ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

রাকসু: সংগ্রামী শাহরিয়ার মোর্শেদ কাজ করতে চান সেশনজট নিয়ে

ফাহমিদুর রহমান ফাহিম, রাবি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩০, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫  
রাকসু: সংগ্রামী শাহরিয়ার মোর্শেদ কাজ করতে চান সেশনজট নিয়ে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের ব্যতিক্রমী প্রার্থী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার মোর্শেদ খান। ৫১ বছর বয়সেও থেমে থাকেননি তিনি, উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন লেখাপড়া। এবারের রাকসু নির্বাচনে তিনি লড়ছেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে।

রাইজিংবিডির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে আসন্ন রাকসু নির্বাচন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান সংকট, নিজের অবস্থান ও ব্যক্তিগত লক্ষ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি।

আরো পড়ুন:

রাইজিংবিডি: আপনি ৫১ বছর বয়সে রাবির শিক্ষার্থী—এটা কীভাবে সম্ভব হলো?

শাহরিয়ার: আমি ২০০২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগে পড়াশোনা শুরু করেছিলাম। কিন্তু পারিবারিক কারণে শেষ বর্ষে গিয়ে আমাকে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হয়। এরপর প্রায় ১৮ বছর বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি করেছি, চট্টগ্রাম ইপিজেডসহ নানা প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি।

একসময় মনে হলো—স্বপ্ন তো থেমে থাকতে পারে না। তাই নতুন করে পড়াশোনা শুরু করি। ২০১৭ সালে এসএসসি, ২০২০ সালে এইচএসসি পাস করি। তারপর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হই।

রাইজিংবিডি: অনেকেই ভাবেন, এত বয়সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসা কঠিন। আপনার অভিজ্ঞতা কেমন?

শাহরিয়ার: সত্যি বলতে, সহজ ছিল না। তবে মানসিক শক্তি সবচেয়ে বড় বিষয়। আমি মনে করি, স্বপ্ন দেখার কোনো বয়স নেই। সহপাঠীরা আমাকে শুধু বন্ধু হিসেবেই নয়, অনুপ্রেরণা হিসেবেও দেখেন। এটা আমার জন্য বড় পাওয়া।

রাইজিংবিডি: এবার রাকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন নিলেন?

শাহরিয়ার: আমার ব্যাক্তিগত পরিচয় ও অভিজ্ঞতার জায়গা থেকে মনোনয়ন নিয়েছি। ক্যাম্পাসের মোটামুটি সবাই আমাকে চেনে। সবার পরিচিত মুখ আমি। আমার ছোটভাই, বড়ভাইসহ হলের অনেকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। তাদের কথাগুলো আমাকে অনেক অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।

রাইজিংবিডি: পরিবারকে কি এই প্রার্থিতার কথা জানিয়েছেন?

শাহরিয়ার: না, এখনো জানাইনি। তবে সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে আজ হোক বা কাল, জেনে যাবে।

রাইজিংবিডি: আপনার চোখে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমস্যা গুলো কি কি?

শাহরিয়ার: আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমান যারা অধ্যয়নরত আছেন, তারা বেশিরভাগই গরিব পরিবার থেকে উঠে আসা। এজন্য তারা চায়, সঠিক সময়ে পড়াশোনা শেষ করে একটা চাকরি করতে। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজটের কারণে তো সেটা হয়ে ওঠে না। আমাদের এখানে ১৮ মাসে বছর হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা অনেক পিছিয়ে পড়ে। এছাড়া যদি ডাইনিং এর কথা বলি বিশ্ববিদ্যালয় খাবারের মান দিনদিন অবনতি হচ্ছে। অথচ খাবারের দাম ঊর্ধ্ব গতিতে। এছাড়া আমাদের শিক্ষার্থীরা মেডিকেল থাকার পরও সেখান থেকে কোনো সুবিধা পায় না।

রাইজিংবিডি: নির্বাচন নিয়ে কতটা আশাবাদী?

শাহরিয়ার: নির্বাচনের তফসিল বারবার পরিবর্তন করার কারণে সবার মধ্যে একটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল যে, নির্বাচন হবে কি না। তবে শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন বিতরণ শেষ হয়েছে। ইনশাআল্লাহ, নির্বাচন হবে বলে আমি আশাবাদী। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বড় ভাই, ছোট ভাই সবাই আমাকে চেনে, আশা করি তারা আমাকে নির্বাচিত করবে।

রাইজিংবিডি: নির্বাচিত হলে কি কি কাজ করবেন?

শাহরিয়ার: আমি যদি নির্বাচিত হই, সবার প্রথমে আমি সেশনজট নিয়ে কাজ করব। এছাড়া আমাদের ডাইনিংয়ের খাবারের মান উন্নয়নের চেষ্টা করব। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলের অবস্থা বেহাল। আমি চেষ্টা করব সর্বোচ্চটা দিয়ে এগুলো দ্রুত সমাধান করার। শিক্ষার্থীদের কোন কোন জায়গায় সমস্যা, সেটা ‍উদঘাটন করে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করব।

ঢাকা/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়