৪ দফা দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
ইবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
চার দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সপ্তাহব্যাপী রেজিস্ট্যান্স উইক পালিত হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে বিক্ষোভ ও ছাত্র সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বুধবার (১৪ আগস্ট) পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘আমার ভাই কবরে, হাসিনা কেন বাহিরে’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই’, ‘হৈ হৈ রৈ রৈ, খুনি হাসিনা গেলি কই’, ‘হৈ হৈ রৈ রৈ, কাউয়া কাদের গেলি কই’, ‘খুনিদের ঠিকানা, এই দেশেতে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
মিছিল শেষে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে বক্তারা বলেন, সারা বাংলাদেশে একটা গোষ্ঠী আমাদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করতে উঠেপড়ে লেগেছে। আমরা একক ঐক্যবদ্ধ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমাদের মাঝে যে বিভেদ সৃষ্টি করতে আসবে, তার কালো হাত আমরা ভেঙে দেব। সব ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সবাই মিলে দেশকে একটি সমৃদ্ধশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো, যেখানে কোনো দুর্নীতি, বৈষম্য, সেশনজট থাকবে না। যদি কেও ষড়যন্ত্রের সাহসও করে, তার সাহস আমরা কেড়ে নেব।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি সমন্বয়ক এসএম সুইট বলেন, ২৪ এর পরাজিত শক্তি গুচ্ছভাবে দেশে আবার অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইবিতে এসব কুচক্রী মহল কোনোভাবেই ঠাঁই পাবে না। ২৪ এর ছাত্র জনতা এই কুচক্রী মহলের নাম পরিচয় মুছে দিতে বদ্ধ পরিকর। ইতোমধ্যেই ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ইবির কোনো শিক্ষক-কর্মকর্তা যদি ১৫ আগস্টে কোনো অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করেন, তাহলে ছাত্রসমাজ তাদের দাঁত ভাঙা জবাব দিবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের লড়াই এখনো শেষ হয়নি। দীর্ঘ প্রায় ৪০ দিনের লড়াই সংগ্রাম করে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, তা কোনোভাবেই ভেস্তে দেওয়া যাবে না। আমরা আমাদের এ সংগ্রাম দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে যাব।
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলো হলো-
১. শেখ হাসিনা এবং তার দল ও সরকার যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, সেগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।
২. সংখ্যালঘুদের ‘পরিকল্পিত হত্যা-ডাকাতি-লুণ্ঠনের’ মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টায় অংশগ্রহণ করা ব্যক্তিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা ও সংখ্যালঘুদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে।
৩. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে হামলা-মামলা-হত্যাযজ্ঞের বৈধতা দিয়েছেন, তাদের দ্রুততম সময়ে অপসারণ ও নতুন সরকারে তাদের নিয়োগ বাতিল করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৪. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা এতদিন বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, তাদের দ্রুততম সময়ে সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে হবে।
/নুর/মেহেদী/