ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৯ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

‘তদারকির অভাবে ক্যাবল টেলিভিশন সেক্টরে জটিলতা’

এসটি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৩, ২০ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘তদারকির অভাবে ক্যাবল টেলিভিশন সেক্টরে জটিলতা’

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : দেশের ক্যাবল টেলিভিশন সেক্টরে বর্তমান সময়ে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে- এজন্য সরকারের তদারকি না থাকাকে দায়ী করেছে বাংলাদেশ ক্যাবল টিভি দর্শক ফোরাম।

 

মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশ ক্যাবল টিভি দর্শক ফোরামের সভাপতি এরফানুল হক নাহিদ এবং মহাসচিব আহমেদ সিরাজ এ কথা বলেন।

 

ফোরামের দপ্তর সম্পাদক তারেক সালমান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, র্দীঘদিন ধরে এই সেক্টরে সরকারের কোনো মনিটরিং না থাকার কারণে টেলিভিশন চ্যানেল মালিক, শিল্পী, কলাকুশলি, ক্যাবল অপারেটর এবং বিজ্ঞাপন দাতাদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

 

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সরকারি কোনো অনুমোদন ছাড়াই সম্প্রচারে আছে ২৫টি বাংলা চ্যানেল। বিদ্যমান আইনের তোয়াক্কা না করে এসব চ্যানেলগুলো কতিপয় ক্যাবল অপারেটররা সরকারি কোনো অনুমোদনের কাগজ ছাড়াই ডাউনলিংক ব্যবহার করে ক্যাবলে সঞ্চালন করছে। সরকারের উদাসিনতার কারণে ফ্রি টু এয়ার চ্যানেলের ডাউনলিংক ব্যবহার গত ৬ বছরে বেড়েছে ২ শতাধিক এবং পে-চ্যানেল বেড়েছে ৬০টির বেশি। এসব চ্যানেলের কোনো ডাউনলিংক ব্যবহার অনুমোদন নেই। সরকারে উদাসিনতার কারণে ক্যাবল অপারেটররা অবৈধ উপায়ে বিদেশি চ্যানেল ডাউনলিংক করে ব্যবহার করছে।

 

বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার নির্ধারিত মাসিক চার্জের দ্বিগুণ চ্যানেল বৃদ্ধির অজুহাতে বাড়িয়ে দিয়েছে ক্যাবল অপারেটররা। অথচ ক্যাবল টিভি সেক্টরে প্রযুক্তির ছোঁয়ায় অপারেটরদের খরচ কমেছে। বর্তমানে অনলাইন টেলিভিশনও ক্যাবলে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।

 

বিবৃতিতে বলা হয়, টিভি চ্যানেল বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিজ্ঞাপন বাজার ছোট হয়ে এসেছে। চ্যানেলগুলোর অনুষ্ঠানের মান কমে যাচ্ছে, বাজেট ও ভালো শিল্পী কলাকুশলির কারণে। চ্যানেলগুলো দর্শক হারাচ্ছে যার একটা বড় কারণ। সুযোগের সদব্যবহার করে বিজ্ঞাপনদাতারা দেশের বিজ্ঞাপনগুলো বিদেশি চ্যানেলে প্রচার করছে।

 

দেশে এ ধরনের কোনো নীতিমালা না থাকার কারণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

 

দর্শক ফোরামের বিভিন্ন সময়ে করা জরিপগুলোর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শতকরা ১৮ জন বিভিন্ন অনুষ্ঠান কোনো বিরতি ছাড়াই দেখে থাকেন। এদের বয়স ৪৫ থেকে ৬৫। বিজ্ঞাপন চলাকালীন চ্যানেল পরিবর্তন করে ফেলে শতকরা ৬৫ জন। এদের বয়স ২৫ থেকে ৩৫। আর ৭৫ ভাগ শিশু বিজ্ঞাপন বেশি দেখে। এরা সবাই ৭ থেকে ১০ বছর বয়সি। শতকরা ৪৫ জন অনুষ্ঠান শুরুর আগে প্রচারিত বিজ্ঞাপন দেখেন। যাদের বয়স ৩৫ থেকে ৪৫।

 

বিবৃতিতে ফোরামের পক্ষ থেকে দশ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলো হচ্ছে- সরকার নির্ধারিত মাসিক ভাড়া নিশ্চিত করতে হবে, ক্যাবল লাইনে/ডিটিএইচে চ্যানেলের প্যাকেজ ব্যবস্থা চালু করা, প্রতি মাসের ভাড়ার রশিদ প্রদান নিশ্চিত করতে হবে, দেশের স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলোকে প্রাইম ব্যান্ডে জন্ম তারিখ অনুয়ায়ী ক্যাবলে সঞ্চালন করতে হবে।

 

সব অবৈধ স্যাটেলাইট চ্যানেলের ডাউনলিংক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে, দেশে স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলোতে প্রচারিত বিদেশি সিরিয়াল সম্প্রচার বন্ধ করতে হবে, স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোতে সুষ্ঠু বিজ্ঞাপন বন্টনের জন্য পৃথক বিজ্ঞাপন নীতিমালা করতে হবে। যার ফলে চ্যানেলগুলোতে প্রচারিত অনুষ্ঠানের মান বিশ্বজয়ের মুখ দেখতে পারবে।

 

স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর অনুষ্ঠানের মান নির্ধারণের জন্য একটি পৃথক সেন্সর বোর্ড গঠন, ক্যাবল টিভি তদারকি এবং দর্শকদের অভিযোগ প্রদানের জন্য একটি মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে এবং দেশের সকল ক্যাবল অপারেটরদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ ডিসেম্বর ২০১৬/এসটি/হাসান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়