ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বমিবমি ভাবের তিন বিস্ময়কর প্রাকৃতিক চিকিৎসা

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৩০, ৭ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বমিবমি ভাবের তিন বিস্ময়কর প্রাকৃতিক চিকিৎসা

প্রতীকী ছবি

এস এম গল্প ইকবাল : বমিবমি ভাব কখনোই স্বস্তিদায়ক কিছু নয়। প্রায়শ বমির আগে বমিবমি ভাবের উদ্রেক হয়ে থাকে। বমিবমি ভাব স্বস্তিকর না হলেও এটি হলো বডি উইজডমের একটি প্রকাশ- অর্থাৎ শরীর অন্যান্য উপসর্গের মতো বমিভাবের মাধ্যমেও জানিয়ে দেয় যে, কোনো একটা সমস্যা হয়েছে।

ক্ষুধা লাগলে আমরা বুঝতে পারি যে খাবার খেয়ে পাকস্থলিকে পূর্ণ করা প্রয়োজন, কিন্তু বমিবমি ভাব আমাদেরকে এর উল্টোটা বোঝাতে চায়- পাকস্থলিকে খালি করা প্রয়োজন, অন্যথায় আমাদের স্বাস্থ্য ভুগবে।তাই সবক্ষেত্রে বমিবমি ভাবকে দমিয়ে রাখা উচিত নয়। উদাহরণস্বরূপ, ফুড পয়জনিং হলে এই অনুভূতির কাছে হার মানা উচিত- এমনকি মানসিকভাবেও এটিকে উৎসাহিত করা উচিত, কারণ বমি হলে টক্সিন বা প্যাথোজেন দ্বারা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে এবং তৎক্ষণাৎ কিছুটা ভালো অনুভব করবেন।

এছাড়া অনুপযুক্ত সময়েও বমিবমি ভাব আসতে পারে, যেমন- মোশন সিকনেস। কোনো যানবাহনে যে অসুস্থতা অনুভূত হয় তা-ই হলো মোশন সিকনেস। মোশন সিকনেসের অন্যতম প্রকাশ হলো বমিবমি ভাব অথবা মাথাঘোরা।

বমিবমি ভাব নিরাময়ের জন্য বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যালস রয়েছে, এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো ডাইমেনহাইড্রিনেট। বমিবমি ভাবের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের পার্শপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে মাথাব্যথা, মাথাঘোরা ও তীব্র ঘুমঘুম ভাব উল্লেখযোগ্য। একারণে ড্রাইভার অথবা মনোযোগ ও সতর্ক থাকতে হয় এমন কাজে নিযুক্ত লোকদের জন্য এসব ওষুধ উপযুক্ত নয়।

ওষুধ ছাড়াই বমিবমি ভাব দূর করতে এখানে তিনটি প্রাকৃতিক সমাধান উল্লেখ করা হলো।

* পানির সঙ্গে আদার গুঁড়া খান

গবেষণা সাজেস্ট করছে যে, আদায় বিদ্যমান জিনজারোল নামক উপাদান সেরোটোনিনের মাত্রা হ্রাস করতে পারে। সেরোটোনিন হলো শরীরের অন্যতম প্রধান বমিভাব প্ররোচক নিউরোকেমিক্যাল। বমিভাবের চিকিৎসা বা প্রতিরোধ করতে আধা চা-চামচ আদার গুঁড়া এক গ্লাস পানিতে গুলিয়ে খান অথবা পানির সঙ্গে আদার গুঁড়ার দুটি ক্যাপসুল সেবন করুন। অথবা ক্রিস্টালাইজড জিনজার বা আদার মিছরি, জিনজার চু অথবা হার্ড জিনজার ক্যান্ডি চেষ্টা করতে পারেন।

* আকুপ্রেশার চেষ্টা করুন

আকুপ্রেশার হলো বমিবমি ভাবের আরেকটি ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা, যা খুব ভালো কাজ করে। অনলাইন অথবা ড্রাগস্টোরে পাওয়া যায় এমন কিছু রিস্টব্যান্ডে একটি প্লাস্টিক পেগ থাকে যা সমুদ্রপীড়া উপশম করতে ভেতরের কবজির একটি বিশেষ স্থানে চাপ প্রয়োগ করে। সঠিক প্লেসমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ, তাই এটি কিভাবে ব্যবহার করবেন তা জানতে ব্যান্ডের সঙ্গে থাকা নির্দেশিকা পড়ুন। একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে, এ ব্যান্ডটি হলো গর্ভাবস্থায় সকালের বমিভাবের জন্য সুলভ, নিরাপদ ও কার্যকর চিকিৎসা।

* দূরে তাকান

চলন্ত যানবাহনে এক্সটারনাল পয়েন্ট অব রেফারেন্সের ঘাটতি হলে অথবা দৃষ্টিকে কেবলমাত্র যানবাহনের ভেতর সীমিত রাখলে মোশন সিকনেস হয়ে থাকে। একারণে গাড়িতে কিংবা নৌকায় কোনোকিছু পড়লে কিছু লোকের তীব্র বমিভাব হতে পারে। এই মোশন সিকনেস এড়ানোর একটি সর্বোত্তম উপায় হলো দূরে নিশ্চল কিছুর দিকে তাকানো, যেমন- দিগন্তরেখা। তাই যানবাহনে বমিবমি ভাব হলে বাইরে তাকান- আপনি কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভালো অনুভব করতে শুরু করবেন।

বমিবমি ভাব হলে কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?

আপনি নিজে বমিবমি ভাবের কারণ শনাক্ত করতে না পারলে এবং এই অনুভূতি দু’দিনের বেশি স্থায়ী হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন, কারণ এটি কোনো বেশ মারাত্মক সমস্যার লক্ষণ হতে পারে, যেমন- অন্ত্রের ক্যানসার, পিত্তকোষের রোগ, হার্ট অ্যাটাক ও পেপটিক আলসার। আবার এটি কম মারাত্মক সমস্যারও ইঙ্গিতবাহী হতে পারে, যেমন- মাইগ্রেন অথবা ফ্লু। একজন চিকিৎসকই প্রকৃত কারণ শনাক্ত করতে পারেন অথবা সম্ভাব্য কারণ বাতিল করতে পারেন।

তথ্যসূত্র : প্রিভেনশন

পড়ুন : 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ আগস্ট ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়