জুলাই সহযোদ্ধাদের ওপর ‘হুমকি’ এলে শিবির বসে থাকবে না: জাহিদ
জবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, “ছাত্রশিবিরের সঙ্গে আদর্শিক ভিন্নতা থাকতে পারে। কিন্তু জুলাই বিপ্লবের সহযোদ্ধাদের ওপর কোনো হুমকি বা হামলা হলে ছাত্রশিবির চুপ করে বসে থাকবে না। গতকালকের (বুধবার) ঘটনাই প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশে এখনো ফ্যাসিবাদ নির্মূল হয়নি।”
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের মাঠে শাখা ছাত্রশিবির আয়োজিত নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
শিবির সভাপতি বলেন, “আমরা জাতিগতভাবে এখনো আমাদের আদর্শ ঠিক করতে পারিনি। আমরা যখন সংবিধানে গণতন্ত্রের কথা বলি, তখনই আবার সমাজতন্ত্রের কথাও বলি, যা একে অপরের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।”
রাজনীতিবিদদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “বুড়িগঙ্গা সংস্কারে তাদের কোনো চিন্তা নেই। তারা চিন্তা করেন কীভাবে নদীর পাশের দোকান দখল করে চাঁদাবাজি করবেন। এটাই আমাদের দেশের রাজনীতির বাস্তব চিত্র।”
নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে জাহিদুল ইসলাম বলেন, “মানবজাতির ইতিহাসে যত অর্জন আছে, তার কোনো শেষ নেই। প্রতিটি অর্জন নতুন কোনো অর্জনের দ্বার উন্মোচন করে। তোমাদের সবাইকে আমাদের এই প্রিয় ক্যাম্পাসে স্বাগত।”
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, “আমরা রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন চাই। ছাত্রশিবির আজ যে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে, আমি অন্যান্য ছাত্র সংগঠনকেও এমন ইতিবাচক কার্যক্রম আয়োজনের আহ্বান জানাই।”
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব বলেন, “জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে এ দেশের তরুণরা যে সাহসী ভূমিকা রেখেছে, তা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তরুণদের পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
তিনি আরো বলেন, “একটি ছাত্র সংগঠনের অনুষ্ঠানে অন্য সংগঠনের সদস্যরা অংশ নেবে—এমন সহনশীল ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। আমাদের পেশিশক্তির রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।”
অনুষ্ঠানে নবীন শিক্ষার্থীদের হাতে একটি করে কোরআন, কলম, কলমদানি ও পাঁচটি ইসলামিক বইসহ উপহারসামগ্রী তুলে দেয় ছাত্রশিবির।
শিবিরে অনুষ্ঠানে এসে অনুভূতি প্রকাশ করে বাংলা বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিবিরের ভালো কাজের কথা শুনেছি। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে নিজের চোখে দেখতে পারছি। আশা করি, এমন আয়োজন ভবিষ্যতেও চলবে।”
নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ সেশনের শিক্ষার্থী জয়নব হাসান বলেন, “এমন সুন্দর অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ছাত্রশিবিরকে ধন্যবাদ। আমি ব্যক্তিগতভাবে অরাজনৈতিক, তবে রাজনীতি সচেতন। আজকের মঞ্চে মির্জা গালিব ভাইয়ের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমি গর্বিত।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী