ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ||  মাঘ ২৩ ১৪৩১

বাবার ‘লক্ষ্মী ট্যারা’ চোখ নিয়ে স্মৃতিকাতর স্বস্তিকা

বিনোদন ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:০৮, ২১ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ২০:০১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫
বাবার ‘লক্ষ্মী ট্যারা’ চোখ নিয়ে স্মৃতিকাতর স্বস্তিকা

বাবার সঙ্গে স্বস্তিকা মুখার্জি

ভারতীয় বাংলা সিনেমার বর্ষীয়ান অভিনেতা সন্তু মুখার্জি। ২০২০ সালের ১১ মার্চ পরপারে পাড়ি জমান তিনি। গত ১৩ জানুয়ারি সন্তু মুখার্জির জন্মদিন ছিল। বিশেষ দিনে এই অভিনেতাকে নিয়ে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন তারই কন্যা জনপ্রিয় অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি।

বাবাকে নিয়ে ফেসবুকে ফের দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন স্বস্তিকা মুখার্জি। লেখার শুরুতে আলোচিত এই অভিনেত্রী বলেন, “ছোটবেলা থেকে দেখেছি, বাবা একটু বেশি মনোযোগ দিয়ে কথা বললে চোখটা কেমন অন্যরকম হয়ে যেত বা অন্যমনস্ক হয়ে রইলে চোখটা সেই অন্যরকম। আনমনে কথা বললেও দেখতাম চোখের মণিটা কেমন যেন ফট করে আলাদা হয়ে যেত। হঠাৎ ডাকলে যদি তাকায়, সেই চোখটা আবার আলাদা। একটু বড় হতে বুঝলাম একে বলে— লক্ষ্মী ট্যারা। চাহনিটা খালি একটু খানি, একটু খানি অন্যরকম। বাবাকে কী মিষ্টি লাগত।”

‘লক্ষ্মী ট্যারা’ ব্যাপারটি নিয়ে বাবার সঙ্গে দারুণ আলাপচারিতা উল্লেখ করে স্বস্তিকা মুখার্জি বলেন, “ওই রকম করো না চোখটা”— এটা বললেই বাবা বলত, আরে ওরম ইচ্ছে করলেই হয় না, করা যায় না। ট্যারা হব দেখবি? সে ট্যারা তো সবাই হতে পারে। নাকের ডগায় আঙুল রেখে বা ভুরু যুগলের মধ্যে আঙুল রেখে তাকানোর চেষ্টা করলেই ট্যারা। কিন্তু লক্ষ্মী ট্যারা ব্যাপারটা স্পেশাল।”

আরো পড়ুন:

স্বস্তিকা নিজেও তার বাবার মতো করে তাকাতে পারেন। বোনের সঙ্গে আড্ডা দিতে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটান। সেই স্মৃতিচারণ করে এই অভিনেত্রী বলেন, “বাবা চলে যাওয়ার পর, অনেক রাত অব্দি বোনের সঙ্গে গল্প করলে বোন মাঝেমাঝে বলত, ‘এই দিদি চোখটা ঠিক কর, বাবার মতন হয়ে গেছে।’ অথবা বলত, ‘দিদি পুরো বাবার মতন তাকালি।’ বা বলত, ‘পুরো বাবা মনে হলো চোখটা, ওরম করে তাকাস না আহারে, এই দিদি চোখটা ঠিক কর।’ আমি পাতা ফেলে, চোখ পিটপিট করে ঠিক করে নিতাম আর মনে মনে স্বস্তির হাসি হাসতাম।”

“আমরা তো সবাই চাই, এটাই আমাদের সুপ্ত বাসনা, আমরা যেন আমাদের বাবা মায়ের মতন হই। তাদের সবটা যেন আমাদের মধ্যে থেকে যায়। ঠিক যেমন আমি চাই, আমার আমিটা যেন আমার মেয়ের মধ্যে আশ্রয় পায়।” বলেন স্বস্তিকা মুখার্জি।

কয়েক দিন আগের একটি ঘটনা বর্ণনা করে স্বস্তিকা মুখার্জি বলেন, “ফ্লাইটে আসার সময় হঠাৎ দেখি সূর্যটা অস্ত যাওয়ার আগে রমরমিয়ে জ্বলে উঠেছে, সারা আকাশ কমলা রঙে উজ্জ্বল আর সেই এক ফালি রোদ এসে আমার চোখটা প্রায় ঝলসে দিচ্ছে। এত সুন্দর আলো অনেকদিন পর দেখলাম।”

পরের ঘটনা উল্লেখ করে এই অভিনেত্রী বলেন, “ভাবলাম, সূর্যের এত কাছে আছি কটা ছবি তুলি, নিজস্বী। ঠিক দুটো তুললাম। ওমা ফটোটায় তাকিয়ে দেখি, সেই বাবার মতন হয়ে আছে চোখটা। সঙ্গে সঙ্গে আরো কয়েকটা তুললাম যাতে বাবার মতন হয়ে থাকতে থাকতে আরো কটা ছবি থেকে যায়। এক ফোটা নড়িনি চড়িনি, চোখের পাতাও ফেলিনি। হলো না। আর একটাও হলো না।”

“প্লেনটা নামা অব্দি ভাবলাম, এই আকাশে বাবা থাকে, মেঘের মধ্যে, সূর্যের কিরণের মধ্যে। আমিও আছি দেখে বোধহয় টুক করে এসে জানান দিয়ে গেল। এই আকাশে আমার মুক্তি আলোয়ে আলোয়ে…।” বলেন স্বস্তিকা।

ব্যক্তিগত জীবনে গোপা মুখার্জির সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন সন্তু মুখার্জি। এ সংসারে তাদের দুই কন্যাসন্তান রয়েছেন। তারা হলেন— অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি ও মেকআপ ডিজাইনার অজপা মুখার্জি।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়