ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৩ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ডিজিটাল ব্যাংকের আবেদন করেছে ১২ প্রতিষ্ঠান

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৭, ৩ নভেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১৬:৪৯, ৩ নভেম্বর ২০২৫
ডিজিটাল ব্যাংকের আবেদন করেছে ১২ প্রতিষ্ঠান

আর্থিক খাতে কার্যকারিতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে চালু হবে ডিজিটাল ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি ডিজিটাল ব্যাংক গঠনে আগ্রহীদের কাছ থেকে আবেদন চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। ২ নভেম্বর পর্যন্ত আবেদন নেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য আবেদন করেছে দেশি-বিদেশি ১২ প্রতিষ্ঠান।

সোমবার (৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানান। 

আরো পড়ুন:

ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য আবেদন করা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, ব্রিটিশ বাংলা ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, ডিজিটাল ব্যাংকিং অব ভুটান-ডিকে, আমার ডিজিটাল ব্যাংক-২২ এমএফআই, ৩৬ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, বুস্ট-রবি, আমার ব্যাংক (প্রস্তাবিত), অ্যাপ ব্যাংক-ফার্মারস, নোভা ডিজিটাল ব্যাংক-বাংলালিংক অ্যান্ড স্কয়ার, মৈত্রী ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, উপকারী ডিজিটাল ব্যাংক, মুনাফা ইসলামী ডিজিটাল ব্যাংক-আকিজ এবং বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুযোগ কাজে লাগিয়ে আর্থিক খাতে কার্যকারিতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এই ডিজিটাল ব্যাংক চালু হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালনার জন্য প্রধান কার্যালয় থাকবে। সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এটি হবে স্থাপনাবিহীন। অর্থাৎ এই ব্যাংক কোনো ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) সেবা দেবে না। ডিজিটাল ব্যাংকের নিজস্ব কোনো শাখা বা উপশাখা, এটিএম, সিডিএম অথবা সিআরএমও থাকবে না। সব সেবাই হবে অ্যাপ নির্ভর, মুঠোফোন বা ডিজিটাল যন্ত্রে।

একটি ডিজিটাল ব্যাংকে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা সেবা মিলবে। গ্রাহকদের লেনদেনের সুবিধার্থে ডিজিটাল ব্যাংক ভার্চ্যুয়াল কার্ড, কিউআর কোড ও অন্য কোনো উন্নত প্রযুক্তিভিত্তিক পণ্য দিতে পারবে। তবে লেনদেনের জন্য কোনো প্লাস্টিক কার্ড দিতে পারবে না। এই ব্যাংকের সেবা নিতে গ্রাহকরা অন্য ব্যাংকের এটিএম, এজেন্টসহ নানা সেবা ব্যবহার করতে পারবেন। ডিজিটাল ব্যাংক কোনো ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারবে না। বড় ও মাঝারি শিল্পেও কোনো ঋণ দেওয়া যাবে না। শুধু ছোট ঋণ দিতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন পাওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে প্রতিটি ডিজিটাল ব্যাংককে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবনা (আইপিও) আনতে হবে। আইপিওর পরিমাণ অবশ্যই উদ্যোক্তাদের প্রাথমিক বিনিয়োগের ন্যূনতম সমান হতে হবে। 

ডিজিটাল ব্যাংকিং হলো অনলাইন ব্যাংকিংয়ের একটি বৃহত্তর অংশ, যেখানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের জন্য ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন হতে হবে ৩০০ কোটি টাকা। প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক খাতের বৈশ্বিক পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দক্ষতা বৃদ্ধি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন সহজ করা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে ঋণপ্রবাহ বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।

২০২৩ সালের ১৪ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক ডিজিটাল ব্যাংকের নীতিমালা প্রণয়ন করে। তখন ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন ধরা হয়েছিল ১২৫ কোটি টাকা, যা পরে সংশোধন করে ৩০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। প্রচলিত ব্যাংকের ক্ষেত্রে পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হবে ১৯৯১ সালের ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী এবং পেমেন্ট সার্ভিস পরিচালিত হবে ২০১৪ সালের বাংলাদেশ পেমেন্ট অ্যান্ড সেটলমেন্ট সিস্টেম রেগুলেশন অনুসারে।

বাংলাদেশ ব্যাংক গত ২৬ আগস্ট ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের আবেদন আহ্বান করে। তখন আবেদন গ্রহণের শেষ তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত ছিল। আবেদন গ্রহণের তারিখ পরবর্তীতে বাড়িয়ে ২ নভেম্বর করা হয়। 
 

ঢাকা/নাজমুল/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়