ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

চাঁদপুরের বাজারে মিলছে বরফ যুক্ত ইলিশ, ক্রেতাদের উদ্বেগ

চাঁদপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০২, ২৮ অক্টোবর ২০২৫   আপডেট: ০৯:২৫, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
চাঁদপুরের বাজারে মিলছে বরফ যুক্ত ইলিশ, ক্রেতাদের উদ্বেগ

ইলিশ মাছ

নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় আবারো ইলিশ মাছ বেচাকেনা শুরু হয়েছে চাঁদপুরের বাজারগুলোতে। বড়ষ্টেশন মাছ ঘাটসহ আশপাশের বাজারগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন সাইজের ইলিশ। ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন, বাজারে পাওয়া অধিকাংশ ইলিশ বরফ যুক্ত। তারা জানান, দেখে যে কেউ সহজেই বুঝছেন, দীর্ঘদিন মাছ ফ্রিজে সংরক্ষণ করা। ফলে বাজারে আনা এই মাছের গুণগত মান নিয়ে তাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। 

মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, দূরের বিভিন্ন স্থান থেকে বরফ মিশ্রিত মাছ আসছে। মাছ আনার সময় যাতে নষ্ট হয়ে না যায়, সে জন্য বরফে সংরক্ষণ করেন জেলেরা। যে মাছ বাজারে উঠছে, তা সবার সামনেই বিক্রি করা হচ্ছে।

আরো পড়ুন:

আরো পড়ুন: ইলিশে সয়লাব চাঁদপুরের বাজার, দাম আকাশচুম্বী

বড়ষ্টেশন মাছ ঘটে ইলিশ কিনতে আসা রফিক বলেন, ‍“২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ২৫ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে জেলেরা আবার নদীতে মাছ ধরতে শুরু করেছেন। গত ২৬ অক্টোবর থেকে বড়ষ্টেশন মাছ ঘাটে ছোট-বড় সব ধরনের ফিশিং বোটে জেলেরা ইলিশ নিয়ে আসতে শুরু করেন। অথচ, বাজারে দৃশ্যমান ইলিশগুলো দেখে সহজেই বুঝা যাচ্ছে, এগুলো দীর্ঘদিন ফ্রিজিং করা। তাহলে টাটকা ইলিশ পেলাম কই?”

অপর ক্রেতা বজলু মিয়া বলেন, “একেকটি ফিশিং বোটে বিভিন্ন সাইজের ৭০ থেকে ৮০ মণ ইলিশ নিয়ে বড়ষ্টেশন ঘাটে আসছেন জেলেরা। অধিকাংশ বোট ভোলা চর ফ্যাশন, মোহনপুরা এবং কিছু চেয়ারম্যান ঘাট থেকে আসছে। বাজারে যে মাছ দেখা যাচ্ছে, তার অধিকাংশ দেখলে মনে হচ্ছে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা।” 

ভোলার মোহনপুরার মাঝি জামাল ও সুমন জানান, দীর্ঘ ঘণ্টার নদী পথ পাড়ি দিয়ে তারা চাঁদপুর মাছ ঘাটে আসেন ন্যায্য দামে ইলিশ বিক্রির আশায়। বড়ষ্টেশন মাছ ঘাটে এখন প্রচুর ইলিশ মাছের আমদানির খবর রয়েছে। তাই এখানে মাছ নিয়ে এসেছেন তারা।

সরজমিনে দেখা যায়, ইলিশের দর কষাকষিতে ক্রেতাদের সঙ্গে ব্যস্ত সময় পার করছেন পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা। মৎস্য ব্যবসায়ীদের হাঁকডাকে মুখর হয়ে উঠেছে বড়ষ্টেশন মাছ ঘাট। স্থানীয়দের চাহিদা মেটানোর পর ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, সিলেটে সড়ক পথে পাঠানো হচ্ছে ইলিশ। 

এবার এই ঘাটে পাঙাস মাছের আমদানিও চোঁখে পড়ার মতো। বড় ওজনের পাঙাস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ১০ কেজি ওজনের কাতল মাছ ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চাঁদপুরের হোয়াইট গোল্ড খ্যাত এক কেজি ওজনের পদ্মা নদীর ইলিশ ২০০০ হতে ২২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর একটু ছোট সাইজের ইলিশ মাছের কেজি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি। 

ক্রেতাদের অভিযোগ সম্পর্কে চাঁদপুর জেলা মৎস্য বনিক সমবায় সমিতির সহ-সভাপতি বাদশা মাল জানান, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সবে তো মাছ আসতে শুরু করেছে। দূরের যেমন- হাতিয়া, সন্দ্বীপ বা অন্যান্য অঞ্চলের মাছগুলোই বরফ মিশ্রিত একটু বেশি। যে মাছ আছে তা সবার সামনেই।

ইলিশের দাম নিয়ে তিনি জানান, এখন দাম একটু বেশি মনে হলেও, আমদানি বাড়লে ইলিশের দাম কিছুটা কমার সম্ভাবনা আছে। ঘাটে বড় ইলিশ তেমন আমদানি হচ্ছে না।

চাঁদপুর মৎস্য সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেন, “বরফ দিয়ে আসা ইলিশ মাছগুলো মূলত সাগর উপকূলীয় এলাকার ইলিশ। দীর্ঘ সময় সেখানকার জেলেরা সাগরে থেকে ইলিশ মজুদ করে এরপর ঘাটে আনেন। তাই বরফ দিয়ে ইলিশ মাছ জমিয়ে আনতে হয়।”

মাছ ব্যবসায়ী মেজবা মাল বলেন, “এটা আসলে প্রকৃতির খেয়াল। নদীতে বড় সাইজের ইলিশ থাকলে কম বেশি জেলেদের জালে ধরা পড়বেই। হয়তো সামনে সিজন শুরু হলে পুরো মাছ ঘাট বড় ইলিশের দখলে থাকবে।”

ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়