ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

‘দেশে দেড় কোটি মানুষ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:০০, ২৬ মে ২০২২  
‘দেশে দেড় কোটি মানুষ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত’

দেশে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সঠিক কোনো তথ্য নেই। তবে বিভিন্ন গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, দেশে প্রতি বছর আট থেকে ১৫ হাজার শিশু জন্মগতভাবে থ্যালাসেমিয়া রোগী। এ সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ ছাড়াও শতকরা ১০-১২ ভাগ মানুষ থ্যালাসেমিয়া এবং হিমোগ্লোবিন-ই বাহক। অর্থাৎ দেশে প্রায় দেড় কোটি মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের জিন বহন করে চলছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ মে) বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি ও হেমাটোকেয়ারের যৌথ উদ্যোগে ‘থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ জাতীয় পরিকল্পনায় বাহক নির্ণয়ের গুরুত্ব’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, থ্যালাসেমিয়া একটি রক্তস্বল্পতা জনিত মারাত্মক বংশগত রোগ। বাবা এবং মা উভয়ই এই রোগের জিন বহন করলে সন্তানরা এই রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণের সম্ভাবনা থাকে অনেক বেশি। আর তাই বাংলাদেশের জন্য থ্যালাসেমিয়া একটি গুরুতর সমস্যা।

বক্তারা বলেন, এটি মূলত জিনগত ও জন্মগত একটি রোগ। আক্রান্ত রোগীদের সারাজীবন চিকিৎসার ওপর নির্ভর করতে হয়। এদেরকে বার বার রক্ত পরিসঞ্চালন করা, আয়রন কমানোর ওষুধ খেতে হয়। এ রোগের সামষ্টিক চিকিৎসা ব্যয় অনেক বেশি। যেহেতু বংশগত রোগ তাই পিতা ও মাতা উভয়েই যদি থ্যালাসেমিয়ার বাহক হন তবে অনাগত সন্তানেরও তা হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। 

তবে থ্যালাসেমিয়ার বাহকের নিজের তেমন কোনো শারীরিক সমস্যা থাকে না বলে বাহক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময়ই সচেতনতা ও জ্ঞানের অভাব থাকে। অথচ রক্তের হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রফরেসিস পরীক্ষার মাধ্যমে সহজেই এটি নির্ণয় করা সম্ভব বলেও জানান বক্তারা।

থ্যালাসেমিয়া নির্মূল করতে হলে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে বক্তারা আরো বলেন, বিয়ের আগে সবার রক্তের এই পরীক্ষা করে জেনে নিতে হবে, তিনি থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক কিনা? বাহক নির্ণয়ের পাশাপাশি থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য দেশে পর্যাপ্ত ও উন্নত মানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া মানুষকে আরো সচেতন করতে হবে যাতে তারা তাদের বাহক নির্ণয় পরীক্ষা করেন এবং বাহকে-বাহকে বিয়ে বন্ধ করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, থ্যালাসেমিয়ামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে বাহক নির্ণয়ের কোনো বিকল্প নেই। সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলে যেকোনো অসাধ্য সাধন করা সম্ভব। আমাদের সবার উচিত থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধের জন্য একযোগে কাজ করা।

অনুষ্ঠানে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতির নির্বাহী পরিচালক ডা. এ কে এম একরামুল হোসেন স্বপন, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালের ব্যবস্থপনা পরিচালক মোহাম্মদ এবাদুল করিম, এমিরেটাস অধ্যাপক এবং প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক এবং হেমাটোলজি সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. এম এ আজিজ প্রমুখ।

মেয়া/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়