পঞ্চগড়ে ৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
মোবাইলে আসক্তি, বিয়ে, পড়াশোনায় অনীহা: পাস করেনি কেউ
পঞ্চগড় প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
২০২৫ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। পঞ্চগড় জেলার ৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কোনো পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ফলের নথি এবং শিক্ষা অফিস থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
শতভাগ অকৃতকার্য এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ৪টি দাখিল মাদ্রাসা এবং একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে: পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী দাখিল মাদরাসা, মুসলিমপুর দাখিল মাদরাসা, কুড়ালীপাড়া নাসরুল উলুম সিদ্দীকিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসা, ডাবরভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় ও তেঁতুলিয়া উপজেলার তেঁতুলিয়া দাখিল মাদরাসা।
জানা গেছে, এবার এসএসসি এবং দাখিল পরীক্ষায় দুই উপজেলার শতভাগ অকৃতকার্য এই ৫ প্রতিষ্ঠানে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৬৪ জন। এর মধ্যে ময়দানদিঘী দাখিল মাদ্রাসায় ২৪ জন, মুসলিমপুর দাখিল মাদ্রাসায় ১০ জন, কুড়ালিপাড়া নাসরুল উলুম সিদ্দিকা বালিকা মাদ্রাসায় ৪ জন, ডাবরভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ জন এবং তেঁতুলিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ১৬ জন।
এদিকে, এমন ফলাফলে জেলার শিক্ষা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও পাঠদানে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের গাফিলতিকে দায়ী করছেন স্থানীয় অভিভাবকেরা। তবে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা বলছেন ভিন্ন কথা।
ময়দানদিঘী দাখিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেনডেন্ট মুসলিমুর রহমান বলেন, ‘‘শিক্ষার্থীরা নিয়মিত মাদরাসায় আসে নাই। তারা শুধু পরীক্ষার সময় আসে পরীক্ষা দিতে। আমি অভিভাবকদের বলেছি ছেলেমেয়েদের ঠিকমতো মাদরাসায় পাঠাতে। তারা ফরম ফিলাপও করতে চায় না, আমি বাড়ি বাড়ি গিয়ে জোর করে ফরম ফিলাপ করিয়েছি।’’
ডাবর ভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিকের বক্তব্য, ‘‘এবারের ব্যাচটা একটু খারাপ ছিল। এজন্য এই অবস্থা।’’
‘‘ছাত্ররা ঠিকমতো বাড়িতে বই পড়ে না। সবসময় মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকে আর সাইকেল নিয়ে ঘুরাঘুরি করে। পড়ালেখা ঠিকমত না করার কারণে সবাই ফেল করেছে,’’ বলেন মুসলিমপুর দাখিল মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট মকবুল হোসেন।
নাসরুল উলুম সিদ্দীকিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট নুরনবী বলেন, ‘‘আমাদের প্রতিষ্ঠানটি এখনও এমপিও ভুক্ত হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে আমরা কোনো রকম মাদরাসাটি ধরে আছি। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত আসে না। অনেকের বিয়ে হয়ে গেছে। বিভিন্ন কারণে ফেল করেছে।’’
এ প্রসঙ্গে বোদা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আইবুল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ওইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে দেখব কী কারণে শিক্ষার্থীরা ফেল করলো। আমরা এটি উদঘাটন করে উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসনসহ সকলকে বিষয়টি অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করব।’’
এ দিকে যেসব প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করে নাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) খায়রুল আনাম মো. আফতাবুর রহমান হেলালী।
ঢাকা/নাঈম//