ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘আমার বাবা যুদ্ধবন্দি ছিলেন’: শেষ পর্ব

জয়দীপ দে || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৬, ২২ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৬:১৬, ২২ ডিসেম্বর ২০২০
‘আমার বাবা যুদ্ধবন্দি ছিলেন’: শেষ পর্ব

যুদ্ধের ময়দানে আব্বা

আমার বাবা যেহেতু যুদ্ধাহত ছিলেন, তাই তার অনিশ্চয়তা ছিল আরো বেশি। তিনি আর্মিতে যোগ দেওয়ার পর তাকে সহানুভূতি দেখিয়ে পরিবারের কাছে থাকার জন্য লাহোরে পোস্টিং দেওয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায় তার পায়ের পাতায় একটি বুলেট আটকে আছে। প্রায় দুই বছর পর বুলেটটি অপসারণ করা হয়।

কয়েক মাস পর তার শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করা হয়। তাকে ৫০ শতাংশ অক্ষম ঘোষণা করা হয়। কারণ তার বাঁ চোখের দৃষ্টিশক্তি ছিল না। এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি সফল হয়েছিলেন। ‘কেউ উপলব্ধি করেনি কি ভয়াবহভাবে সে আহত হয়েছিল, তার মেডিকেল স্টোরি পাঠানো হয়নি’, খলিল সাহেব ব্যাখ্যা করলেন। তিনি তার বন্ধুর এই করুণ অবস্থা দেখে যারপরনাই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। ‌‘সেই ঘটনাটি (আমার বাবার দলের সঙ্গে ভারতীয় বাহিনীর সংঘর্ষ) ঘটেছিল পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমপর্ণের পর,’ খলিল সাহেব বলেন, ‘তিনি এ জন্য পাকিস্তানি ও ভারতীয় উভয় বাহিনীকে দোষারোপ করেন।’

‘এটি ছিল টোটাল কমান্ড ফেইলর। সেসময় পাকিস্তান আর্মির কমান্ড পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিল। তখন একটাই আদেশ ছিল ‘পালিয়ে বাঁচো’। এটিই ছিল ইস্টার্ন কমান্ড থেকে আসা শেষ বার্তা। তখন থেকে এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যার যার নিরাপত্তা তাকেই দেখতে হবে। তখন কমান্ডের এমন কোনো তৎপরতা ছিল না যা আমাদের নিরাপদে বাড়ি ফেরার পথ করে দেবে। আমাদের সৈন্যদের জন্য একটি যুক্তিসঙ্গত স্থানচ্যুতির পরিকল্পনা আগেই করা হয়েছিল,’ খলিল সাহেব বলেন, ‌‘আমি অবাক হই সেটা কেন বাস্তবায়ন করা হলো না।’ 

তিনি আরো বলেন, ‌‘ভারতীয়রা চাইলে আরো কিছু করতে পারত… যেসব সৈন্য গুরুতরভাবে আহত ছিল, ছিল সম্পূর্ণ নিরস্ত্র, শারীরিকভাবে অসমর্থ্য তাদের ছেড়ে দিতে পারত। তারা ভারতীয়দের নিরাপত্তার জন্য কিভাবে হুমকি হয়? তাকে যদি ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হতো সেবা শুশ্রুষা আর চিকিৎসা নেওয়ার জন্য, গত ১৫ বছর ধরে তাকে যে যন্ত্রণা সইতে হয়েছে, তা থেকে হয়ত সে মুক্তি পেত। তার জটিল চিকিৎসার জন্য পাকিস্তান এবং পরে বিদেশে পাঠানো গেলে সে হয়ত আরো কিছুদিন বাঁচত।’

আমার বাবার বরাবরই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ছিল। তিনি সবকিছুতেই আনন্দ খুঁজে পেতেন। তিনি দেশে ফিরে নবউদ্যোমে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। এর মধ্যে একটি হলো বিয়ে করে ফেলা। যুদ্ধফেরত অনেকেই দ্রুত বিয়ে করে ফেলেন। খলিল সাহেব এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, এটি একটি প্রাকৃতিক চাহিদা ছিল। এতো কিছুর পর একটি ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য পরিবার তৈরি করা। আমার মা ও বাবার পরিবারের মধ্যে আলাপ আলোচনা শুরু হয় ৭৫-এর সেপ্টেম্বর থেকে। আর বাবার বিয়ে হয় ডিসেম্বরে। তখন আমার মা’র বয়স ১৯, তিনি বিএ শ্রেণির ছাত্রী। বাবার ২৯।

