ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মার্কেট মেকার: ৪ প্রতিষ্ঠানের আবেদন বিবেচনায় নেওয়া হয়নি

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫২, ৩১ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ২১:২২, ৩১ জানুয়ারি ২০২১
মার্কেট মেকার: ৪ প্রতিষ্ঠানের আবেদন বিবেচনায় নেওয়া হয়নি

শেয়ারবাজারে মার্কেট মেকার (বাজার সৃষ্টিকারী) হতে চাওয়া ৪ প্রতিষ্ঠানের আবেদন বিবেচনায় নেয়নি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি)। শর্ত পরিপালন না করে আবেদন জমা দেওয়ায় বিবেচনায় নেওয়া হয়নি বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

মার্কেট মেকার হতে আগ্রহী ৪ প্রতিষ্ঠান হলো- ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজ, কবির সিকিউরিটজ ও বি রিচ।

জানা গেছে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বাজার সৃষ্টিকারী) বিধিমালা অনুযায়ী, মার্কেট মেকার হওয়ার জন্য স্টক এক্সচেঞ্জের অনুমোদন সাপেক্ষে বিএসইসির কাছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান আবেদন করবে। একইসঙ্গে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পরিশোধিত মূলধন কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা থাকতে হবে।

তবে আবেদন করা ৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যভুক্ত আইসিবি ও ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজ স্টক এক্সচেঞ্জের অনুমোদন ছাড়াই বিএসইসির কাছে আবেদন জমা দিয়েছে।  এছাড়া কবির সিকিউরিটজ ও বি রিচ তাদের পরিশোধিত মূলধন কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা না থাকা সত্ত্বেও কমিশনের কাছে আবেদন করেছে।

জানা গেছে, আইসিবি ৮০৫ কোটি টাকা, ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজ ১৮৯ কোটি টাকা, কবির সিকিউরিটজ ২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ও বি রিচ ৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধন নিয়ে কমিশনে আবেদন করেছে।

মার্কেট মেকার হওয়ার শর্ত পরিপালন না করে আবেদন করা আইসিবি ও ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজকে চিঠি দিয়েছে বিএসইসি।  চিঠিতে মার্কেট মেকারের জন্য তারা যথাযথভাবে আবেদন করেনি বলে জানানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠান দুটিকে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (মার্কেট মেকার) বিধিমালা অনুযায়ী স্টক এক্সচেঞ্জের অনুমোদন সাপেক্ষে মার্কেট মেকারের জন্য আবেদন করতে পরামর্শ দিয়েছে কমিশন।

এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠান কবির সিকিউরিটিজ ও বি রিচ স্টক এক্সচেঞ্জের অনুমোদ সাপেক্ষে আবেদন করলেও তাদের পরিশোধিত মূলধনের কিছুটা ঘাটতি ছিল।  সেজন্য প্রতিষ্ঠান দুটিকে শর্ত পরিপালনের জন্য পরামর্শ দিয়েছে বিএসইসি।  চিঠিতে প্রতিষ্ঠানের পরিশোধিত মূলধন ১০ কোটি টাকায় উন্নীত করে মার্কেট মেকারের জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে।

মার্কেট মেকার গড়ে না ওঠার কারণ হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মূলধন স্বল্পতা, ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমাবদ্ধতা এবং বাজারে আর্থিক জ্ঞানভিত্তিক বিনিয়োগ প্রবণতা না থাকাকে দায়ী করছেন বাজার সংশ্লিষ্ট। তারা বলছেন, মার্কেট মেকার হওয়ার জন্য বিপুল অর্থ থাকা আবশ্যক।

এ বিষয়ে আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে মার্কেট মেকারের জন্য আবেদন করা হয়নি।  আমরা শিগগিরই আবেদন করব।

ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজের ইনচার্জ আফতাব উদ্দিন বিশ্বস রাইজিংবিডিকে বলেন, মার্কেট মেকারের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন সাপেক্ষে পুনরায় আবেদন করা হবে।

কবির সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলমগীর কবির রাইজিংবিডিকে বলেন, মার্কেট মেকারের জন্য স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে আমরা আবেদন করেছিলাম। তবে ওই সময়ে অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী আমাদের পরিশোধিত মূলধন ১০ কোটি টাকার কম ছিল।  পরবর্তীতে বোনাস শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে আমদের পরিশোধিত  মূলধন ১০ কোটি  টাকা করা হয়।  আমরা পুনরায় আবেদনের বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো চিঠি পাইনি।

এদিকে, বি রিচের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী রফিকুল হাসানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি মোবাইল ফোন ধরেননি।

প্রসঙ্গত, মার্কেট মেকার হলো পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট এমন প্রতিষ্ঠান, যারা শেয়ার কেনাবেচার মাধ্যমে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের যৌক্তিক দর প্রতিষ্ঠা এবং বাজারকে গতিশীল করতে কাজ করে।  মন্দা বাজারে যখন নতুন বিনিয়োগ করার কেউ থাকে না, তখন মার্কেট মেকার প্রতিষ্ঠান শেয়ার কিনে বাজারকে চাঙা করার চেষ্টা করে।  একই সঙ্গে বাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়াতেও সহায়তা করে। আইন অনুযায়ী, বাণিজ্যিক ব্যাংক, ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিমা কোম্পানি, মার্চেন্ট ব্যাংক, স্টক ব্রোকার বা স্বতন্ত্র কোনো প্রতিষ্ঠান মার্কেট মেকারের লাইসেন্স নিয়ে কার্যক্রম চালাতে পারে।

তানিম/সাইফ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়