ঢাকা     বুধবার   ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ২ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া: তৈয়্যব

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১০, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১৫:১৪, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫
ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া: তৈয়্যব

বুধবার চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, ‍“ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, এটি রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া।”

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এই কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি), তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (ইডিজিই প্রকল্প) এবং বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় ‘বিল্ডিং ট্রাস্ট অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি থ্রু ডেটা গভর্ন্যান্স’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনে তৈয়্যব বলেন, “দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার।”

বিশেষ সহকারী জানান, দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির অভাব বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমস্যা হচ্ছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

সরকার ইতোমধ্যে সাইবার সেফটি, ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা ও জাতীয় ডেটা গভর্ন্যান্স— এই তিনটি আইনি ভিত্তি গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে জানিয়ে তৈয়্যব বলেন, “এগুলো ভবিষ্যৎ ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচারের (DPI) মূল স্তম্ভ হবে।”

টেলিযোগাযোগ ও ডিভাইস অ্যাক্সেস প্রসঙ্গে তৈয়্যব বলেন, “ডিজিটাল সেবা তখনই কার্যকর হবে, যখন নাগরিকের হাতে নিরাপদ ডিভাইস ও সমান নেটওয়ার্ক পৌঁছাবে শহর ও গ্রাম নির্বিশেষে।”

তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে প্রতিটি নাগরিকের একটি ডিজিটাল ডেটা ওয়ালেট থাকবে, যেখানে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তথ্য সুরক্ষিত থাকবে এবং নাগরিকের সম্মতিতেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডেটা ব্যবহার করা যাবে। আইনি ও অবকাঠামোগত ভিত্তি ছাড়া ডিজিটাল রূপান্তর কেবল একটি বিভ্রম আমরা সেই ভুল পথ থেকে সরে এসে সঠিক ভিত্তির কাজ শুরু করেছি।”

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, “কার্যকর ডেটা গভর্ন্যান্স কেবল নীতিমালা প্রণয়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এর জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, আন্তঃখাত সমন্বয় এবং সুস্পষ্ট জবাবদিহি কাঠামো। সরকার ও বেসরকারি খাতে ডিজিটাল সেবার পরিসর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বশীল ডেটা ব্যবহার, নিরাপত্তা এবং কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা জনআস্থা অর্জন ও টেকসই ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

ডিজিটাল যুগে ডেটা সুরক্ষা, ব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বশীল ব্যবহারের বিষয়গুলো ছিল সম্মেলনে আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু।

সম্মেলনে তিনটি আলাদা অধিবেশনে ডেটা সুরক্ষা নীতিমালার বাস্তব প্রয়োগ, আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে বাংলাদেশের ডেটা ব্যবস্থাপনার তুলনা এবং ডেটা ব্যবস্থাপনায় পেশাদার হিসাববিদদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়। এসব আলোচনায় সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশ্বব্যাংক ও ইউএনডিপির মতো আন্তর্জাতিক সংস্থা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং আইন ও প্রযুক্তি খাতের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সম্মেলনে বক্তারা বলেন, “সরকার, নিয়ন্ত্রক সংস্থা, পেশাদার সংগঠন ও বেসরকারি খাত একসঙ্গে কাজ করলে একটি শক্তিশালী ও নির্ভরযোগ্য ডেটা গভর্ন্যান্স ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব, যা আস্থা বাড়াবে এবং দেশের টেকসই উন্নয়নে সহায়ক হবে।”

সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, এনডিসি, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টস (আইএফএসি) এর সভাপতি  জ্যঁ বোকু এবং বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান অঞ্চলের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যঁ পেসমে সহ সরকারি নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক সংস্থা, পেশাদার হিসাববিদ, আইন ও প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

ঢাকা/এএএম/রাসেল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়