ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ভারতের কমোডিটি এক্সচেঞ্জে প্রশিক্ষণ নেবে বিএসইসি-সিএসই

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২৭, ২৭ মার্চ ২০২৩  
ভারতের কমোডিটি এক্সচেঞ্জে প্রশিক্ষণ নেবে বিএসইসি-সিএসই

দেশে প্রথমবারের মতো কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। ইতোমধ্যে এ কাজের জন্য সিএসইকে অনুমোদন দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে দেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ গঠনের বিষয়ে কোনও প্রতিষ্ঠানের নেই পূর্ব অভিজ্ঞতা। তাই এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা নিতে মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জের (এমসিএক্স) বিশেষ পেশাদার প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে সিএসইর সঙ্গে ভারত সফরে যাচ্ছে বিএসইসির প্রতিনিধি দল।

আগামী ৯ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ভারতের মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জে (এমসিএক্স) এ বিশেষ পেশাদার প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হওয়া কথা রয়েছে। এ বিষয়ে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে সিএসই সূত্রে জানা গেছে।

তথ্য মতে, এমসিএক্স পরিদর্শনের জন্য বিএসইসির পক্ষ থেকে ছয় জন প্রতিনিধিকে মনোনয়ন দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন- বিএসইসি’র কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান, পরিচালক মো. আবুল কালাম, অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ও উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারিসুল হাসান রিফাত। 

এদিকে এ সফরে সিএসই থেকে দুই জন প্রতিনিধিকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- সিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম ফারুক ও উপ-ব্যবস্থাপক ও সিএসই’র প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট কমিটির সচিব মো. ফয়সাল হুদা।

ভারতের এমসিএক্সে বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেবেন বিএসইসি’র কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। এ বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির যাবতীয় খরচ সিএসই কমোডিটি প্রকল্প থেকে ব্যয় করা হবে বলে জানা গেছে।

এর আগে, গত বছরের ১৮ থেকে ২২ অক্টোবর ভারতের এমসিএক্স পরিদর্শন করেন সিএসই ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।

তথ্য মতে, প্রথমবারের মতো কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করার লক্ষে গত বছরের ১১ অক্টোবর খসড়া বিধিমালা বিএসইসিতে জমা দিয়েছে সিএসই কর্তৃপক্ষ। কমোডিটি এক্সচেঞ্জের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এমসিএক্সের সঙ্গে চুক্তি করার ৬ মাসের মধ্যে প্রথম উদ্যোগটি সফলভাবে শেষ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ অনুযায়ী, উল্লেখিত পণ্যসামগ্রী কমোডিটি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বেচাকেনা হবে। এই পদ্ধতিতে কেনাবেচা হয় কাগুজে বা ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে। মূল পণ্যটি কোনও গুদামে বা মাঠে থাকে। সেখান থেকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর এটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি বা হস্তান্তর হয়।

এদিকে সিএসইর পক্ষ থেকে স্বর্ণ, পাট, তুলা, আলু, পেঁয়াজ, চা ইত্যাদি পণ্যের মধ্য থেকে এক বা একাধিক পণ্য কমোডিটি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে কেনাবেচার করা যায় কি না সে বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। একটি কেন্দ্রীভূত বাজারের সঙ্গে পণ্য ব্যবসা ও ভোক্তাদের সেবা প্রদানের লক্ষে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সংগঠিত ও স্বচ্ছ বাজার সিন্ডিকেট ও দামের কারসাজি কমাতে এ ধরনের এক্সচেঞ্জ মুখ্য ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করে সিএসই।

সিএসই সূত্রে জানা গেছে, বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, সিএসই ইতোমধ্যে প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী কমোডিটি এক্সচেঞ্জের প্ল্যাটফর্ম পরিচালনার পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের লক্ষে বিভিন্ন দেশ পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর নতুন প্ল্যাটফর্মে সব ধরনের বিনিয়োগকারীকে পণ্য লেনদেনের সুবিধা দিতে কাজ চলছে। তবে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করলে প্রথম পর্যায়ে নন ডেলিভারি ক্যাশ সেটেলমেন্ট পদ্ধতি অনুসরণ করতে চায় সিএসই। ফলে ফিজিক্যাল ডেলিভারি ক্যাশ সেটেলমেন্ট পদ্ধতি না থাকার কারণ সাময়িকভাবে ওয়্যার হাউজ ও গোডাউন লাগছে না। তবে পরবর্তীতে ফিজিক্যাল ডেলিভারি ক্যাশ সেটেলমেন্ট পদ্ধতি চালু করা হবে। এজন্য সিএসই শিগগিরই কনসালটেন্ট নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে। কনসালটেন্টের পরামর্শে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে কী কী পণ্য নিয়ে এ কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ নেওয়া হবে।

এছাড়া কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করার আগে স্টোরেজ মেকানিজম ও ম্যানেজমেন্ট, ডেলিভারি সিস্টেম, ক্লিয়ারিং ও সেটেলমেন্ট সিস্টেম, হিউম্যান রিসোর্সসহ, বাজার স্থাপনের বিষয়টি বিবেচনা করছে সিএসই। এসব বিষয়ে ভারতের মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ সিএসইকে পরামর্শ প্রদান করতে সম্মত হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম ফারুক রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ভারতের মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জে বিশেষ পেশাদার প্রশিক্ষণ নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ সফরে সিএসই ও বিএসইসির প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। সিএসই দেশের প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে। সে লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে সিএসই। দেশের কমোডিটি পণ্যকে স্ট্যাবল করতে হলে কমোডিটি এক্সেচেঞ্জের বিকল্প নেই। এটা চালু করা হলে ব্যবসায়ী ও ক্রেতা উভয়েই আরও বেশি সুবিধা পাবেন।

ঢাকা/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়