বাকৃবি শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কাউন্সিল দাবি, ধৈর্যের পরামর্শ উপাচার্যের
বাকৃবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) কম্বাইন্ড (বিএসসি ইন ভেটেরিনারি সায়েন্স অ্যান্ড অ্যানিম্যাল হাজব্যান্ড্রি) ডিগ্রির দাবিতে প্রায় ১ মাস ধরে আন্দোলন চলমান রয়েছে।
আগামীকাল বুধবার (২৭ আগস্ট) জরুরি অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক দাবি ও পশুপালন অনুষদের শিক্ষকদের কর্তৃক আন্দোলনকারীদের স্বৈরাচার ও বিপথগামী বলার প্রতিবাদে দুই অনুষদে তালা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ভেটেরিনারি ও অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এ সময় আন্দোলনকারীরা প্রশাসনকে হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেন, আগামীকাল যদি অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক না দেওয়া হয়, তাহলে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেওয়া হবে।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের ধৈর্য্য ধারণ, সুস্থ ও সুশৃঙ্খলভাবে আগানোর পরামর্শ দিয়েছেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে ফজলুল হক ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, “অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক দিতে হলে নোটিশই দেওয়া লাগে কমপক্ষে ৭ দিন আগে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আমরা পাইনি এখনো। তাই আমরা অপেক্ষা করছি রিপোর্টের জন্য। অবশ্যই তোমাদের দাবির প্রতি আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। তোমাদের দাবি যেন আমরা আগাই দিতে পারি, সে চেষ্টা করছি।”
তিনি আরো বলেন, “আমাদের কমিটি কাজ করছে। কমিটির সদস্যরা রাত-দিন অনেক পরিশ্রম করছেন। ছাত্রদের সেটা বোঝার জন্য আমি বলেছি, তোমরা ধৈর্যের সঙ্গে অপেক্ষা কর। কমিটির সদস্যরা তাদের ক্লাস-পরীক্ষার পাশাপাশি ৬৪ বছরের সমস্যা সমাধানের জন্য নিরলসভাবে কাজ করছে।”
উপাচার্য বলেন, “কমিটি পরামর্শ দিলে আমরা দেখব কি করা যায়। সবার সঙ্গে বসে আমরা তাদের সুপারিশগুলোকে আমলে নিয়ে যা করা যায়, অবশ্যই সেটা করব। এটি প্রক্রিয়াধীন কাজ, খুব বেশি তাড়াহুড়ো করলে একটা জিনিস সুন্দর হয় না।”
অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে, ফ্যাসিস্ট ফ্যাসিস্ট’, ‘কে বলেছে কে বলেছে, শিক্ষক শিক্ষক’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম স্বৈরাচার’, ‘উই ওয়ান্ট কম্বাইন্ড, কম্বাইন্ড কম্বাইন্ড’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
আন্দোলনে অংশগ্রহনকারী ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “এই আন্দোলন শুধু গত ৩০ দিন ধরে চলছে না, কয়েক বছর আগেই শুরু হয়েছিল। প্রথমবার আমরা একাই এই ডিগ্রির জন্য আন্দোলনে নেমেছিলাম। এখন দুই অনুষদের শিক্ষার্থীরাই সমর্থন দিচ্ছে। অনলাইনে ভোটের পর সুপারিশ কমিটির অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকের কথা ছিল, কিন্তু তারা তা করেনি। এজন্য গতকাল আমরা ভেটেরিনারি অনুষদে তালা দিয়েছি। যতদিন না পর্যন্ত অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল হবে, ততদিন এটি বন্ধ থাকবে। বেশি তালবাহানা করলে পুরো অনুষদ অচল করে দেওয়া হবে।”
পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ বলেন, “শিক্ষকরা আমাদের ফ্যাসিস্ট ও বিপথগামী ট্যাগ দিচ্ছেন। অথচ আমরা কোনো দলবাজ না, সাধারণ শিক্ষার্থী। পেশাগত বৈষম্য দূর করার জন্য কম্বাইন্ড ডিগ্রি দিতেই হবে।”
কম্বাইন্ড ডিগ্রির সমাধানের লক্ষ্যে গত ১২ আগস্ট একটি সুপারিশ কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি ধাপে ধাপে পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে। পরে শিক্ষার্থীদের মতামত নিতে তাদের নিজস্ব ইআরপি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অনলাইনে ভোটগ্রহণের আয়োজন করে।
ভোটগ্রহণ শেষে দেখা যায়, পশুপালন অনুষদের ৯০ শতাংশ এবং ভেটেরিনারি অনুষদের ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী কম্বাইন্ড ডিগ্রির পক্ষে মত দেন।
ঢাকা/লিখন/মেহেদী