খলিল সাহেবও দু’মাস পর বিয়ে করেন। খলিল সাহেব তার বিয়ের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে বলেন, ‘আমাদের দু’পরিবারের মধ্যে যেসব বিষয় নিয়ে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল, নঈম তার সমাধান করেছিল। সেই সামনে এগিয়ে গিয়ে আমাদের পরিবারকে বিয়েতে সম্মত করায়’।
বিয়ের দু’বছরের মাথায় মা প্রথম সন্তান প্রসব করেন। আমার বড়ো ভাই জিসানের জন্ম হয়। দু’বছর পর আমি জন্ম নেই। আমাদের দুই ভাইবোনের শৈশব কেটেছে আনন্দফূর্তি আর এডভেঞ্চারে। বাবা লং ড্রাইভ, নৌ-ভ্রমণ আর পাহাড়ে আরোহণের আয়োজন করতেন। আমাদের ঘর জমজমাট হয়ে থাকত তার গানে। তিনি নোটবুক ভর্তি করে তাঁর প্রিয় গানের কলিগুলো লিখে রাখতেন। এ অভ্যাস তার যুদ্ধবন্দি থাকা অবস্থা থেকে শুরু হয়েছিল। তিনি আমাকে গান গাইতে উদ্বুদ্ধ করতেন। তিনি আমাকে বলতেন, ‘অন্তর থেকে গাও। ভালোবাসা থেকে গাও। অনুভব থেকে গাও’। আমাদের দিনগুলো হাসিগানে ভালোই কেটেছিল। কিন্তু পরিস্থিতি খুব দ্রুত পাল্টে যেতে থাকে ১৯৮৪ সাল নাগাদ। তখন বাবার পোস্টিং ছিল কুয়েটাতে। তিনি কেবল সংখ্যা আর তারিখ মনে রাখতে পারতেন। আর সবই তার স্মৃতিতে ধোঁয়াটে লাগত। পরবর্তীতে তাকে করাচিতে পোস্টিং দেওয়া হয়। তখন সেই পরিবর্তনগুলো আরো প্রকট হয়ে ওঠে। আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম বাবার কিছু হয়েছে।

১৯৮৬ সালের ২৩ মার্চ তিনি নেভি হাসপাতালে ভর্তি হন। তার সঙ্গে মানসিক রোগী ও মাদকাসক্তদের রাখা হয়। মানসিক চিকিৎসক তার মধ্যে ভৌতিক সব বৈশিষ্ট্য খুঁজে পান।

তখন আমার ছোট ভাই হাসনাইনের জন্ম হয়। মা খুব কষ্ট করে বাবার অসুস্থতার খবর আমাদের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতেন। সংসারে যে বিপদ নেমে এসেছিল তাও তিনি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তারপরেই তিনি জানতে পেরেছিলেন যে, আমার বাবার বাম চোখে কোনো দৃষ্টি নেই। এটা বলার আগে ডাক্তার সাহেব জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপনার স্বামীর ভয়াবহ কোনো সমস্যা হলে আপনি কি তাকে ছেড়ে চলে যাবেন? আমি অবাক হয়েছিলাম, বাবা নিজে কেন এ কথাটি বলেননি। আমার ধারণা তিনি পরিবারের বোঝা হতে চাননি। চাননি পরিবারের লোকজনের কাছে করুণার পাত্র হতে।

বাবাকে দেখতে যাওয়া মায়ের জন্য বেশ কষ্টকর অভিজ্ঞতা ছিল। গার্ডরা সব কিছু পরীক্ষা করে দেখত। মনে হতো তিনি কোনো হাসপাতালে নয় কারাগারে প্রবেশ করছেন। মনে হতো এখানে চিকিৎসা নয় শাস্তি দেওয়ার জন্য আনা হয়েছে। সেখানে বাবা ছয় মাস ছিলেন। এ সময় তার উপর মারাত্মক মানসিক চাপ গিয়েছিল। তারপর থেকে তার হাসপাতালভীতি হয়ে গিয়েছিল।

