ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

কুষ্টিয়ায় সার্ভেয়ারের কিলঘুষিতে গাড়িচালকের মৃত্যুর অভিযোগ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৭, ১৯ নভেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১৭:১৪, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
কুষ্টিয়ায় সার্ভেয়ারের কিলঘুষিতে গাড়িচালকের মৃত্যুর অভিযোগ

ফাইল ফটো

কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভায় বকেয়া বেতন নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে সার্ভেয়ারের কিলঘুষিতে শহিদুল ইসলাম (৫৭) নামে এক গাড়িচালকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পৌর ভবনে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত সার্ভেয়ার ফিরোজুল ইসলাম। এ ঘটনার পরে অভিযুক্তের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে পৌর ভবনের প্রধান ফটক আটকে বিক্ষোভ করেন তারা।

নিহত শহিদুলের মেয়ে সুবর্ণা খাতুন বলেন, ‘‘পৌরসভায় বড় কর্মচারীদের বেতন হয়। আমার বাবা ছোট কর্মচারী। তার বেতন হচ্ছিল না। সকালে বেতন চাইতে গেলে পৌরসভার সার্ভেয়ার মো. ফিরোজুল ইসলাম বাবাকে ব্যাপক কিলঘুষি, লাথি মারে হত্যা করেন। পরে লাশ পৌরসভার ১০১ নম্বর কক্ষে আটকে রেখেছিলেন। আমি থানায় মামলা করব। আসামিদের ফাঁসি চাই।’’

পুলিশ, পৌরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুমারখালী পৌরসভায় প্রায় ৫৭ কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। তারা প্রায় ৪২ মাসের ১০ কোটি টাকা বেতন পাবেন পৌর কর্তৃপক্ষের নিকট। সকালে বকেয়া বেতনের দাবিতে গাড়িচালক শহিদুল ইসলাম বিভিন্ন কক্ষের দরজা বন্ধ করে দেন। সেই সময় ১১৫ নম্বর কক্ষের সার্ভেয়ার ফিরোজুলের কক্ষটি বন্ধ করতে যান। তখন ফিরোজুলের সঙ্গে শহিদুলের তর্কাতর্কির একপর্যায়ে কিলঘুষি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে পৌরসভায় কর্মরত অন্যান্যরা ফিরোজুলকে ১১৫ নম্বর এবং শহিদুলকে ১০১ নম্বর কক্ষে আটকে রাখেন। কিছুক্ষণ পরে ১০১ নম্বর কক্ষে গিয়ে পৌরসভায় কর্মকর্তারা দেখেন শহিদুল মেঝেতে পড়ে আছেন। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পৌরসভার বাজার পরিদর্শক নুর ইসলাম বলেন, ‘‘ফিরোজুল কার্যালয়ে কাজ করছিলেন। তখন শহিদুল বেতন না পেয়ে দরজা বন্ধ করতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় ফিরোজের সঙ্গে তর্কাতর্কি ও ধস্তাধস্তি হয়। শহিদুল হার্টের রোগী ছিলেন। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে যায়। তবে কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি।’’

নিহত শহিদুলের ভাগ্নি রূপালী খাতুন বলেন, ‘‘পৌর ভবনের পেছনে আমার বাড়ি। মারামারির খবর পেয়ে গিয়ে দেখি, ১০১ নম্বর কক্ষে তালাবন্ধ মামা। খুলে দেখি মুখে আঘাতের চিহ্ন ও রক্ত। মামাকে পৌরসভার লোকজন বেতনের জন্য হত্যা করেছে। সঠিক বিচার চাই।’’

এদিকে, ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন অভিযুক্ত পৌরসভার সার্ভেয়ার ফিরোজুল ইসলাম। তার মোবাইলফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

কুমারখালী থানার ওসি খন্দকার জিয়াউর রহমান বলেন, ‘‘প্রকৃত ঘটনা এখনো জানা যায়নি। তবে, বকেয়া বেতন নিয়েই ঘটনার সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে।’’

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিজয় কুমার জোয়ারদার বলেন, ‘‘প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বকেয়া বেতন নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে অপ্রীতিকর এই ঘটনা ঘটেছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।’’

ঢাকা/কাঞ্চন/রাজীব

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়