বগুড়ার যমুনায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন
বগুড়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
হঠাৎ করেই মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) থেকে বগুড়ার যমুনায় হু হু করে পানি বাড়তে শুরু করে। ওইদিন উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ২৪ ঘণ্টায় নদীতে পানি বৃদ্ধি পায় ৯৯ সেন্টিমিটার। নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক নিচে থাকলেও পানির স্রোত বেশি থাকায় নদীর বেশ কয়েকটি পয়েন্টে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন।
বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুর থেকে বগুড়া ধুনট উপজেলার শহরাবাড়ি এলাকায় প্রায় ১ কিলোমিটার জুড়ে হঠাৎ করে তীব্র ভাঙন শুরু হয়। এ পর্যন্ত চারটি দোকান নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। আতঙ্কে বাড়িঘর সরিয়ে নিচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। এছাড়া ১০ পরিবার তাদের বাড়িঘর, আসবাবপত্র সরিয়ে নিয়েছে। দোকান পাট ও বাড়িঘরের সঙ্গে সঙ্গে প্রায় ৬০ বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকাল থেকে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে নির্ধারিত স্থান ছাড়া যত্রতত্র বালু উত্তোলন চলছে। যুবলীগ নেতা বেলাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট এ কাজে জড়িত। বালুমহাল বাদ দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের কারণেই প্রতি বছর ভাঙনের শিকার হতে হচ্ছে। এছাড়া নদী ভাঙন রোধে অস্থায়ী ব্যবস্থার বদলে স্থায়ী ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন তারা।
সাবেরা বেগম নামের সহরাবাড়ি গ্রামের এক নারী বলেন, “আমরা অস্থায়ী কোনো ব্যবস্থা চাই না। বালুর বস্তা দিয়ে এই ভাঙন ঠেকানো যাবে না।”
গোসাইবাড়ি এলাকার নজরুল ইসলাম বলেন, “কংক্রিটের ব্লক দিয়ে স্থায়ী বেড়িবাঁধ না দিলে শহরাবাড়ি গ্রামের ৫০০ পরিবার তাদের বাড়িঘর ও আবাদি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাবে।”
রফিকুল ইসলাম নামের স্থানীয় একজন কৃষক বলেন, “অনেক আগে থেকেই এখানে ভাঙন শুরু হয়েছে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ভাঙন তীব্র হলে এখানে এসে বালুর ব্যাগ দিচ্ছে। এটা দিয়ে কি হবে?”
জানতে চাইলে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, “ভাঙন প্রতিরোধে আমরা এখানে সাড়ে ৭ হাজার জিও ব্যাগ ও দেড় হাজার জিও-২ ব্যাগ ফেলতে শুরু করেছি। আশা করি এখানে আর ভাঙবে না।”
স্থায়ী বাঁধের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সারিয়াকান্দি, ধুনট, সোনাতলা এলাকায় যমুনা নদী ভাঙন ঠেকাতে আমরা প্রায় ৮ কিলোমিটারের জন্য একটি ডিপিপি প্রজেক্ট জমা দিয়েছি। এটা পাশ হলে এখানে সিসি ব্লক দিয়ে স্থায়ী বাঁধ দেওয়া সম্ভব হবে।”
ঢাকা/এনাম/মেহেদী