সময় জানিয়েছিলেন অলিউজ্জামানের ভাতিজা আবু হানিফ।
হামলার ব্যাপারে তখন মিঠুন বলেছিলেন, “যারা অলিউজ্জামানকে মারধরের অভিযোগ করেছেন তারা মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।” তিনি দাবি করেন আহসান, সীমান্ত ঘটনাস্থলে ছিল না।
অলিউজ্জামানের ভাতিজা আবু হানিফ শুক্রবার বিকেলে বলেন, “নির্যাতনের ঘটনায় পুঠিয়া থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ নেয়নি। পরে কোনো সুযোগ হলে আদালতে মামলা করা হবে।”
পুটিয়া থানার ওসি কবির হোসেন বলেন, “ওই ঘটনার পর পরিবারের কেউ মামলা করেননি।” অলিউজ্জামানের মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখনো আমি এ বিষয়ে কিছু শুনিনি। খোঁজ নিচ্ছি।”
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