মহাপ্রলয় নিয়ে হলিউডের যত চলচ্চিত্র
মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম
ছবির কোলাজ
বিনোদন ডেস্ক : বৈরী প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের লড়াই বা পৃথিবীতে মহপ্রলয়ের দিন কী অবস্থা হবে- সেরকম বিভিন্ন কাহিনি নিয়ে হলিউডে নির্মিত হয়েছে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র। জেনে নিন সে সিনেমাগুলো সম্পর্কে।
San Andreas
ভয়াল এক ভূমিকম্প আছড়ে পড়েছে আমেরিকায়। যার শক্তি এতটাই যে তা ফাটল ধরিয়েছে গোটা পৃথিবীতে। সেই অবস্থা থেকে হেলিকপ্টারে মানুষকে উদ্ধারের কাহিনী নিয়েই তৈরি ব্র্যাড পিটন পরিচালিত সান অ্যানড্রিস। এ মাসেই মুক্তি পাবে এই সিনেমাটি।
2012
২০০৯ সালে প্রকাশ পায় রোল্যান্ড এমেরিচ পরিচালিত সিনেমা ২০১২। এই গ্রহে মানবসভ্যতার শেষদিনটার বর্ণনা দিয়েছিল এই সিনেমা, যা দেখে মানবজাতির শরীর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল ঠাণ্ডা স্রোত। গ্রাহাম হ্যাংককের জনপ্রিয় বই ‘ফিঙ্গারপ্রিন্টস অব দ্য গড’-এর দ্বারা অনুপ্রাণিত এই সিনেমায় ২০১২ সালে পৃথিবীর ধ্বংসের দিনটির চিত্রায়ণে তুলে ধরা হয়েছিল কিছু প্রাকৃতির বিপর্যয়ের ছবি। অসাধারণ স্পেশ্যাল ইফেক্টে ভূ-পৃষ্ঠের প্রবল কম্পন, মহাসাগরের জল উপচে বন্যা, রাস্তাঘাট ফেটে বিশাল গহ্বর-এই সমস্ত কিছুর সংমিশ্রণে তুলে ধরা হয়েছিল সৃষ্টির অন্তিম দিনকে।
The Day After Tomorrow
২০১২ সিনেমাটির তৈরির আট বছর আগে ২০০৪ সালে একই ধরনের আরো একটি সিনেমা তৈরি করেছিলেন পরিচালক রোল্যান্ড এমেরিচ। দ্য ডে আফটার টুমোরো। তবে ঠিক সৃষ্টির বিনাশ না দেখালেও, এই সিনেমায় তুলে ধরা হয়েছে বিশ্ব উষ্ণায়নের পরিণতির বাস্তব রূপ। দেখানো হয়েছে, গ্লোবাল ওয়ার্মিং মানবসভ্যতাকে ঠেলে দেবে তুষারযুগে।
Melancholia
২০১১ সালে তৈরি লার্স ভন ট্রায়ার পরিচালিত ফিল্ম মেলাংকোলিয়া-এর চিত্রনাট্য একটি পারিবারিক গল্পকে ঘিরে। একটি বিয়ে, পারিবারিক শত্রুতা ও দুই বোন ক্লেয়ার আর জাস্টিনের গল্পে বাঁধা মেলাংকোলিয়া। তবে এখানে দেখানো হয়েছে, এই পরিবার কীভাবে এগিয়ে যায় এক নিশ্চিত নিয়তির দিকে। কারণ একটি আগুনের গোলার মতো গ্রহের সঙ্গে পৃথিবীর ধাক্কা লাগার গল্প বলা হয়েছে মেলাংকোলিয়াতে।
Take Shelter
প্রকৃতির রোষ থেকে বাঁচার চেষ্টায় আগাম নিরাপদ আশ্রয় খোঁজার গল্প বর্ণনা করা হয়েছে জেফ নিকোলস পরিচালিত টেক শেলটার ফিল্মে। ২০১১ সালে তৈরি হলিউডের এই ফিল্মে গল্পের নায়ক স্বপ্নে দেখেন সর্বনাশা এক ঝড় ধেয়ে আসছে কিছুদিনের মধ্যেই। বিধ্বংসী এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের থেকে নিজের পরিবারকে বাঁচাতে এক নিরাপদ আশ্রয় খোঁজার চেষ্টা করেন তিনি। অবশেষে পালাবার কোনো পথ না পেয়ে, চাকরি ছেড়ে, সমাজের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে মাটির তলায় আশ্রয় নেন তিনি। মেতে ওঠেন প্রকৃতির সঙ্গে অদ্ভূত এক লুকোচুরি খেলায়। শুরু হয় অসম এক লড়াই।
