দেশে নিরক্ষর ২১.১ শতাংশ
বাদ সম্মেলনে তথ্য তুলে ধরেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ও মন্ত্রণালয়ের সচিব
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ প্রতিবেদন ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০২৪’ অনুযায়ী দেশের সাত বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর মধ্যে বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭৭ দশমিক ৯ শতাংশ। সেই হিসাবে প্রায় ২১ দশমিক ১ শতাংশ জনগোষ্ঠী এখনো নিরক্ষর।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ও মন্ত্রণালয়ের সচিব।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ জনগোষ্ঠী মূলত বিদ্যালয়-বহির্ভূত বা ঝরে পড়া শিশু এবং শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ। উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের জন্য তাদেরকে সাক্ষরজ্ঞান ও কর্মমুখী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তরিত করা অত্যন্ত জরুরি। শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সরকারি দপ্তরের সঙ্গে সঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অধীন উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো এ বিষয়ে কাজ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জাতিসংঘ ঘোষিত এ দিবস প্রতিবছর ৮ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য হলো ‘প্রযুক্তির যুগে সাক্ষরতার প্রসার’।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন-২০১৪ অনুযায়ী ১০-১৪ বছর বয়সী বিদ্যালয় বহির্ভূত শিশুদের উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষা প্রদান এবং ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী নিরক্ষর নারী-পুরুষকে সাক্ষরতা, জীবিকায়ন দক্ষতা ও জীবনব্যাপী শিক্ষা প্রদানের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরে শেষ হওয়া বিদ্যালয়-বহির্ভূত শিশুদের উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষা কর্মসূচির আওতায় ৬৩ জেলায় ২৫ হাজার ৮১৫টি শিখন কেন্দ্রে ৮ লাখ ২ হাজার ৫৩৬ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল। এর মধ্যে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৪৯৬ জন শিক্ষার্থী মূল ধারায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এবং অবশিষ্ট শিক্ষার্থীরা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষালাভ করেছে। ২০২২ সালে শেষ হওয়া মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পের মাধ্যমে ৬৪ জেলার ২৪৮টি উপজেলায় ৪৪ দশমিক ৬০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী সাক্ষরজ্ঞান লাভ করেছে।
কক্সবাজার জেলায় বিদ্যালয়-বহির্ভূত কিশোর-কিশোরীদের জন্য দক্ষতাভিত্তিক সাক্ষরতা শীর্ষক পাইলট প্রকল্প শেষ হয়েছে চলতি বছর জুনে। এতে ১৩টি অকুপেশনে প্রি-ভোকেশনাল কোর্সে ৬ হাজার ৮২৫ জন কিশোর-কিশোরীকে সাক্ষরতার পাশাপাশি কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। স্কিলফো প্রকল্পটির আরো ১৬টি জেলায় সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।পাশাপাশি ‘অর্টারনেটিভ লার্নিং অপারচুনিটি’ প্রোগ্রামের মাধ্যমে ৬৪টি জেলার একটি করে উপজেলায় উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষা এবং প্রাক-বৃত্তিমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ‘কার্যকর সাক্ষরতা ও ব্যবহারিক কর্মদক্ষতা’ শীর্ষক নতুন কর্মসূচির মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম দেশব্যাপী শুরু করার সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