জামায়াতকে এ্যানি
স্বাভাবিক মৃত্যুকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার চেষ্টা করবেন না
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

ক্ষ্মীপুর শহরের নিজ বাসভবন বসির ভিলায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসিচব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি
বিএনপির যুগ্ম-মহাসিচব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, “হামলায় নয়, জামায়াত নেতা কাউছার আহমদের মৃত্যু হয়েছে স্বাভাবিকভাবে। তবে, এই ঘটনাকে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে রূপ দিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে জামায়াতের নেতাকর্মীরা।”
সোমবার (৯ জুন) লক্ষ্মীপুর শহরের নিজ বাসভবন বসির ভিলায় সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন: বিএনপির ১২ নেতাকর্মীর নামে মামলা, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
এ্যানি বলেন, “জামায়াতের নেতাকর্মীরা এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যদি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি করে, তাহলে তা ভালো হবে না।”
জামায়াত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই নেতা বলেন, “জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সৌহার্দ্যপূর্ণ সর্ম্পক রয়েছে। দীর্ঘ ১৭ বছর স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের জন্য বিএনপি-জামায়াত এক হয়ে আন্দোলন ও লড়াই করছে।” সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এ্যানি বলেন, “জামায়াত নেতার জানাজায় অংশ নিতে গিয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু ও যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যডভোকেট হাসিবুর রহমানের সঙ্গে জামায়াত নেতাকর্মীদের আচরণ কোনোভাবে কাম্য হতে পারে না। অতীতের মতো জামায়াত নেতাদের সঙ্গে বিএনপির সু-সম্পর্ক যেন থাকে, সেটা আমাদের কাম্য। স্বাভাবিক মৃত্যুকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার চেষ্টা করবেন না। তাহলে সুন্দর পরিবেশ আর থাকবে না।”
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়া, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান, নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া, মাইন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ, যুবদল নেতা রেজাউল করিম লিটন, সৈয়দ রশিদুল হাসান লিংকন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা অ্যাডভোকেট মহসিন কবির স্বপন, হারুনুর রশিদ এবং কৃষক দল নেতা মাহাবুবুল আলম মামুন ও বদরুল আলম শ্যামল।
লক্ষ্মীপুরে ‘পূর্ব শত্রুতার জেরে’ গত বৃহস্পতিবার (৫ জুন) হামলায় এক জামায়াত নেতার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বিএনপির ১২ নেতাকর্মীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন নিহত জামায়াত নেতা কাউছার আহমেদের স্ত্রী শিল্পী বেগম।
কাউছার আহমেদ রাজিবপুর এলাকার মৃত মমিন উল্যার ছেলে। তিনি বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন জামায়াতের ওলামা বিভাগের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ছিলেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে অভিযুক্তদের সঙ্গে নিহত কাউছারের পরিবারের বিরোধ চলছে। এরই জেরে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুরে রাজিবপুর এলাকায় বাদীর বাড়ির সামনে অভিযুক্তরা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে কাউসারের ভাই আফতাব হোসেন আরজুর ওপর হামলা করে আসামিরা। তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করা হয়।
ঘটনাটি দেখে কাউছার তার ভাইকে বাঁচাতে যান। তখন তার মাথার পেছনে লোহার রড দিয়ে কয়েকটি আঘাত করা হয়। মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে এলোপাতাড়ি পেটানো হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালের সামনে তাদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, এতে ভয়ে তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন। সন্ধ্যায় কাউছারের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