ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

পরনির্ভরশীলতা নয় আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যেই উদ্যোক্তা সুকেশী

শিরীন সুলতানা অরুনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ১৭ জুন ২০২১  
পরনির্ভরশীলতা নয় আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যেই উদ্যোক্তা সুকেশী

সুকেশী চাকমা, জন্ম ও বেড়ে উঠা রাঙামাটিতে।  দুই বোনের মধ্যে পরিবারের ছোট মেয়ে সুকেশী। বিয়ের পরে বর্তমানে রাঙামাটির চম্পকনগরে বসবাস করছেন তিনি । ঘর সংসার সামলিয়েই হয়ে সুকেশী হয়ে উঠেছেন সফল উদ্যোক্তা ।

অনেক আগের থেকেই নিজের ডিজাইন করা পোশাক পরতে ভালো লাগত সুকেশীর। পরনের বেশিরভাগ পোশাক ছিল তার নিজেস্ব নকশাঁয় তৈরি। আর এজন্য অন্যরাও প্রশংসাও করত বেশ। সেখান থেকেই অনুপ্রেরণা নিয়ে প্রথমে নিজের ডিজাইন করা কিছু জামা তৈরি করেন তিনি। তখন অনলাইন ব্যবসার প্রচলন খুব বেশি ছিল না। এরপর সুকেশী তার কিছু বান্ধবী আর পরিচিত কয়েক জনকে জানায় তার কাজের ব্যপারে। এতে অনেকের কাছে জানাজানি হয়ে এবং তার তৈরি সব পোশাক বিক্রি হয়ে যায়। সেখান থেকেই আসলে সুকেশীর উদ্যোক্তা হওয়ার সূচনা ছিল।

শুরুটা অফলাইনে হলেও পরবর্তীতে অনলাইনের মাধ্যমে সুকেশী তার ব্যবসা পরিচালনা করেন । তার ফেসবুক পেজের নাম ‘কালার’স’। সুকেশীর পেজে প্রাধান্য পেয়েছে রাঙামাটির ঐতিহ্যবাহী পোশাক পিনন হাদি,নিজের ডিজাইন করা বড়দের ও বাচ্চাদের পোশাক,হ্যান্ড প্রিন্ট ও দেশীয় বিভিন্ন পোশাক ইত্যাদি।

নিজের উদ্যোগের কথা বলতে গিয়ে সুকেশী চাকমা বলেন, ‘আমাদের ঐতিহ্য আমাদের গৌরব। তাই আমাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক যাতে হারিয়ে না যায় এজন্য আমি পিনন হাদি নিয়ে কাজ করছি। আধুনিকতার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাককে নতুন রূপে সবার মাঝে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি। পরনির্ভরশীলতা নয় নিজের প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে আত্মকর্মসংস্থান গড়ে তুলতেই উদ্যোক্তা হয়েছি। যেন সামান্য কিছুর জন্য কারো কাছে হাত পাততে না হয়।‘

তিনি আরও বলেন, ‘ব্যবসা করতে গিয়ে প্রথম দিকে তেমন কোন সমস্যা তৈরি হয়নি। তবে আজ কাল প্রায়ই শুনতে হয় বাসায় সবাই চাকরি করে তোমার কেন এসব করার প্রয়োজন। হাসি মুখে আমিও জবাব দেই সবাই চাকরি করে মাস শেষে বেতন পায়। কেউ কি আমাকে একটা টাকা দেয়? আমারও তো ইচ্ছা সখ আছে।

এভাবেই অনেকের কথার মাঝেও নিজেকে ধরে রেখিছি। তবে এখনো সম্পূর্ণ সফলতা অর্জন করতে পারিনি বলে আমি মনে করি।কিন্তু সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছি।‌ আর আমার উদ্যোক্তা জীবনে সফল হতে আমার মায়ের ভূমিকা অতুলনীয়। মা পাশে না থাকতো আমি কখনো এতো দূর আসতে পারতাম না। আর আমার স্বামী সবসময় পাশে থাকায় কঠিন কাজকেও সহজে সামলিয়ে নিতে পেরেছি’।

সুখেশী ২০১৬ সালে উদ্যোক্তা জীবন শুরু করলেও শুধুমাত্র বিগত এক বছরেই অনলাইনে বিক্রি করেছেন ৫ লাখ টাকারও বেশি। তবে তিনি তার ব্যবসাকে বর্তমান অবস্থা থেকে আরও বেশি এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। দেশ বিদেশে ছড়িয়ে দিতে চান তার উদ্যোগের পণ্যগুলোকে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো তার এই ছোট উদ্যোগ একটি বড় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দেওয়া।

লেখক : স্বত্বাধিকারী, এসএস এগ্রো প্রোডাক্ট ও জেলা প্রতিনিধি, উই (রাংগামাটি,খাগড়াছড়ি,বান্দরবান ) এবং কন্ট্রিবিউটর লেখক, রাইজিংবিডি উদ্যোক্তা/ ই-কমার্স পাতা ।

রাঙামাটি/সিনথিয়া

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়