সাদা কালো ছবিটি ১৯৭৪ সালে ভারত থেকে ফেরার পর তোলা। আর রঙিন ছবিটি ১৯৮৬ সালে তোলা।

১৯৮৭ সালে তিনি লাহোর ফিরে আসেন। সেখানে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। এক বছর তাঁর উপর সামরিক পোশাক পরার নিষেধাজ্ঞা ছিল। তখন তিনি পেশাগত অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যান। একসময় বাধ্য হয়ে অবসরে যাওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু তাঁর সে আবেদনও বাতিল হয়ে যায়। তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ বলে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাঁর নেই বলে জানানো হয়। ১৯৮৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে আমরা পারিবারিকভাবে তার চিকিৎসা শুরু করি। চিকিৎসকরা তাকে ‘বিহাভিরায়িল থেরাপি’ না দিয়ে ওষুধের উপর বেশি জোর দিলেন। তাকে সিজোফ্রেনিয়া এবং হেলুসিনেশনের চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাতে তার সামান্য উন্নতি হলেও পরে সেটা কাজ দেয়নি।

পরের বছর তিনি শেষমেশ আর্মি থেকে অবসর নেন। কিন্তু পরে আর তিনি কোনো কাজ পেলেন না। তিনি তার বন্ধুদের সঙ্গ দিতেন এবং আমার এক আঙ্কেলের টেক্সটাইল মিলে গিয়ে মাঝে মাঝে বসতেন। কিছুদিন পর তিনি আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের রিয়েল এস্টেট বিভাগে চাকরি পেলেন। সহকর্মীরা তাকে তার সীমাবদ্ধতা বুঝেই গ্রহণ করল। তিনি কিন্তু ঠিকমতো তার চাকরিটা করতে পারতেন না।

মুস্তাফার বয়স যখন সাড়ে তিন বছর, সে ম্যানিনজাইটিসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। ডাক্তার তার পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। তারা আমার বাবা-মাকে জানালেন, যদিও বা মুস্তাফা সুস্থ হয় তার শারীরিক কিংবা মানসিক অক্ষমতা দেখা দিতে পারে। অথবা উভয়ই হতে পারে। সেসময় আমার মা মুস্তাফার সেবা শুশ্রুষা করতেন, আর বাবা আমাদের দেখে রাখতেন। আমাদের পরিবার ততদিনে দুঃখের চোরাবালিতে ডুবে গেছে। কিন্তু বাবা হাসি গান আর গল্পে আমাদের মুখরিত করে রাখতে চাইতেন। একদিন তিনি আমাদের এয়ার শো দেখতে নিয়ে যান। তিনি গাড়ির পেছনে বসে কথা বলছিলেন। হঠাৎ তার কথা থেমে যায়। শুধু গোঙানির আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। কোনো পূর্বলক্ষণ ছাড়াই হঠাৎ তিনি কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেন। আমার ভাইবোনরা অভয় দেওয়ার জন্য আব্বাকে বললাম, ‘আব্বা আমরা তোমার কথা বুঝতে পারছি। বাসায় ফেরার পর সব ঠিক হয়ে যাবে।’

যাই হোক, আমার মা সেই কঠিন পরিস্থিতিতে সব কিছু একহাতে সামাল দিয়েছিলেন। আমার বাবার অসুস্থতা, চিকিৎসা না নেওয়ার একগুঁয়েমি, তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, ছোটভাইকে সুস্থ করে তোলার লড়াই। সবকিছু মা নীরবে করে গেছেন। পরবর্তীতে বাবা বাকশক্তি ফিরে পান। মুস্তাফাও জমের দুয়ারে আড়ি দিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠে। পরে অবশ্য তার অসুস্থতার কোনো দীর্ঘমেয়াদী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। ১৯৯৩ সালের ডিসেম্বরে প্রথম বাবার মৃগীরোগের লক্ষণ দেখা দিলো। তখন তিনি তার কর্মস্থলে। ফলে খুব ভুগেছিলেন। তিনি গাড়ি চালানো বন্ধ করে দেন। পরিবারের দায়িত্ব স্ত্রী ও বড়পুত্রের কাছে ছেড়ে দিতে হয়। তিনি মনে মনে খুব ভেঙে পড়েছিলেন। কিন্তু সেটা তিনি কখনো প্রকাশ করেননি। ১৯৯৪ সালের মার্চে ডাক্তার তার পুরো বডি চেকআপের পরামর্শ দেন। সঙ্গে মাথার সিটি স্ক্যান। লাহোর জেনারেল হাসপাতালে তার সিটি স্ক্যান করা হয়। রিপোর্ট দেখে ডাক্তাররাই অবাক হয়ে যান। এ লোক কীভাবে বেঁচে আছে! সিটি স্ক্যানে ধরা পড়ে তার মাথায় অসংখ্য মর্টার সেলের টুকরো। নিউরোসার্জন ও সাইকিয়াট্রিস্টদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নেয় বাবার আলঝেইমারস হয়েছে। নিউরোসার্জন জানালেন মাস ছয়েকের মধ্যে তিনি জড়বৎ হয়ে যাবেন।

