ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

প্রযুক্তির আবির্ভাবে বিলুপ্তিপ্রায় মুন্সিগঞ্জের বেত শিল্প

শারমিন সাঈদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৫, ২ জুন ২০২১   আপডেট: ১৪:৫৪, ২ জুন ২০২১
প্রযুক্তির আবির্ভাবে বিলুপ্তিপ্রায় মুন্সিগঞ্জের বেত শিল্প

গাছপালার সমারোহে সমৃদ্ধ জেলা মুন্সিগঞ্জ। স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রায় অধিকাংশের বাড়ির পেছনের অংশে বেড়ে উঠে অনেক গাছপালা। অন্যান্য গাছের মতোই অযত্নে বেড়ে ওঠা গাছের মধ্যে বেত গাছ একটি। কাঁটাযুক্ত এই উদ্ভিদের ফল যা বেত ফল নামে পরিচিত । চৈত্র /বৈশাখ মাসে পাকা এই ফল ছোট ছোট শিশুদের জন্য ছিলো মুখরোচক খাবার। কিন্তু বর্তমানে তা খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার মধুপুর মনিপাড়ার বাঁশ ও বেত শিল্প অনেক বিখ্যাত ছিলো। একসময় এটি এতো বেশি বিখ্যাত ছিলো যে,প্রায় ১০০ বছর ধরেই ঋষি সম্প্রদায়ের ৮০ টি পরিবার এই পেশায় জড়িত ছিলো। কিন্তু বর্তমানে বেত অনেকটা দুষ্প্রাপ্য হওয়ায়, তার স্থান দখল করেছে প্লাস্টিকের তৈরি দ্রবাদি।

সেই সময়ে গ্রামের প্রায় প্রতি বাড়িতেই বেতের ঝাড় ছিল, যাকে আঞ্চলিক ভাষায় বলা হতো বেতঝাড়। এই বেতঝাড় থেকেই বেত দিয়ে তৈরি হয় নানা ধরনের জিনিস। শীতল পাটি,টুকরি,হাত পাখা,মাটি কাটার ওড়া,টোপা, খলিশান,মাছ শিকারের পলি ইত্যাদি। এছাড়াও চেয়ার, সোফা, দোলনা, ফুলদানি তৈরিসহ নানা ধরনের কাজের জিনিস তৈরি হয়ে থাকে। বেতের তৈরি জিনিস অত্যন্ত মূল্যবান এবং টেকসই।

মুন্সিগঞ্জসহ প্রায় অনেক জেলার বেত শিল্পই এখন বিলুপ্তির মুখে। এর অন্যতম কারন জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাব। আগের মতো বাড়ির আঙিনায় তো দূরের কথা,গ্রামের পর গ্রাম ঘুরলেও এখন বেতঝাড়ের দেখা মেলে না। গ্রাম গুলোতে এখন আর বেতের জিনিস চোখে পরে না,যদিও দু'একটা পরে তাতে কারিগরদের ন্যায্য মূল্য উঠে আসে না।

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রাণ ফিরিয়ে আনার জন্য বেত শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।এছাড়াও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন  প্রজাতির গাছগুলো অত্যাবশ্যক।

লেখকঃ স্বত্বাধিকারী, ইনোভেন্টিক ফ্যাশন এবং মুন্সিগঞ্জ জেলা কন্ট্রিবিউটর লেখক (উদ্যোক্তা/ই-কমার্স পাতা,রাইজিংবিডি ডটকম)

মুন্সিগঞ্জ/সিনিথিয়া

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়