ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩০, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১৫:০৬, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন

গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েল গণহত্যা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন। নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইনে গণহত্যার যে পাঁচটি ধারা রয়েছে, তার মধ্যে চারটি ধারা অনুযায়ী ২০২৩ সালে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েল সেখানে গণহত্যা চালিয়েছে। খবর আল-জাজিরা ও বিবিসির।  

ধারা ৪টি হলো- কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা, তাদের গুরুতরভাবে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি করা, পরিকল্পিতভাবে ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি তৈরি করা এবং জন্ম প্রতিরোধ করা।

আরো পড়ুন:

৭২ পাতার তদন্ত প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়েছে। এই তদন্ত প্রতিবেদনকে ‘এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের সবচেয়ে প্রামাণ্য ফলাফল’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে ইসরায়েলি নেতাদের বক্তব্য এবং সেনাদের কর্মকাণ্ডকে গণহত্যার অভিপ্রায়ের (ইচ্ছার) প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশনের সভাপতি নাভি পিল্লাই মঙ্গলবার আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমরা ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট (আইজ্যাক হার্জোগ), প্রধানমন্ত্রী (বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু) এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী (ইয়োভ গ্যালান্ত)-কে তাদের বক্তব্য ও তাদের দেওয়া আদেশের ভিত্তিতে চিহ্নিত করেছি।”

তিনি আরো বলেন, “যেহেতু এই তিন ব্যক্তি রাষ্ট্রের এজেন্ট ছিলেন, আইন অনুসারে, রাষ্ট্রকে দায়ী করা হয়। তাই আমরা বলি যে রাষ্ট্রই (ইসরাইল) গণহত্যা চালিয়েছে।”

প্রতিবেদন অনুসারে, কমিশন দেখেছে যে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বক্তব্যের পাশাপাশি, ‘পরিস্থিতিগত প্রমাণ’ ছিল, যার ফলে তাদের গণহত্যার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কমিশন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, ‘গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিদের সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার জন্য ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এবং ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনীর গণহত্যার উদ্দেশ্য রয়েছে।’

তবে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে দেওয়া এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, এটি ‘বিকৃত ও মিথ্যা।

ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র কমিশনের তিন বিশেষজ্ঞকে ‘হামাসের প্রতিনিধি’ আখ্যা দিয়ে অভিযোগ করেছেন, তারা পুরোপুরি ‘হামাসের মিথ্যা প্রচারণার ওপর নির্ভর করেছেন- যা ইতোমধ্যেই খণ্ডিত হয়েছে।’

‘ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা’

জাতিসংঘের তদন্তে দেখা গেছে, ইসরায়েলি সেনারা ‘ভয়াবহ অস্ত্র’ ব্যবহারের মাধ্যমে গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ‘ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা’ করেছে।

জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন প্রতিবেদনে ‍উল্লেখ করেছে, “কমিশন তাই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করে গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি নির্মূলের মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে।”

যদিও কোনো কাজকে গণহত্যা হিসেবে গণ্য করার জন্য ভুক্তভোগীর সংখ্যা প্রাসঙ্গিক নয়, তবে কমিশন উল্লেখ করেছে যে, ‘ভুক্তভোগীর সংখ্যা গণহত্যার উদ্দেশ্য প্রতিষ্ঠার জন্য বিবেচনা করা যেতে পারে।’

সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক  হামলায় এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৯০৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ৬৪ হাজার ৯২৬ জন আহত হয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়