These Final Hours
আগামীকালই যদি পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে শেষের এই কয়েক ঘণ্টায় আপনি কী কী করতে চান? ২০১৩ সালে তৈরি জাক হিলডিচ পরিচালিত দ্য ফাইনাল আওয়ার্স-এর দৃশ্যকল্প এই নিয়েই। সিনেমাটির নায়ক জেমস সিদ্ধান্ত নেন জীবনের অন্তিম কয়েক ঘণ্টায় তিনি পার্টি করবেন, উল্লাট মদ্যপান করবেন, মাদক সেবন করবেন আর উচ্চমাত্রায় যৌনসংসর্গ উপভোগ করবেন। কিন্তু পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে দেয় একটি ঘটনা। জেমস যখন পার্টিতে যাচ্ছেন, তখন একটি ছোট্ট মেয়েকে ধর্ষিত হতে দেখে, তাকে ধর্ষকদের হাত থেকে রক্ষা করেন তিনি। জীবনের অন্তিম কয়েক ঘণ্টায় যেন নতুন করে জেগে ওঠে জেমসের বিবেক।
Wall
২০০৮ সালে তৈরি অ্যান্ড্রু স্ট্যান্টনের তৈরি ওয়াল-ই সিনেমা তাকে এনে দিয়েছিল অস্কারের সম্মান। এই সিনেমায় সৃষ্টির অবলুপ্তির কারণ হিসেবে কোনো ভূমিকম্প, সুনামি বা গ্রহের সঙ্গে গ্রহের ধাক্কার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথা বলা হয়নি। তুলে ধরা হয়েছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার খামতির কথা। এই অ্যানিমেটেড ফিল্মের মাধ্যমে স্ট্যান্টন বলতে চেয়েছেন, একদিন এই গ্রহ পরিণত হবে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে। যখন বাসযোগ্য আর কোনো জায়গা অবশিষ্ট্য না থাকায়, মানুষকে হতে হবে মহাকাশবাসী।
Seeking a Friend For The End of The World
২০১২ সালে লরেন স্কাফারিয়া পরিচালিত সিকিং আ ফ্রেন্ড ফর দ্য অ্যান্ড অফ দ্য ওয়ার্ল্ড সিনেমায় মানবসভ্যাতার শেষ সময়ের বর্ণনা রয়েছে। চিত্রায়িত হয়েছে, সৃষ্টির অবলুপ্তি হবে তিন সপ্তাহ পর। শেষের মাত্র কয়েক দিনে কীভাবে ভালোবাসার মানুষগুলোর সঙ্গে শেষবারের মতো যোগাযোগ করা যায়, তারই উদগ্র প্রচেষ্টার দৃশ্যরূপ এই সিনেমা।
The Road
জন হিলকোট পরিচালিত ফিল্ম দ্য রোড সৃষ্টির বিনাশ নয়, দেখিয়েছে প্রকৃতির রোষের সঙ্গে যুদ্ধে, মৃত্যুর মুখ থেকে এক বাবা ও ছেলের জীবনের দিকে এগিয়ে চলার যাত্রাপথ।
Knowing
অ্যালেক্স প্রয়াস পরিচালিত মুভি নোয়িং বেশকিছু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সমাহার, যার পরিণতি ধ্বংস। ২০০৯ সালের এই ফিল্মে স্পেশ্যাল ইফেক্টের মুন্সিয়ানার পাশাপাশি সবচেয়ে স্মরণীয় চিত্রায়ণ বিমান ভেঙে পড়ার দৃশ্য।
Deep Impact
১৯৯৮ সালে তৈরি মিমি লেডার পরিচালিত ফিল্ম ডিপ ইমপ্যাক্ট-ও তুলে ধরেছে সৃষ্টির বিনাশের আগে মানুষের সংগ্রামের গল্প। একটি গ্রহাণু আছড়ে পড়ার পূর্বাভাসে, কীভাবে তা থেকে রক্ষার চেষ্টা করে মানবজাতি তারই বর্ণনা রয়েছে এই মুভিতে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ মে ২০১৫/ফিরোজ
রাইজিংবিডি.কম