ঢাকা     মঙ্গলবার   ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আলজাজিরার ৫ সাংবাদিক নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫৭, ১১ আগস্ট ২০২৫   আপডেট: ১০:২৮, ১১ আগস্ট ২০২৫
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আলজাজিরার ৫ সাংবাদিক নিহত

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার পাঁচ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। রবিবার (১০ আগস্ট) গভীর রাতে গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের প্রধান ফটকের কাছে সাংবাদিকদের জন্য স্থাপিত একটি তাঁবুর ওপর এই হামলা চালানো হয়। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দুই প্রতিবেদক ও তিন ক্যামেরাপার্সন।

সোমবার (১১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। 

আরো পড়ুন:

আলজাজিরার তথ্য অনুযায়ী, নিহতরা হচ্ছেন প্রতিবেদক আনাস আল-শরীফ ও মোহাম্মদ কুরাইকেহ এবং ক্যামেরাপার্সন ইব্রাহিম জাহের, মোহাম্মদ নুফাল ও মোয়ামেন আলিওয়া। তারা সবাই হাসপাতালে অবস্থানরত সাংবাদিকদের জন্য নির্ধারিত তাঁবুর ভেতরে ছিলেন।

আলজাজিরা এক বিবৃতিতে এ ঘটনাকে ‘সাংবাদিকতার স্বাধীনতার ওপর পরিকল্পিত ও প্রকাশ্য হামলা’ এবং ‘লক্ষ্যবস্তু হত্যা’ বলে অভিহিত করেছে।

হামলার কিছুক্ষণ পরেই ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানায়, তারা আল-শরীফকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে, কারণ তিনি হামাসের একটি সশস্ত্র সেলের প্রধান বলে দাবি করা হয়। তবে নিহত বাকি চার সাংবাদিকের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি আইডিএফ।

আলজাজিরার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোহাম্মদ মোয়াওয়াদ বিবিসিকে বলেন, “আল-শরীফ অনুমোদিত সাংবাদিক ছিলেন এবং গাজা উপত্যকায় কী ঘটছে বিশ্বকে তা জানানোর জন্য তিনি শক্তিশালী কণ্ঠ ছিলেন। তারা ফ্রন্টলাইনে ছিলেন না- সাংবাদিকদের তাঁবুতেই ছিলেন।”

মোয়াওয়াদ আরো বলেন, আসলে ইসরায়েলি সরকার গাজার ভেতর থেকে রিপোর্টিং করা যেকোনো চ্যানেলের কভারেজ বন্ধ করতে চাইছে। এটি এমন কিছু যা আমি আধুনিক ইতিহাসে আগে কখনও দেখিনি।”

২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের গাজায় স্বাধীনভাবে রিপোর্ট করার অনুমতি দেয়নি। তাই, অনেক সংবাদমাধ্যম কভারেজের জন্য স্থানীয় সাংবাদিকদের ওপর নির্ভর করে।

হামলার আগে আল-শরীফ তার ‘এক্স’ অ্যাকাউন্টে গাজায় তীব্র গোলাবর্ষণের খবর পোস্ট করেছিলেন।

আইডিএফ দাবি করেছে, আল-শরীফ সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে রকেট হামলায় যুক্ত ছিলেন এবং তার সামরিক সংশ্লিষ্টতার প্রমাণস্বরূপ পূর্বে গোয়েন্দা তথ্য প্রকাশ করা হয়েছিল। আইডিএফ আরো জানায়, হামলার আগে তারা বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি কমাতে নির্ভুল অস্ত্র, আকাশ থেকে নজরদারি এবং অতিরিক্ত গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করেছে।

গত মাসেই আল জাজিরা, জাতিসংঘ এবং কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) আল-শরীফের সুরক্ষা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছিল।

সিপিজের প্রধান নির্বাহী জোডি গিন্সবার্গ বিবিসিকে বলেন, “ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাদের হত্যা করা সাংবাদিকদের সন্ত্রাসী বলে প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে।”

তিনি বলেন, “এটি এমন একটি নমুনা যা আমরা ইসরায়েলে দেখেছি- কেবল বর্তমান যুদ্ধে নয়, পূর্ববর্তী দশকগুলোতে- যেখানে সাধারণত একজন সাংবাদিককে ইসরায়েলি বাহিনী হত্যা করে এবং তারপর ইসরায়েল বলবে যে তারা সন্ত্রাসী, তবে সেই দাবির সমর্থনে খুব কম প্রমাণ সরবরাহ করে।” 

সিপিজের হিসাবে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত ১৮৬ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়