ডাক্তারদের ভবিষদ্বাণী শুনে মা ঠিক করলেন আর প্রাইভেট চিকিৎসা করাবেন না। তিনি বাবাকে লাহোর মিলিটারি হাসপাতালে নিয়ে যান। বাবাকে সাইকিয়াট্রিক বিভাগে ভর্তি করা হয়। ডাক্তাররা তার রোগ হিসেবে ডিমনেশিয়া, আলঝেইমার্স ও পার্কিনসনকে চিহ্নিত করে। তারা জানান, মস্তিষ্কের ক্ষতিসাধন না করে বাবার মাথা থেকে মর্টার সেলের টুকরোগুলো বের করা অসম্ভব। তারা আরো জানান বাবার অসুস্থতা দিন দিন বাড়বে। একসময় বাবার কথা বলা ও হাঁটাচলার শক্তি চলে যায়।

আমরা একটু ভালো কিছু সংবাদের জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকতাম। ১৯৯৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমি মেট্রিক পরীক্ষা দিতে বসি। সেবছর নভেম্বরে বাবা ৩৬ ঘণ্টার জন্য ইপিলেপটিক ফিট হয়ে যান। ডাক্তার আমাদের বললেন আরো খারাপ কিছুর জন্য প্রস্তুত হতে। কিন্তু আমার বাবা একজন প্রকৃত যোদ্ধা ছিলেন। বাবা ধীরে ধীরে সুস্থ হতে লাগেন। তার বাক্ ও চলৎশক্তি ধীরে ধীরে ফিরে আসতে লাগল।

১৯৯৫ সালের একদিন আমরা সবাই বাসার ড্রইং রুমে বসে আছি। বাবা গুনগুন করে গান গাচ্ছিলেন। আমরা খেলছিলাম একটি কফি টেবিল ঘিরে। বাবা হঠাৎ সোফা জাপটে ধরলেন। কিন্তু তাল সামলাতে না পেরে মেঝেতে পড়ে গেলেন। তার শরীর গুটিয়ে গেল। মুখ থেকে গ্যাজলা বেরুতে শুরু করল। চোখ দুটো বড়ো বড়ো হয়ে কপালের দিকে উঠে এলো। মা আমাদের পারিবারিক ডাক্তারকে ডেকে পাঠালেন। তিনি রাস্তার ওপাশেই থাকতেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ছুটে এলেন এবং বাবাকে একটি ইঞ্জেকশন পুশ করলেন। কিন্তু আমার আব্বার শরীর দ্রুত ভয়ানকভাবে কাঁপতে লাগল। আমাদের আরেকজন পরিবারিক বন্ধু ডাক্তার ছিলেন, তিনি এনেসথিয়েটিস্ট, তাকেও ডাকা হলো।

২০০০ সালের গ্রীষ্মকালে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। ডাক্তাররা জানাল আমি যক্ষায় আক্রান্ত। সেটা আসলে ভুল ছিল। আমাদের পরিবারে কোনো বিপর্যয় এলে বাবা প্রার্থনায় বসে পড়তেন। ২৫ আগস্ট এরকম প্রার্থনারত অবস্থায় আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি ১০ সপ্তাহ ছিলে। একজন নিউরোফিজিশিয়ান জানান বাবা সেরেব্রাল অট্রোফাইতে আক্রান্ত। এর কারণে আলঝেইমার্স ও ডিমেনশিয়া দেখা দিয়েছি। ৩০ অক্টোবর বাবাকে দেখতে আমি হাসপাতালে যাই। যেমন প্রতিদিন যাই। নার্সরা বাবাকে চেক করছিল। আমি বাইরে অপেক্ষা করছিলাম। নার্সরা চলে যাওয়ার পর বাবা সন্ধ্যায় নামাজ পড়ছিলেন। বাবা সাধারণত নামাজে খোদার কাছে প্রার্থনা করতেন তাকে সুস্থ করে দেওয়ার জন্য। অথচ তিনি সেদিন খোদার কাছে আর্জি জানালেন, যা তার জন্য ভালো হয়, তাই যেন করেন উপরওয়ালা। সেদিনই সন্ধ্যা ৬ টা ৩৬ মিনিটে বাবা মারা যান।

 

মূল: সুননিয়া আহমেদ পীরজাদা
সূত্র: আল জাজিরা অনলাইন, ১৬ মে ২০১৫

ঢাকা/তারা

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়