পারভীন ববির শেষযাত্রায় হাজির হয়েছিলেন তিন প্রেমিক

বলিউডের অন্যতম সাড়া জাগানো অভিনেত্রী পারভীন ববি। স্বাধীনচেতা এই নায়িকা পর্দায় হাজির হয়ে দর্শকদের কাছ থেকে পেয়েছিলেন ‘সেক্স সিম্বল’ তকমা।

অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে ‘মজবুর’ সিনেমায় অভিনয় করে প্রথম সফলতার ছোঁয়া পান পারভীন ববি। এরপর ‘দিওয়ার’, ‘অমর আকবর অ্যান্থনি’, ‘নমক হালাল’র মতো দর্শকপ্রিয় ও ব্যবসাসফল সিনেমায় অভিনয় করে তারকা হয়ে ওঠেন। ‘টাইমস’ ম্যাগাজিনে ফিচার হওয়া প্রথম বলিউড অভিনেত্রী তিনি। ক্যারিয়ারে খ্যাতি, প্রাচুর্য সবই পেয়েছিলেন। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে সুখী ছিলেন না।

পারভীন ববির সঙ্গে একাধিক প্রেমের গুঞ্জন শোনা গেছে। তার প্রেমিকের মধ্যে ছিলেন অভিনেতা ড্যানি ডেনজংপা, কবির বেদি এবং নির্মাতা মহেশ ভাট। পারভীন ববিকে ঘিরে এদের নিয়ে বলিউডে অনেক গুঞ্জনই ছড়িয়েছে। এমনকি ববির শেষযাত্রায় হাজির ছিলেন এই তিন প্রেমিক।

অভিনেতা কবির বেদি তার ‘স্টোরিস আই মাস্ট টেল’ বইয়ে পারভীন ববিকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন। বিবাহিত হয়েও ববির প্রেমে পড়েছিলেন এই অভিনেতা। এই অভিনেত্রীর সঙ্গে পরিচয় প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘ধবধবে রং, কালো ঘন চুল, মায়াময় চোখ। পারভীনকে আমি চিনতাম ড্যানি ডেনজংপার প্রেমিকা হিসেবে। ড্যানি আমার থেকে দুই বছরের ছোট আর পারভীনের চেয়ে বছর খানেকের বড় ছিল। সেই সময় সবার সামনে দাঁড়িয়ে ধূমপান, জিন্স পরা পারভীনকে এনে দিয়েছিল এক বোহেমিয়ান ইমেজ।’

জীবনের করুণ এক পর্যায়ে ববি সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হন। বিষণ্ণতা এমনভাবে মনে চপে বসে, ধীরে ধীরে সবার কাছ থেকে নিজেকে আড়াল করে নেন। ২০০৫ সালের ২২ জানুয়ারি, তিনদিন ধরে ঘরের বাইরে পত্রিকা ও দুধ পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ববির লাশ উদ্ধার করে। তার ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল পেইন্টিং, ওষুধ, কাপড়, পুরোনো পত্রিকা এবং একটি হুইল চেয়ার। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনদিন ধরে না খেয়ে ছিলেন; এতেই মৃত্যু হয়েছে।

পারভীন ববির মৃত্যু নিয়ে কবির বেদি লিখেছেন, ‘চার দিন পর ওর দেহ উদ্ধার হলো। পায়ে গ্যাংগ্রিন হয়ে পচে গিয়েছিল। বিছানার পাশে রাখা একটা হুইলচেয়ার। এক একাকী এবং নিঃসঙ্গ তারা যে কিনা কোনো এক সময়ে লাখ লাখ পুরুষের হৃদয় আলোকিত করেছিল।’

পারভীন ববির শেষযাত্রায় এই অভিনেত্রীর অন্য দুই প্রেমিকের সঙ্গে হাজির হয়েছিলেন কবির। এই অভিনেতা জানান, এই তিনজন (ড্যানি, মহেশ ও কবির) তাকে ভালোবাসতো এবং তার সম্পর্কে যা জানত তা অন্য কেউ জানতো না। প্রত্যেকে তাকে ভালোবাসত এবং এটি শুধু তারাই জানতেন। পরবর্তী সময়ে তারা পারভীন ববিকে বয়ে নিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত করেছেন।

কবির বেদি লিখেছেন, ‘তার নিথর শরীর বয়ে নিয়ে গেলাম। মনে হলো যা দুঃখ সে এতদিন পেয়ে এসেছে তার সঙ্গে কোথাও গিয়ে আমিও এক হয়ে গেলাম।’