সাইপ্রাসের ১৪ নাগরিককে নির্যাতনের পর হত্যা করেছিল ব্রিটিশরা
সাইপ্রাসে ১৯৫০ এর দশকের শেষ দিকে সশস্ত্র বিদ্রোহের সময় অন্ততপক্ষে ১৪ জনকে নির্যাতনের পর হত্যা করেছিল ব্রিটিশ বাহিনী। বিষয়টি প্রকাশের পর ব্রিটেনের ঔপনিবেশিক ইতিহাসের আরেকটি মর্মান্তিক অধ্যায় উন্মোচিত হলো বলে শনিবার জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
পোস্টমর্টেম ও মর্গ রেকর্ডের পাশাপাশি সাইপ্রাসের আর্কাইভের অপ্রকাশিত তথ্য এবং ব্রিটেনের সাবেক সেনা ও বিদ্রোহী যোদ্ধাদের কাছ থেকে পাওয়া সাক্ষ্য থেকে ঔপনিবেশিক আমলের নির্যাতনের নতুন এই চিত্র পাওয়া গেছে। গ্রীক ভাষায় প্রকাশিত ফোরটিন ক্রাইমস অফ এম্পায়ার নামের একটি বইতে এই প্রমাণগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে। বইটির লেখক এলিনা স্ট্যামাতিউ এর জন্য তিন বছর গবেষণা করেছেন।
এতে দেখা গেছে, ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর বন্দিদের মৃত্যু হয়েছে। এসব বন্দির বয়ষ ১৭ থেকে ৩৭ বছরের মধ্যে। এদেরকে ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অফ সাইপ্রিয়ট ফাইটার্স নামে পরিচিত একটি আধাসামরিক সংস্থার সদস্য সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এই সংগঠনটি সাইপ্রাসে ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণ উৎখাত করার জন্য গেরিলা অভিযান পরিচালনা করেছিল।
সাইপ্রাসের ন্যাশনাল আর্কাইভস থেকে পাওয়া ছবিতে বন্দিদের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে। কিছু ছবিতে বন্দিদের যৌনাঙ্গে আঘাতের চিহ্নও দেখা গেছে।
এক বন্দির মৃত্যুর সময় উপস্থিত ছিলেন এমন এক জন বলেছেন, ‘আমি দেখেছি সেনারা নিকোসকে (জর্জিউ) তার সেল থেকে প্রায় অচেতন অবস্থায় টেনে নিয়ে যাচ্ছে, তার মুখ থেকে ফেনা বের হচ্ছিল। সে মারা যাওয়ার সময় সিংহের গর্জনের মতো ভয়ঙ্কর শব্দ করছিল। তারা তাকে বাইরে সিমেন্টের মেঝেতে ফেলে রেখেছিল যাতে সে মারা যায়।’
ব্রিটিশ সামরিক বাহিনী সাইপ্রাস দখলের সময় নির্যাতন করেছিল বলে বছরের পর বছর ধরে দাবি করা হচ্ছে। তবে এবারই প্রথম তাদের বিরুদ্ধে ১৯৫৫ থেকে ১৯৫৯ সালের বিদ্রোহের সময় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠলো।
২০১৯ সালে যুক্তরাজ্য সরকার সাইপ্রাসের ৩৩ জন নাগরিককে ১০ লাখ পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দিয়েছিল। এরা সবাই ব্রিটিশ বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। এদের মধ্যে এক নারীও ছিলেন। ওই সময় তার বয়স ছিল ১৬ বছর। বারবার তিনি ব্রিটিশ সেনাদের ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন।
ঢাকা/শাহেদ