ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

নতুন বাজেটের আকার হতে পারে ৬ লাখ ১৫১১ কোটি টাকা

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪৮, ২৬ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ১৫:৩৮, ৩ জুন ২০২১
নতুন বাজেটের আকার হতে পারে ৬ লাখ ১৫১১ কোটি টাকা

করোনাভাইরাস মোকাবিলাকে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে আগামী ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাজেট প্রণয়নের প্রাথমিক কাজ প্রায় চূড়ান্ত। আসন্ন বাজেটের আকার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৬ লাখ ১ হাজার ৫১১ কোটি টাকা। চলতি অর্থ বছরের চেয়ে আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকার ৩২ লাখ ১ হাজার ৫১১ কোটি টাকা বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা।

রোববার (২৫ এপ্রিল) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বাজেট ব্যবস্থাপনা ও সম্পদ কমিটির এক ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় কমিটির সদস্য এবং বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন বলে অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

সভায় অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার অর্থনীতির সার্বিক অবস্থাসহ চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়ন ও নতুন অর্থবছরের বাজেটের বিভিন্ন দিকগুলো তুলে ধরেন।

জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ১২ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকা। জিডিপি অংশ হিসেবে ঘাটতি ৬ দশমিক ১ শতাংশ, চলতি বছর বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে জিডিপির আকার ধরা হয়েছে ৩৪ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনার কারণে চলতি বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দুই শতাংশেরও সামান্য কমানো হয়েছে। গত বছরের জুন মাসে যখন চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হয় তখন জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর ভাবা হচ্ছে এই প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হবে না। তাই রোববারের সভায় প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ১ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যা বাজেটে প্রক্ষেপিত জিডিপি প্রবৃদ্ধির চেয়ে ২ দশমিক ১ শতাংশ কম। আগামী অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ।

সভায় সিনিয়র সচিব বলেন, ‘আগামী অর্থবছরে বাজেটের আকার ছয় লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এই বাজেটের মধ্যে মোট রাজস্ব প্রাপ্তি ধরা হয়েছে তিন লাখ ৮৯ হাজার ৭৮ কোটি টাকা। যা জিডিপির ১১ দশমিক ২ শতাংশ। মোট রাজস্বের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকেই আয় ধরা হয়েছে তিন লাখ ৩০ হাজার ৭৮ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৯ দশমিক ৫ শতাংশ।

আগামী অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ধরা হয়েছে দুই লাখ ২৫ হাজার ১২৪ কোটি টাকা। মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

সভায় উপস্থিত অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত খাদ্য বাজেট এবং মোট কত টাকা ঋণ নিতে হবে তা চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি চূড়ান্ত করতে আরও কয়েক দিন লাগবে।  মোট ঋণের পরিমাণ নির্ধারণ করা হলে বাজেটের আকার ৬ লাখ ১ হাজার ৫১১ কোটি টাকার মতো হতে পারে। এই বাজেটের দুই লাখ কোটি টাকার বেশি যে ঘাটতি ধরা হয়েছে তার বেশির ভাগ অর্থই নেওয়া হবে ব্যাংকিং খাত থেকে। এ খাত থেকে প্রায় লাখ কোটি টাকার ঋণ নেওয়ার টার্গেট করা হয়েছে। কারণ এখন ব্যাংকিং খাতে তারল্য উদ্বৃত্ত রয়েছে। আর ব্যাংকের ঋণের সুদও কম। এর পাশাপাশি সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়া হবে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। বাকি অর্থ বিদেশি ঋণ ও অনুদান হিসেবে পাওয়া যাবে।

সভায় রাজস্ব আয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এ সময় এনবিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, করোনার কারণে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যাহত হচ্ছে। সে কারণে রাজস্ব আদায়ও বাধাগ্রস্থ হচ্ছে । চলতি বছরও রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি এক লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি হবে। এমন অবস্থায় সভায় চলতি বছরে রাজস্ব আদায়ে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল আগামী অর্থবছরের জন্যও একই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়।

নতুন অর্থ বছরের বাজেটে কৃষি, স্বাস্থ্য এবং সামাজিক বেষ্টনির আওতায় বিভিন্ন কর্মসূচির পাশাপাশি দেশীয় শিল্পের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

ঢাকা/হাসনাত/ইভা 

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়