ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ব্যবসায়িক নিষ্ক্রিয়তা: দুই কোম্পানিকে ব্যাখ্যা তলব

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১২, ১৩ জুলাই ২০২২   আপডেট: ১২:১৩, ১৩ জুলাই ২০২২
ব্যবসায়িক নিষ্ক্রিয়তা: দুই কোম্পানিকে ব্যাখ্যা তলব

পুঁজিবাজারে ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানি কাসেম টেক্সটাইল মিলস ও শ্রীপুর টেক্সটাইল মিলসের কাছে উৎপাদন কার্যক্রমে নিষ্ক্রিয়তার বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একইসঙ্গে কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম পুনরায় চালু করার বিষয়ে জানতে চেয়েছে কমিশন।

আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে কোম্পানি দুটিকে বিএসইসির কাছে ব্যাখ্যা প্রদান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোম্পানি দুটি যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদানে ব্যর্থ হলে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

সম্প্রতি কোম্পানি দুটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর বিএসইসি ওটিসি মার্কেট বাতিলের ঘোষণা দেয়। ওটিসি মার্কেটের কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৩টিকে এসএমই প্ল্যাটফর্মে এবং ১৮টিকে অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে (এটিবি) স্থানান্তর করা হবে বলে জানানো হয়। এর মধ্যে কাসেম টেক্সটাইল ও শ্রীপুর টেক্সটাইলকে ওটিসি থেকে অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে স্থানান্তরের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে কোম্পানি দুটি ২০০৯ সাল থেকে পুঁজিবাজারের ওটিসি মার্কেটের অধীনে ছিল।

সূত্র জানায়, কাসেম টেক্সটাইল প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ৬৯ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধন সংগ্রহ করেছে। বর্তমান পরিশোধিত মূলধন ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। কোম্পানির সর্বশেষ এজিএম ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত হয়।

ডিএসইর পরিদর্শন প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গেছে, একটি ব্যবসায়িক গ্রুপ কাশেম টেক্সটাইল মিলের কারখানা প্রাঙ্গণে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কারণ কাসেম টেক্সটাইল তাদের পুরো কারখানার প্রাঙ্গণ গ্রুপের কাছে বিক্রি করেছে।

এদিকে, ২০১২ সালের ১৯ এপ্রিল কোম্পানিটি জানিয়েছিল, অপ্রয়োজনীয় উৎপাদন প্রক্রিয়া, ইটিপি মেশিন না থাকা এবং কারখানার রাসায়নিক দূষিত বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থার না থাকার কারণে কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয়ে গেছে। সে সময় কোম্পানিটি আরও জানিয়েছিল, কারখানাকে একটি উপযুক্ত জায়গায় স্থানান্তর করা হবে। যেখানে পরিবেশ বিভাগের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে প্রয়োজনীয় সহায়ক সুবিধা পাওয়া যাবে। পরবর্তীতে ওই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটি স্টক এক্সচেঞ্জকে সর্বশেষ মূল্য-সংবেদনশীল তথ্য সরবরাহ করে, কারখানা স্থানান্তরের জন্য গাজীপুরে ১৯.৬ কোটি টাকা ব্যয়ে অন্যান্য সুবিধাসহ একটি কারখানা ভবন কেনা হবে।

এদিকে শ্রীপুর টেক্সটাইল প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধন সংগ্রহ করেছে। টেক্সটাইল কোম্পানির বর্তমান পরিশোধিত মূলধন ১৪ কোটি টাকা। কোম্পানির উৎপাদন ২০০৬ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে।

সিএসই পরিদর্শন প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গেছে, আদালতের রায়ের ভিত্তিতে ঋণদাতারা শ্রীপুর টেক্সটাইলের সমস্ত বন্ধকী এবং হাইপোথিকেট সম্পদ বিক্রি করে দিয়েছে। মোটরযান ছাড়া কোম্পানির নামে কোনো সম্পদ নেই। শ্রীপুর টেক্সটাইল ইআরবিএ লিমিটেডের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান। ২০১৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর কোম্পানির অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) পর থেকে বিএসইসির কাছে কোনো তথ্য রেকর্ড নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসাইসির একজন কর্মকর্তা বলেন, কোম্পানি যদি নথিসহ সঠিক ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে বিএসইসি প্রয়োজনীয় এবং প্রাসঙ্গিক আইনি ব্যবস্থা নেবে।

প্রসঙ্গত, কাসেম টেক্সটাইল পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৮৫ সালে। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ১৩ লাখ ৮০ হাজার। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ৪৮.৮৪ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৫১.১৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। কোম্পানির শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৮.১০ টাকায়।

এদিকে শ্রীপুর টেক্সটাইল পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৯৬ সালে। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি ৪০ লাখ। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ৫০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৭.১৪ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদোর হাতে ৫.৭১ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৩৭.১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। কোম্পানির শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৯ টাকায়।

/তানিম/সাইফ/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়