ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

হজ কাফেলার ‘জিয়ারাহ্‌’

এস এম জাহিদ হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২০, ২৭ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ১৪:৩৫, ২৭ মার্চ ২০২৪
হজ কাফেলার ‘জিয়ারাহ্‌’

জাবালে সাওর পর্বত

ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতির অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিবহন করছে সৌদি আরবের মক্কা নগরী ও এর আশেপাশের স্থান। হজের কাফেলার সঙ্গে এমন কয়েকটি স্থান দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পরে যারা হজের কাফেলা নিয়ে যায় তাদের একটি রুটিন প্রোগ্রাম হচ্ছে ‘জিয়ারাহ্‌’। যা এক ধরনের ভ্রমণ। এই জিয়ারাহ্-এর অংশ হিসেবে ইসলামী সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে হাজি সাহেদের নিয়ে যাওয়া হয়। সেটার অংশ হিসেবে প্রথমেই গেলাম জাবালে সুর বা সাওর পর্বত দেখতে।  এই পর্বতকে গারে সাওরও বলা হয়। হযরত মুহাম্মাদ (স.) হিজরতের সময় জাবালে সুরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। জানা যায়, হয়রত মুহাম্মদ (সা.) এই পর্বতের গুহার ভেতর অেবস্থান করেছিলেন। গুহার মুখে কবুতর বাসা বেঁধেছিল, মাকড়সা জাল বুনেছিল যাতে শত্রুপক্ষ মুহাম্মদ (স.) কে খুঁজে না পায়। তো, সেই জায়গায় গেলাম। ঘুরে দেখলাম। এখনও সেখানে অনেক কবুতর দেখা যায়। সেগুলোকে সবাই আদর যত্ন করে খাওয়ায়। কেউ কেউ ওখানে গিয়ে দুই-এক রাকাত নামাজও আদায় করে। সে সব করে আমরা আবার রওনা দিলাম।

মসজিদে নামিরাএরপরে গেলাম আরাফাত ময়দানে। ময়দানটি মক্কা নগরী থেকে ১৩-১৪ কিলোমিটার পূর্বে জাবালে রহমতের পাদদেশে অবস্থিত। এটি দৈর্ঘ্যে দুই কিলোমিটার এবং প্রস্থেও দুই কিলোমিটার।  এই সীমানার মধ্যেই রয়েছে মসজিদে নামিরা। যেখান থেকে হজের দিন খুতবা দেওয়া হয়। আমরা মসজিদে নামিরায় দুই রাকাত নামাজ আদায় করলাম এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলাম।

এরপরের গন্তব্য ছিল মসজিদে খায়ের। যে জায়গাটা বিখ্যাত হয়ে আছে হযরত আদম(আ) এবং বিবি হাওয়া (আ.) এর জন্য। আরাফাত শব্দের অর্থ মিলন। এখানে দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর আদম হাওয়ার মিলন হয় এরপরে তারা যে জায়গায় দুই রাকাত নামাজ পড়েন সেই জায়গায় পরবর্তীতে গড়ে উঠেছে মসজিদে খায়ের।

মসজিদে খায়ের।যে পথে আমরা মক্কা নগরী থেকে বের হয়েছি, সেই পথে ফিরে না এসে বিকল্প পথে রওনা দিলাম। তখন দেখলাম মুসলিম সভ্যতার অমর কীর্তি নহরে জুবাইদা। এক সময় মক্কায় খাবার পানি অভাব দেখা দিয়েছিল। বিশেষত মিনা এবং আরাফাতে পানির কষ্ট দেখা দেয়। তখন বাদশাহ্ হারুন উর রশীদ এক ধরনের খাল কাটেন। সেই খালটা একদম ইরাক থেকে মিনা পর্যন্ত নিয়ে এসেছিলেন। ওই খালের অংশবিশেষ এখনও আছে। কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত চোখে পড়ে।

নহরে জুবাইদা। ইসলামের ইতিহাসের সঙ্গে এই নিদর্শনগুলোর নাম জড়িত। এগুলো দেখাকে বড় সৌভাগ্যই মনে  হলো। এরপর মক্কায় ফিরে গেলাম সেখানে গিয়ে মসজিদে হারামে জোহরের নামাজ আদায় করলাম।

/লিপি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়