ঢাকা     বুধবার   ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ২ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে যেসব স্থানে

রাসেল পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০৩, ২৬ জানুয়ারি ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে যেসব স্থানে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়ার কিছু দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ২০১৬ সালের প্রথম মাসে ২২ থেকে ২৪ জানুয়ারি তিন দিনের শৈত্যপ্রবাহ ও তুষারপাতের সময় তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে পড়ে যায়।

 

এরইমধ্যে খবরে আমরা জানিয়ে দিয়েছি তাপমাত্রা পড়ে যাওয়ায় পূর্ব এশিয়ায় হাতহতসহ জনজীবন কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবার জানাচ্ছি কোন কোন স্থানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব আমরা উপলব্ধি করতে পারব হয়তো।

 

মঙ্গোলিয়া

মহাবীর চেঙ্গিস খানের দেশ মঙ্গোলিয়ার মূল ভূভাগে তাপমাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে নিচে নেমে যায়। দেশটির রাজধানী উলানবাটোরসহ দেশজুড়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। মঙ্গোলিয়ায় রোববার সর্বকালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এ দিন তাপমাত্রা ছিল মাইনাস (৪৬.৮) ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশটি শীতপ্রধান। শীতকালে এই দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রা মাইনসা (-) ৩৩ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে যায়। তবে মাইনাস (-) ৪৬.৮ ডিগ্রি এবারই প্রথম রেকর্ড করা হয়েছে।

 

হংকং

গত রোববার হংকংয়ের তাপমাত্রা ছিল ৩.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ৬০ বছরে যা সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। হংকংয়ের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ ‘তাই মো শানে’ মাইনাস (-) ৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এর আগে তাই মো শানে কখনো এত কম তাপমাত্রা অনুভূত হয়নি।

 

তাইওয়ান

পূর্ব এশিয়ায় ২২ থেকে ২৪ জানুয়ারি বয়ে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাইওয়ান। হঠাৎ তাপমাত্রা নিচে নেমে যাওয়ায় ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে দেশটির প্রায় ৯০ জন। গত রোববার তাইওয়ানের রাজধানী তাইপের তাপমাত্রা ছিল ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গত ৪৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড।

 

 

দক্ষিণ কোরিয়া

পূর্ব এশিয়ায় সাম্প্রতিক শৈত্যপ্রবাহ ও তুষারপাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া অন্যতম। দিক্ষণ কোরিয়ায় ঠান্ডা বিরল কিছু নয়। তবে রোববার তাপমাত্রা সবচেয়ে নিচে নেমে যায়। এদিন রাজধানী সিউলের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় মাইনাস (-) ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

 

জেজু দ্বীপ, দক্ষিণ কোরিয়া

জেজু দ্বীপ মূলত একটি আগ্নেয়দ্বীপ, যা বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত। জেজু দ্বীপে রোববার শৈত্যপ্রবাহ হানা দেয়। শীতকালে এখানকার তাপমাত্রা সাধারণত শূন্য ডিগ্রির নিচে নামে না। তবে রোববার জেজু দ্বীপের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় মাইনাস (-) ৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এখানকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড।

 

ভিয়েতনাম

সাম্প্রতিক শৈত্যপ্রবাহ ভিয়েতনামের কিছু অংশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে সবেচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজধানী হ্যানয়। গত রোববার হ্যানয়ের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

 

তুষারপাতের রেকর্ড

এসব স্থানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড করা হলেও চীনের দুটি প্রদেশে এবার তুষারপাত হয়েছে। গুয়াংঝৌ প্রদেশে এর আগে কখনো তুষারপাত হয়নি। শেনঝেন প্রদেশে অনেক বছর পর এবার তুষারপাত হয়েছে। এ দুটি ঘটনাকে জলবায়ু পরিবর্তনের বৈরী প্রভাব বলা যায়।

 

পূর্ব এশিয়ার শৈত্যপ্রবাহের কারণে আশপাশের অঞ্চলে তাপমাত্রা কমে যায়। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ায় কম তাপমাত্রা বিরাজ করছে।

 

যুক্তরাষ্ট্রের তুষারঝড়, তুষারপাত এবং তুষারবৃষ্টি বিশ্ববাসী দেখেছে। বরফের নিচে ঢাকা পড়েছে দেশটির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চল। বলতে দ্বিধা নেই, এসব জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। বিজ্ঞানীদের ভাষ্য, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শীত ও গ্রীষ্মের চরমতা দেখা দিচ্ছে। হচ্ছেও তাই। প্রতিবছর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে, যা পৃথিবীর অস্তিত্বের জন্য অশনি সংকেত।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ জানুয়ারি ২০১৬/রাসেল পারভেজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়