ফেনীতে নদী ভাঙনের কবলে বিদ্যালয়ের ভবন
ফেনী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাইল
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার কাটাখালী নদীর ভাঙনে মাতুভূঞা ইউনিয়নের করিম উল্যাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচ কক্ষবিশিষ্ট ভবনটি বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। যে কোনো সময় পুরো ভবনটি নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, এই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা রহিম উল্যাহ চৌধুরী। তার দুই ছেলে তারেক মাহতাব রহিম ও জাবেদ সালাম রহিমের ব্যক্তিগত অর্থায়নে ২০১৬ সালে ভবনটি নির্মাণ করা হয়। এখানে সপ্তম শ্রেণির পাঠদান, নবম ও দশম শ্রেণির গ্রুপভিত্তিক পাঠদান, বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি এবং ছাত্রীদের নামাজের স্থান রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবনের নিচের মাটি সরে গেছে। ভবনের উত্তর পাশের অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি শহীদ মিনারের বিভিন্ন অংশেও ফাটল ধরেছে।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আদনান বিন আলম বলেন, “এই ভবনটিতে আমাদের পাঠদান চলে। পুরো ভবন যে কোনো মুহূর্তে নদীতে তলিয়ে যেতে পারে। আমরা আতঙ্কিত। বিদ্যালয়ের ভবনটি রক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।”
মিনাল দাস গুপ্ত নামে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, নদী ভাঙনের খবর শুনে সবার মধ্যে ভয় কাজ করছে। পুরো ভবন ধসে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সংশ্লিষ্টদের এখনই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, “কয়েক বছর আগে জেলা পরিষদ থেকে গার্ডওয়াল নির্মাণ করা হয়েছিল। এবারের বৃষ্টিতে পানির তীব্র স্রোতে সেটির আর অস্তিত্ব নেই।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম বাছির ভূঞা বলেন, “নদী ভাঙনের কারণে ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো সময় নদীগর্ভে ভবনটি বিলীন হতে পারে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।”
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মাঈন উদ্দিন আজাদ বলেন, “বর্তমানে ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নদীর তীরে ভাঙনরোধে টেকসই কাজ করা জরুরি। পানির স্রোতে যেকোনো সময় ভবন ধসে পড়বে। ইতোমধ্যে ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভবনটিতে পাঠদান করা সম্ভব নয়, তাই পুনঃনির্মাণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা কামনা করছি।”
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, “ভবনটি পরিদর্শন করেছি। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেখানে পাঠদান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ফুয়াদ হাসান জানান, নদী ভাঙনরোধে বিশ্ব ব্যাংকের একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে।
দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহীদুল ইসলাম বলেন, “বিদ্যালয় ভবন রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
ঢাকা/সাহাব/মাসুদ