ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

‘আপনারা ব্যক্তির বিচার চাচ্ছেন, আমরা অপরাধের বিচার করতে চাচ্ছি’

রাবি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫৪, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫   আপডেট: ২২:১৬, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
‘আপনারা ব্যক্তির বিচার চাচ্ছেন, আমরা অপরাধের বিচার করতে চাচ্ছি’

আ্যটার্নী জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, “দাবি এসেছে জুলাই আগস্টের গুম খুনের বিচার করতে হবে। অমুকের বিচার করতে হবে, তমুকের বিচার করতে হবে। শেখ হাসিনার বিচার করতে হবে, সালমানের বিচার করতে হবে। আপনাদের এ দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে একটু ভিন্নমত পোষণ করছি ভিন্ন জায়গায়। আমাদের কাছে ব্যক্তি নগণ্য, মূখ্য হলো কি অপরাধ করেছে। আপনারা ব্যক্তির বিচার চাচ্ছেন আমরা অপরাধের বিচার করতে চাচ্ছি।”

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সিনেট ভবনে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও সাংবিধানিক পুনর্গঠন তরুণদের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

আরো পড়ুন:

তিনি বলেন, “আমি আপনাদের বলছি, আমি যে পরিস্থিতিতে থাকি, যেভাবে থাকি- জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও আপনাদের জুলাই বিপ্লবের চেতনার সঙ্গে আমি এক কাতারে থাকব। আপনাদের স্বপ্নের সারথী হয়ে হাতে হাত মিলিয়ে, কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে এগিয়ে যাব।” 

তিনি আরো বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ১৫ শতাধিক মানুষকে অবিচারে গুলি করে হত্যা করেছে, ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। গত ১৭ বছরে ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নির্বিচারে শহীদ করা হয়েছে। ৬০ লক্ষ মানুষ বিনা দোষে রাজনৈতিক মামলার স্বীকার হয়েছে। এসব অপরাধের বিচার করলে যারা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত, তারা অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হবেন।”

আসাদুজ্জামান বলেন, “বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায়, সাংবিধানিক আইন প্রতিষ্ঠায় ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’- এই তত্ত্ব প্রতিষ্ঠায় যত বাঁধা আসুক, যত ব্যারিকেড সবকিছু উপেক্ষা করে বাংলাদেশের জনগণ আসুক জুলাই বিপ্লবের শহীদদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করার জন্য একটি সাংবিধানিক কাঠামো গঠন করবে।”

আসাদুজ্জামান আরো বলেন, “আমরা এমন একটি সংবিধানের স্বপ্ন দেখি, যে সংবিধানে আর কোনো মা-বোনকে স্বামী সন্তানের জন্য রাতে অপেক্ষা করতে না হয়। কোনো মা-বোনকে যেন তাহাজ্জুদে বসে কাঁদতে না হয়। আর কোনো কার্টুনিস্টকে যেন জেলে মরতে না হয়। আমরা সাংবিধানিকভাবে এমন একটি জায়গায় যেতে চাই, যেখানে সব শহীদদের রক্তের মুল্য দেওয়া হবে। এই স্বৈরাচারী সরকার পতনের মাধ্যমে আমরা একটি স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছি। আমরা সেই রাষ্ট্রকে একটি সুসংগঠিত কাঠামোর মাধ্যমে গড়ে তুলব।”

অনুষ্ঠানের সভাপতি রাবি উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “রাষ্ট্রের সব সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় হলো সুশিক্ষা। শ্রেষ্ঠতম সংবিধান অনেক খারাপ কাজ আটকে দিতে পারে, কিন্তু একটি সুন্দর রাষ্ট্র গঠন করতে পারে না। ২৪ এর জুলাই আগস্ট আমাদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করেছে। নতুন চিন্তাকে ধারণ করতে হলে আমাদের পুরাতন ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।”

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে গিয়ে দেখলাম, এখানে সবাই পুরাতন ধারাকেই নিজের বলতে চায়। সবাই চায় আগে ওরা করেছে, আমরাও করব। দেশের প্রতি ভালোবাসার চেতনাকে ধারণ করতে দেশাত্মবোধক গান শোনা লাগে না। আজকের এ অনুষ্ঠানে হার-জিত হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আমাদের সবাইকে দেশকে ভালোবেসে নিজস্বতা প্রকাশের বদলে কাজ দেখাতে হবে।”

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ডিন একরামুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য শিক্ষা ড. ফরিদ উদ্দীন প্রমুখ।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়